|
|
|
|
সভাপতির পাশেই দাঁড়াচ্ছে বিজেপি |
দুর্নীতি-বিতর্কে দূরত্ব বাড়াল সঙ্ঘ, তবে এখনই সরছেন না গডকড়ী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়েছে সঙ্ঘ পরিবার। ফলে দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পড়া নিতিন গডকড়ীকে বিজেপি সভাপতির পদ টিকিয়ে রাখার লড়াইটা এ বারে একাই লড়তে হচ্ছে। শুক্রবার রাতে দলের কোর কমিটির বৈঠকের পরে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, সেই চেষ্টা সাময়িক সফল। এখনই ইস্তফা দিতে হচ্ছে না নিতিন গডকড়ীকে।
গত কাল দিল্লি সফর পিছিয়ে দিয়ে নাগপুরে সঙ্ঘ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বিজেপি সভাপতি। আর আজ রাতে তিনি দিল্লি পৌঁছনোর আগেই সঙ্ঘের শীর্ষ নেতা ভাইয়াজি জোশী বিবৃতি জারি করে বুঝিয়ে দিলেন, গডকড়ীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঙ্গে আরএসএসের কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ অনৈতিক কাজ করে থাকলে তার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আজ রাতে দিল্লিতে পৌঁছেছেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে কাল তাঁর বৈঠক হবে। তার আগেই আজ রাতে দিল্লিতে নেমে গডকড়ী চলে যান আডবাণীর বাড়িতে। পরে অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ-সহ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে আলোচনায় বসেন তিনি। তখনই বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয়ে যায়, বিজেপি সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন গডকড়ী। যদিও রাতে বৈঠকের পরে বিজেপি মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর জানান, গডকড়ীর ইস্তফার জল্পনা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তাঁকে সরানোর প্রশ্নই ওঠে না। তিনি শনিবার হিমাচল প্রদেশে ভোটপ্রচারেও যাবেন।
বিজেপি নেতৃত্ব এ দিন প্রকাশ্যে যা-ই বলুন, দলের একটা বড় অংশ চাইছে, অবিলম্বে ইস্তফা দিন গডকড়ী। আজ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের লেখা একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে আডবাণী বলেন, গডকড়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত হলে রবার্টের বিরুদ্ধেও হওয়া উচিত। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, আডবাণীও গডকড়ীর অপসারণের পক্ষে। সঙ্ঘ-প্রধানের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে। আডবাণী মুখে সমর্থন দিলেও আসলে গডকড়ীর বিরুদ্ধে তদন্তই চাইছেন।
বিজেপি সূত্রের দাবি, ঘরোয়া বৈঠকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার পাশাপাশি গডকড়ী নিজের সপক্ষে যুক্তি সাজানোর কাজটাও করেছেন। কেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অসত্য, তা প্রমাণ করার জন্য একটি নোটও তৈরি করেছেন। সেখানে পাঁচটি বিষয় তোলা হয়েছে। দলের নেতাদের সামনেও সেই যুক্তি ব্যাখ্যা করেন তিনি। বিজেপি সভাপতির বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হোক। তার পরে তাঁর বিদায়ের বিষয়টি নির্ধারণ করা হোক।
গডকড়ীর সংস্থা পূর্তির তরফে আজই এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা বহু সামাজিক কাজ করেছে। বিদর্ভের কৃষকদের উন্নতির জন্যও চেষ্টা চালাচ্ছে। সংস্থা চায়, সুষ্ঠু তদন্ত হোক। অপপ্রচারের প্রভাব যেন তদন্তে না পড়ে।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “গডকড়ী এমন কিছু করে দেখাতে পারেননি, যার জন্য দলের অনেক উন্নতি হয়েছে। বরং বাস্তব ছবিটা উল্টো। ফলে অবিলম্বে তাঁর সরে যাওয়া উচিত।” কিন্তু গডকড়ী সরলে নতুন সভাপতি কে হবেন, সেটাই সমস্যার। আপাতত অরুণ জেটলির দিকেই পাল্লা ঝুঁকে। অরুণের পিছনে নরেন্দ্র মোদীর সমর্থনও রয়েছে। কিন্তু অরুণকে নিয়ে আডবাণী বা সুষমার আপত্তি রয়েছে। তা ছাড়া সঙ্ঘের আশঙ্কা, গডকড়ীর মাধ্যমে বিজেপিতে যে ভাবে নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো যাচ্ছিল, মোদী সক্রিয় থাকলে তা খর্ব হবে। এই অবস্থায় মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের নাম উঠছে। |
|
|
|
|
|