জীবদ্দশায় সমর-শতবর্ষ
পঞ্চায়েতে আসন বণ্টন দ্রুত মেটাতে চাইছে ফ্রন্ট
ৎসবের মরসুম মিটতেই পঞ্চায়েত ভোটের আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চাইছে বামফ্রন্ট। নভেম্বর মাস থেকেই জেলা স্তরে শরিকদের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে। প্রয়োজনে রাজ্য স্তরে শরিকদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও বসবেন সিপিএম নেতৃত্ব। রাজ্যে বামফ্রন্ট ক্ষমতা হারানোর পরে এ বারই প্রথম পঞ্চায়েত ভোটের মুখোমুখি হতে হবে তাদের। কঠিন পরিস্থিতি মাথায় রেখে শরিকদের প্রতি অন্যান্য বারের তুলনায় উদার মনোভাব নিয়ে এগোতে চাইছে আলিমুদ্দিন।
আলিমুদ্দিনে বৃহস্পতিবার বামফ্রন্টের বিজয়া-বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রসঙ্গ প্রাথমিক ভাবে আলোচনায় এসেছিল। সব শরিক নেতৃত্বই একমত যে, আসন বণ্টনের রূপরেখা এখন থেকেই ঠিক করে ফেলতে হবে। কারণ, সংরক্ষণের জটিলতায় প্রার্থী ঠিক করার প্রক্রিয়া এ বার অনেক বেশি জটিল ও সময়সাপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বৈঠকে প্রস্তাব দেন, জেলা স্তরে অবিলম্বে আলোচনা শুরু হোক। জেলা থেকে রিপোর্ট নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব কথা বলবেন। তবে আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, মনোজ ভট্টাচার্যদের মত, প্রয়োজনে জেলায় গিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকেই একসঙ্গে বসে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হতে হবে। নচেৎ জটিলতা থেকেই যাবে। বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে বিমানবাবু এ দিন বলেন, “পঞ্চায়েত নিয়ে এ বার একটু আগে কথাবার্তা বলতে বলছি। কবে নির্বাচন হবে, কেউ জানে না! অনেক সংশয় আছে। প্রায় ৫০ হাজার বুথ তৈরির জন্য অন্তত ৩০-৩৫ হাজার স্কুলবাড়ি প্রয়োজন। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইলে পরীক্ষার জন্য এত স্কুলবাড়ি পাওয়া যাবে কি না, জানি না। কিন্তু ভোট যখনই হোক, শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দেওয়া প্রয়োজন।”
দল এবং ফ্রন্টের অন্দরের আলোচনায় বাম নেতৃত্ব স্বীকার করছেন, বিরোধী ভূমিকায় যাওয়ার পরে এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচন তাঁদের সামনে কঠিন পরীক্ষা। তাঁরা মানছেন, ক্ষমতায় থাকলে পঞ্চায়েত বা পুরভোটের মতো নিচু তলার নির্বাচনে প্রশাসনের প্রভাব কাজে লাগানোর সুযোগ থাকে। যা এ বার বামেদের নেই। সেই ১৯৭৮ সালের প্রথম পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই বামফ্রন্ট গ্রামবাংলার এই ভোটে ময়দানে নেমেছে ক্ষমতাসীন শিবির হিসাবে। এ বার বিরোধী ভূমিকায়। সেই সঙ্গেই শাসক তৃণমূলের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে সর্বত্র প্রার্থী দেওয়া কতটা সম্ভব, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বাম শিবির। তবে এক প্রবীণ বাম নেতার কথায়, “তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠীর প্রার্থী এ বারের নির্বাচনে থাকবে! কংগ্রেসের সঙ্গেও তাদের লড়াই হবে। এর মধ্যেই আমাদের জায়গা করে নিতে হবে!”
ফ্রন্ট বৈঠকে এ দিন ঠিক হয়েছে, লাগাতার নারী নির্যাতন এবং মহিলাদের উপরে হিংসার প্রতিবাদে আগামী ১৭ নভেম্বর কলকাতায় সমাবেশ হবে। বিমানবাবুর কথায়, “সারা দেশেই নারী নির্যাতন বাড়ছে। হরিয়ানাতেও বাড়ছে, পশ্চিমবঙ্গেও হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে।”
এর পাশাপাশি, সিপিএমের একটি ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত এ দিন ফ্রন্টে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলোচিত হয়েছে। সিপিএম সচরাচর কোনও জীবিত নেতার জন্মদিন দলের তরফে পালন করে না। তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রয়োজনে একমাত্র মুজফ্ফর আহমেদের জন্মদিন পালন শুরু হয়েছিল, যে রেওয়াজ এখনও জারি আছে। সেই তালিকায় এই বছরের জন্য যোগ হচ্ছে সমর মুখোপাধ্যায়ের নাম।
প্রাক্তন পলিটব্যুরো সদস্য সমরবাবুর জন্মশতবর্ষে আগামী ৭ নভেম্বর তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবর্ধনা দেবে সিপিএম। সেই অনুষ্ঠানে থাকার কথা দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের। শরিক নেতাদেরও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিমানবাবু এ দিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, জীবদ্দশায় শতায়ু হয়েছেন বলেই সমরবাবুর ক্ষেত্রে এমন ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কেউ শতায়ু হলে তখনকার দলীয় নেতৃত্বও বিবেচনা করে তেমন সিদ্ধান্ত নেবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.