বালিঘাটের দখলকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারালেন নিরীহ চাষি। আহত হয়েছেন আরও এক চাষি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অজয় নদের ওই বালিঘাটের দখলকে ঘিরে বিবাদ চলছিল। বুধবার থেকে দফায় দফায় বোমাবাজি ও গুলি চলে মঙ্গলকোট ও বীরভূমের নানুর থানার সীমানা এলাকায়। সর্ংঘষের মাঝে পড়ে গুলি লেগে মৃত্যু হয় শেখ শাহজাহান (৪০) নামে এক চাষির। বাবুলাল শেখ নামে আরও এক স্থানীয় চাষি আহত হয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। তাঁর ডান চোখে গুলি লেগেছে। বোমার আঘাতে নিহত হয়েছেন মঙ্গলকোটের লাকুড়িয়ার অষ্টম কৈবর্ত (২৮) নামে এক ব্যক্তিও।
ঘটনায় কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের ভাই তথা নানুর ব্লক যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কাজল শেখ-সহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে নানুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে নিহত চাষির পরিবার। বিধায়কের সঙ্গে বৃহস্পতিবার অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে ওই ঘটনা।”
মঙ্গলকোট থানার পুলিশ এলাকার দাগি দুষ্কৃতী আজাদ মুন্সি ও সাইফুল শেখ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’ আজাদ মুন্সির নামে বর্ধমান ও বীরভূমের একাধিক থানায় খুন, পুলিশের উপর হামলা-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আর সাইফুল আজাদের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর। দু’জনকেই মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে একাধিকবার দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। মঙ্গলকোটের সিপিএম বিধায়ক শাহজাহান চৌধুরীও ওই ঘটনাকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বলে দাবি করেছেন। যদিও মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর বক্তব্য, “এর পিছনে রাজনীতি নেই। বালিঘাট নিয়ে দুষ্কৃতীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দশমীর ভোর থেকেই মঙ্গলকোটের ঝিলেরা গ্রামে অজয় নদের বাঁধের নীচে আজাদ ও সাইফুলের দলবলের লড়াই বাধে। দু’পক্ষই যথেচ্ছ গুলি চালায় ও বোমা ছোড়ে। পুলিশ যাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে না পারে, তার জন্য রাস্তাও কেটে দেয় দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলকোট থানার ওসি দীপঙ্কর সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছেও ঝিলেরা গ্রামে যাওয়ার কালভার্ট ও রাস্তা কাটা থাকায় আটকে পড়ে। হেঁটে প্রায় তিন ঘণ্টা পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা অজয় পেরিয়ে নানুর থানা এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেখানেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দল। ঘটনাটিকে ঘিরে বীরভূম জেলা তৃণমূলের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে। দলের জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য আব্দুল কেরিম খানের অভিযোগ, “এলাকার তৃণমূল নামধারী কিছু তোলাবাজই একদল দুষ্কৃতীর সাহায্যে গ্রাম দখলের জন্য নতুন ডাঙাপাড়ায় হামলা চালায়।” পক্ষান্তরে জেলা সভাপতির বিরোধী এবং কেতুগ্রামের বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূলের নানুর ব্লক কার্যকরী সভাপতি অশোক ঘোষের দাবি, “তৃণমূলের নাম নিয়ে একটা অংশ পরিকল্পিত ভাবে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।”
|
কলেজে শিক্ষকতার ন্যূনতম যোগ্যতার ব্যাপারে খসড়া নিয়ম তৈরি করে সেটি নিজেদের ওয়েবসাইটে দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ওই খসড়া সম্বন্ধে মতামত জানানো যাবে। সেগুলি বিচার করে প্রয়োজনে খসড়ায় বদল ঘটিয়ে নিয়মটি চূড়ান্ত করা হবে। |