দুর্গাপুজো বা কালীপুজোর মতো বড় কোনও পুজো ছিল না খয়রাশোলের নামোকেনান গ্রামে। সেই জন্য আক্ষেপও ছিল। বছর পঁচিশ আগে হঠাতই গ্রামে লক্ষ্মী পুজো করার ভাবনা মাথায় আসে ঘোষ পরিবারের দু-তিন যুবকের। তাঁদের উৎসাহ জোগাতে এগিয়ে আসেন দুঃখহরণ চট্টোপাধ্যায় নামে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক। ঠিক হয় কেউ জমিদান করলে সেটা লক্ষ্মী পুজোর নামে রেজিষ্ট্রি করানোর খরচ দেবেন তিনি। |
গ্রামের কয়েকঘর ঘোষ পরিবার জমি দান করেন। মাটি, বাঁশ, তালপাতা দিয়ে তৈরি হয় লক্ষ্মীমন্দির। পাশের গ্রামের দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জনের বিনিময়ে লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ে দেওয়ার খরচ দিয়েছিল পাশের সেই গ্রাম। সেই শুরু। কাঁচা মন্দিরের বদলে তৈরি হয়েছে নতুন লক্ষ্মীমন্দির। গ্রামের সমস্ত মানুষের উৎসাহে প্রতি বছর কলেবরে বাড়তে বাড়তে নামোকেনান গ্রামের লক্ষ্মী পুজো বর্তমানে উৎসবের চেহারা নিয়েছে। মোট ৬২টি পরিবারের প্রত্যেক পরিবারে এই সময় আত্মীয়স্বজন আসেন। পুজোকে ঘিরে চারদিন ধরে নানা সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যাত্রা। আর যাঁদের মাথায় লক্ষ্মী পুজো করার ভাবনা এসেছিল তাঁদেরই একজন প্রৌঢ় আধীর ঘোষের স্মৃতিতে আজও সমান টাটকা প্রথম পুজো করার অভিজ্ঞতা। তিনি বললেন, “খুব ছোট করে আমরা যে পুজো শুরু করেছিলাম সেটা এখন গোটা গ্রামের পুজো। ভেবে ভাল লাগছে।”
সোমবার পুজোর দিন থাকলেও শুক্রবার বিকেলে তখন প্রতিমা গড়ার কাজ শেষ করছিলেন মৃতশিল্পী। ভিড় জমিয়েছে ছোট্ট ছেলেমেয়েরা। আর তদারকি করছেন গ্রামের বড়রা। কারণ এই পুজোকে ঘিরেই বছরভর অপেক্ষায় থাকেন গ্রামের সকলেই, অন্তত তেমনটাই জানালেন সুভদ্রা ঘোষ, মমতা পাল, উত্তম ঘোষেরা। |