গ্রেফতার শুল্ক অফিসার-সহ ৬
সোনা লুঠ করতে দোকান কর্মীকে খুন
সোনার দোকানের বৃদ্ধ কর্মীকে খুন করে প্রায় ৩ কেজি সোনা আত্মসাতের অভিযোগে শুল্ক দফতরের এক সুপারিন্টেনডেন্ট-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ধৃত অফিসার তাশি ওয়াংদি শেরপা নিজের কালিম্পঙের বাড়ির দেওয়ালে গর্ত করে লুকিয়ে রেখেছিলেন প্রায় দেড় কোটি টাকার চোরাই সোনার বাট। তল্লাশি চালিয়ে দেওয়ালের প্লাস্টার খসিয়ে তা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পরেই শিলিগুড়ির বিধাননগরে কর্মরত ওই অফিসারকে সাসপেন্ড করছে শুল্ক দফতর।
গত রবিবার তিস্তা নদীর ধার থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় গোবিন্দ কামতি (৬৩) নামে ওই সোনার দোকানের কর্মীর পচাগলা দেহ। তিনি শিলিগুড়ির মহাবীরস্থানের সোনার ব্যবসায়ী অশোক অগ্রবালের দোকানের কর্মী। ১৭ অক্টোবর দার্জিলিং মেলে কলকাতা থেকে সোনা নিয়ে এনজেপি স্টেশনে নামেন গোবিন্দবাবু। অটোতে দোকানে ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। অশোকবাবু ওই দিনই পুলিশে অভিযোগ জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ট্রেনে একই কামরায় (এসএল-৩৮) মহাবীরস্থানেরই অন্য এক সোনার দোকানের কর্মচারী অনুপ গুপ্ত ছিলেন। অনুপকে জেরা করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ তাঁর দাদা অশোক গুপ্তর নাম জানতে পারে। তিনিও সোনার দোকানে কাজ করেন।
শিলিগুড়িতে সোনার দোকানের কর্মী খুনের ঘটনায় ধৃতেরা। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
অশোক-অনুপকে গ্রেফতার করে টানা জেরা এবং তাঁদের মোবাইল ফোনের কল-রেকর্ডের সূত্রে পুলিশ রহস্যের জট খোলে।
এর পরে ২০ অক্টোবর মাঝরাতে পুলিশ একযোগে কালিম্পং, বিধাননগর, ফাঁসিদেওয়ায় তল্লাশি চালিয়ে ওই শুল্ক অফিসার-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। তাশি ওয়াংদি ছাড়া বাকি তিন ধৃত হলেন পূরণ ছেত্রী, মণিরাম রায় ও গোপাল সরকার। তাশির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সোনা। ধৃতদের জেরা করে মেলে নিহত কর্মীর দেহও। ধৃতেরা আপাতত পুলিশি হেফাজতে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) ও জি পাল বলেন, “গোবিন্দবাবুর কাছে থাকা প্রায় ৩ কেজি সোনা লুঠ করতেই ধৃতেরা অপহরণ ও খুনের চক্রান্ত করেছিল। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা দেখা হচ্ছে।”
পুলিশের দাবি, জেরার মুখে তাদের ধৃতেরা জানিয়েছে, অনুপ জানতেন গোবিন্দবাবুর কাছে সোনা আছে। তিনি ট্রেন থেকেই ফোনে বিষয়টি নিজের দাদা অশোক গুপ্তকে জানান। অশোক তখন শুল্ক অফিসার তাশি ওয়াংদি-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখনই গোবিন্দবাবুকে অপহরণের ছক কষা হয়। বুধবার সকালে ট্রেন থেকে নেমে গোবিন্দবাবু অটোয় মহাবীরস্থানে ফিরছিলেন। দেশবন্ধুপাড়ার গোপাল মোড়ে একটি গাড়ি নিয়ে অটোটি দাঁড় করান তাশি ওয়াংদি। নিজের পরিচয় দিয়ে সোনা এবং গোবিন্দবাবুর মোবাইল তিনি নিয়ে নেন। জোর করে গোবিন্দবাবুকে ওই গাড়িতে তোলা হয়।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোনার কাগজপত্রের কথা বলে দিনভর দাগাপুর, মাটিগাড়া, বাগডোগরা, তাইপু চা বাগানে গাড়িতে করে ঘোরানো হয় ওই সোনার দোকানের কর্মীকে। ইতিমধ্যে গাড়ির চালক গোপালকে দিয়ে নেশার ওষুধ কেনানো হয়। কালিম্পং রোডের লোহাপুল এলাকায় সকলে খাবার খান। পরে চায়ের সঙ্গে নেশার ওষুধ মিশিয়ে গোবিন্দবাবুকে অজ্ঞান করে হাত পা বাঁধা হয়। রাতেই দেহটি করোনেশন সেতু লাগোয়া একটি খাদে ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় ধৃত পূরণ শুল্ক দফতরেরই অস্থায়ী কর্মী। অপহরণে ব্যবহার করা গাড়ির মালিক মণিরাম। আর গোপাল ওই গাড়ির চালক। সকলের বাড়িই শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায়। শুল্ক বিভাগের শিলিগুড়ির সহকারী কমিশনার জ্যোতিকুমার বুবনা বলেন, “তাশি ওয়াংদিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তও হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.