গত মাসেই সত্তরে পা দিয়েছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও। জনশ্রুতি, অবসরের বয়স হওয়ায় হয়তো প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন তিনি। কিন্তু তার আগেই তাঁর আপাত স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলল এক মার্কিন দৈনিকের রিপোর্ট। শুক্রবার প্রকাশিত সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, জিয়াবাওয়ের আত্মীয়দের সম্পত্তির মোট পরিমাণ প্রায় ২৭০ কোটি ডলার। যে অর্থের সিংহভাগই এসেছে জিয়াবাও ক্ষমতায় আসার পরে।
এ দিন ওই দৈনিকের ওয়েবসাইটে পুরো রিপোর্টটি চিনা ভাষায় প্রকাশিত হলে তড়িঘড়ি সাইটটি ‘ব্লক’ করে দেয় চিন প্রশাসন। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হং লেই সংবাদমাধ্যমকে বিবৃতি দেন, চিনকে কলুষিত করতেই এই ধরনের রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে কোনও মন্তব্য করতে চাননি লেই। এতেই বেড়েছে প্রশ্ন। আদৌ কি চিনের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল? এই বিপুল সম্পত্তির পিছনে ঠিক কতটা ‘অবদান’ রয়েছে তাঁর?
রিপোর্ট বলছে, জিয়াবাওয়ের মা ইয়াং ঝিয়ুনের নামে চিনের একটি আর্থিক পরিষেবা সংস্থায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা রয়েছে। তার বাজার-মূল্য প্রায় ১২ কোটি ডলার। সেটাও আবার পাঁচ বছর আগে। বর্তমানে ইয়াঙের বয়স ৯০ ছুঁইছুঁই। যৌবনে তিনি উত্তর চিনের একটি সাধারণ স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর এ হেন বিপুল সম্পত্তির উৎস কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। মার্কিন দৈনিকের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ওই অর্থের অনেকটাই এসেছে জিয়াবাও ক্ষমতায় আসার পর।
শুধু মা-ই নন, রিপোর্ট অনুসারে, জিয়াবাওয়ের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছোট ভাই এবং বহু আত্মীয়ই আজ বিপুল সম্পত্তির অধিকারী। আর এর পিছনে জিয়াবাওয়ের ক্ষমতার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কারসাজি থাকতে পারে বলেই ধারণা একাংশের। যেমন চিনের নিয়ম অনুসারে জিয়াবাওয়ের আওতাধীন কিছু সংস্থার অনুমোদন ছাড়া কোনও কোম্পানি তাদের শেয়ার স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত করতে পারে না। শক্তি ও টেলিযোগাযোগের মতো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের কৌশলও নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। সে ক্ষেত্রে জিয়াবাওয়ের সিদ্ধান্ত হয়তো তাঁর আত্মীয়দের পরোক্ষ ভাবে লাভবান করে থাকতে পারে, এমন মনে করছেন অনেকেই।
তবে জিয়াবাও সমর্থকদের দাবি, আত্মীয়রা যাই করুন, জিয়াবাওয়ের নিজের নামে এই ধরনের বিনিয়োগের হদিস মেলেনি। তাঁর আত্মীয়দের সম্পত্তির জন্য অনুমানের ভিত্তিতে তাঁকে সন্দেহ করা যুক্তিযুক্ত নয় বলেই মনে করেন তাঁরা। বিশেষত যেখানে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য বেশ জনপ্রিয় জিয়াবাও। তরজা চলছে। জিয়াবাও নিজে এখনও নীরব। |