|
|
|
|
শ্রমিক-বিক্ষোভ চলছেই |
পুলিশকে টাকা দিয়েও কাজ শুরু করতে পারেনি এবিজি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও হলদিয়া |
আগাম ১৭ লক্ষ টাকা দিয়েও হলদিয়া বন্দরে কাজের নিরাপত্তা পাচ্ছে না মাল ওঠানো নামানোর সংস্থা এবিজি। শ্রমিকদের মিছিল-বিক্ষোভ বন্ধ হয়নি। তাই হাইকোর্টের নির্দেশের সাত দিন পরেও হাত গুটিয়েই বসে রয়েছে এই সংস্থা।
এক মাস ধরে হলদিয়া বন্দরের দুই এবং আট নম্বর বার্থে কোনও জাহাজ ঢুকছে না। বাকি বার্থগুলিতে জাহাজ ঢুকলেও মাল খালাসের কাজ হচ্ছে পুরনো পদ্ধতিতে। তাই সময় লাগছে অনেক বেশি। জাহাজ সংস্থাগুলি এর ফলে বিরক্ত। তাদের জাহাজ বন্দরে বেশি দিন দাঁড়িয়ে থাকায় মোটা টাকা গুণাগার দিতে হচ্ছে।
এর মধ্যেই শুক্রবার কলকাতা বন্দরের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে নতুন একটি আবেদনে বলা হয়, আদালতের নির্দেশের সাত দিন পরেও এবিজি কাজ শুরু করেনি। হলদিয়া বন্দরের দুই এবং আট নম্বর বার্থে দীর্ঘদিন কাজ না হওয়ায় মোটা টাকা লোকসান হচ্ছে কলকাতা বন্দরের। এবিজি এখনই কাজ শুরু না করলে তাদের সঙ্গে বন্দরের চুক্তি খারিজ করার নির্দেশ দেওয়া হোক। হলদিয়া বন্দরের ট্রাফিক ম্যানেজার দামোদর নায়েক বলেন, “দুটি বার্থে দু’মাস ধরে কাজ বন্ধ। এ অবস্থা চলতে পারে না। এবিজি কাজ করতে না পারলে আমাদের অন্য সংস্থার কথা ভাবতে হবে।” |
|
হলদিয়া বন্দরের বাইরে এবিজি-র ছাঁটাই শ্রমিকদের মিছিল |
এবিজি-র সিইও গুরপ্রীত মালহি আবার বলেন, “হলদিয়া বন্দরে এখনও কাজে করার মতো নিরাপত্তা নেই। কলকাতা হাইকোর্ট যা বলেছিল তা করেছি। শুক্রবাই পুলিশকে ভাড়া বাবদ ১৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা আমরা টাকা জমা দিয়েছি। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি।” পাশাপাশি গুরপ্রীতের মন্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের পরিস্থিতি কেমন, তার নিদর্শন হলদিয়া।”
কাজে পুনর্বহালের দাবিতে শুক্রবার এবিজি-র ছাঁটাই শ্রমিকেরা প্রথমে অবস্থান-বিক্ষোভ ও পরে মিছিল করেন। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বন্দর থেকে ১০০ মিটার দূরে রানিচকের মঞ্চ থেকে মিছিল শুরু হয়। শেষ হয় চিরঞ্জীবপুরে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি পরিচালিত ঠিকা-মজদুর শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এই কর্মসূচি হলেও পতাকা বা ব্যানারে সংগঠনের নাম ব্যবহার করা হয়নি। ওই ইউনিয়নের সম্পাদক উৎপল বেরা বলেন, “ছাঁটাই হওয়া ২৭৫ জনকে পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি।”
কাজ করতে ইচ্ছুক এবিজি-র অধিকাংশ শ্রমিকই বন্দরের গেটে ঢোকার মুখে এই ধরনের মিছিল-অবস্থানে উদ্বিগ্ন। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে কাজে যোগ দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। তৃণমূলের কর্মীরা গাড়ি-বাস থামিয়ে তল্লাশিও করছে। তৃণমূলের শ্রমিক নেতা উৎপল বেরার অবশ্য দাবি, “আমাদের মধ্যে মিশে থাকা সিপিএমের কিছু লোক এই সব করছে।”
নিরাপত্তার জন্য টাকা দেওয়া হলেও এ দিন সন্ধে পর্যন্ত দুই বার্থে পুলিশ মোতায়েন হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, “এবিজি-র টাকা হলদিয়া ট্রেজারিতে জমা পড়েছে বলে শুনেছি। আমরা শীঘ্রই বাহিনী পাঠাব।” এবিজি-র শ্রমিকেরা যে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলছেন, সে ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, “বন্দরের পরিস্থিতি তো স্বাভাবিকই রয়েছে। আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করছি। টহলদারি আরও বাড়ানো হবে।” |
|
|
|
|
|