ফের চুরি বোলপুর থানা এলাকায়। এ বারে একরাতে একই এলাকায় দু’টি জায়গায় চুরির ঘটনা ঘটল।
শুক্রবার সকালে বোলপুর শহরে একটি সোনার দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকার অলঙ্কার চুরি যাওয়ার খবর জানাজানি হয়। ওই দোকানের অদূরেই একটি মেসবাড়ি থেকে চুরি গিয়েছে ল্যাপটপ, মোবাইল-সহ বেশ কিছু টাকাও। ঘটনায় বোলপুর থানায় দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ রোড এলাকার বাসিন্দা মলয় পালের বাড়িতেই রয়েছে একটি সোনা-রুপোর দোকান। গত মঙ্গলবার থেকে মলয়বাবুরা চিকিৎসার জন্য আসানসোলে ছিলেন। এ দিন সকালে বাড়ির পরিচারিকা কাজ করতে এলে চুরির বিষয়টি প্রথম তারই নজরে পড়ে। তিনি প্রতিবেশীদের জানিয়ে খবর পাঠান মলয়বাবুদের। মলয়বাবুর স্ত্রী শিল্পী পাল বলেন, “খবর পেয়ে বোলপুরে ফিরে দেখলাম দোকান ও বাড়িতে ঢোকার গেট খোলা। চোরেরা বাড়ির পেছন দিক থেকে ঢুকে ৫টি তালা ভেঙে সব চুরি করে নিয়ে গিয়েছে।” তাঁদের দাবি, ২ কেজি রুপো, ২ ভরি সোনা, ক্যাশবাক্সের টাকা-সহ প্রায় দু’লক্ষ টাকার চুরি হয়েছে।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই ওই ওয়ার্ডেই কাছাকাছি একটি মেস থেকে স্থানীয় দোকান কর্মীদের জিনিসপত্রও চুরি গিয়েছে। চুরি যাওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে একটি ল্যাপটপ, দু’টি মোবাইল ও বেশ কিছু টাকা। মেসমালিক সুচন্দ্রা মণ্ডল বলেন, “মেসের ছেলেরা রাতে দরজা খুলে ঘুমোচ্ছিল। সম্ভবত ওই সুযোগেই চুরি হয়েছে।”
ঘটনা হল, এ বছর গোটা জেলা জুড়েই চুরির মাত্রা যথেষ্ট বেড়েছে। বিশেষ করে রামপুরহাট ও বোলপুর এলাকায় নানা মন্দিরে লাগাতার চুরির ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে। খুব কম ক্ষেত্রেই পুলিশ চুরির ঘটনা রুখতে পেরেছে কিংবা চুরির কিনারা করেছে। বোলপুর শহর ও শান্তিনিকেতন এলাকায় যে হারে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির (ডাকাতিতে একজন খুনও হয়েছেন) ঘটনা বেড়ে চলেছে তাতে উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। কোথাও দিনের বেলা জানালা ভেঙে চুরি, কখনও রাজ্যের মন্ত্রীর প্রতিবেশীর বাড়িতেই চুরি। খুব সম্প্রতিই বোলপুর লাগোয়া গ্রামেই একরাতে পরপর ৫টি মন্দিরে চুরির ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছিল পুলিশ-প্রশাসনকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের দিক থেকে নেওয়া হচ্ছে না তেমন কোনও সদর্থক ভূমিকাও।
পুলিশ অবশ্য ‘নিষ্ক্রিয়তা’র এই অভিযোগকে উড়িয়েই দিচ্ছে। পুলিশেরই একটি মহলের দাবি, এলাকায় রাত পাহারাদার নিয়োগ করা নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটির সঙ্গে আলোচনা হলেও বাসিন্দাদের একাংশের দায়সারা মনোভাবের জন্যই ওই ব্যবস্থা এখনও চালু করা যায়নি। বোলপুরের এসডিপিও প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “অনেক সময় নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার অভাবও এর জন্য দায়ী। তবে টহলদারি বাড়িয়েছি। রাতে পাহারা বসানো নিয়েও কথা চলছে।” |