রজত গুপ্তকে ২ বছরের কারাদণ্ড মার্কিন কোর্টের
ভারেস্ট ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়েই তাঁরা বিমানে যাত্রা শুরু করেছিলেন নেপাল থেকে। গন্তব্য ছিল বেস ক্যাম্পের নিকটবর্তী শহর লুকলা। কিন্তু উড়ানের পর পরই বিমানটি ভেঙে পড়ল। তাতে প্রাণ হারালেন মোট ১৯ জন।
শুক্রবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় সকাল সওয়া ছ’টার সময় ১৯ জন আরোহীকে নিয়ে লুলকার উদ্দেশে রওনা দেয় সীতা বিমান সংস্থার ওই ডরনিয়ার বিমানটি। মাটি ছেড়ে আকাশে পাড়ি দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি।
কোর্ট থেকে বেরনোর
পথে রজত গুপ্ত।
ছবি: এএফপি
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বিমানটির সঙ্গে পাখির ধাক্কা লাগাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ অবশ্য মনে করছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিমানটি থামাতে চেয়েছিলেন পাইলট। তবে শেষরক্ষা হয়নি। তার আগেই ভেঙে পড়ে বিমানটি।তথ্যপাচারের অভিযোগে কর্পোরেট-কর্তা রজত গুপ্তকে দু’বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল মার্কিন জেলা আদালত। তাঁর ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার জরিমানাও করা হয়েছে। বিচারক জানিয়েছেন,
কারাদণ্ডের মেয়াদ ফুরনোর পরেও এক বছর বিশেষ নজরে রাখা হবে তাঁকে। বিচারক জেড র্যাকফের কথায়,
“রজত গুপ্তের অপরাধ বিশ্বাসভঙ্গের ভয়ঙ্কর নিদর্শন।” খারিজ হয়ে গিয়েছে তাঁর জামিনের আবেদনও। রজতের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা।
নিজের কৃতকর্মের জন্য বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন রজত। বলেছেন, “বাবা-মাকে হারানোর পরে গত ১৮ মাস ছিল আমার সব চেয়ে কঠিন সময়। যে পরিচিতি আমি সারা জীবন ধরে তৈরি করেছি, তা হারালাম। এই রায় আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং আমার কাছে একটা বড় আঘাত।”
গোল্ডম্যান স্যাক্সের পরিচালন পর্ষদে থাকাকালীন গোপন তথ্য পাচারের দায়ে গত জুন মাসে রজত গুপ্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল, তাঁর দেওয়া গোপন তথ্য কাজে লাগিয়েই বেআইনি শেয়ার কেনাবেচায় বিপুল মুনাফা করেছে হেজ-ফান্ড সংস্থা গ্যালিয়ন। গ্যালিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন কর্ণধার শ্রীলঙ্কার রাজ রাজারত্নম আপাতত ১১ বছরের জন্য হাজতে। মার্কিন আইন অনুযায়ী এর জন্য রজত গুপ্তের ২৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারত। মার্কিন সরকারও তাঁর ১০ বছরের কারাদণ্ডের আর্জি জানিয়েছিল।
কিন্তু এর অন্য দিকটিও আছে। বিচার শুরুর সময় থেকেই রজতের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুকেশ অম্বানী, আদি গোদরেজ, যোগী দেবেশ্বর-সহ ভারতের শীর্ষ শিল্পপতিরা। এমনকী মাইক্রোসফ্টের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব কোফি আন্নানের মতো অনেকে বিচারককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, রায় ঘোষণার সময় রজত গুপ্তের ভাল কাজের দিকটি যেন মনে রাখা হয়। রজতবাবুর স্ত্রী অনিতা গুপ্তও চিঠি লিখেছিলেন বিচারককে। তাঁর আর্তি ছিল, “জানি, আদালতের সিদ্ধান্ত মানতেই হবে। কিন্তু বিশ্বাস করি, আমার স্বামী কে বা কেমন, তা সামনেই আসেনি বিচারের সময়।”
কী সেই ভাল কাজ? দুনিয়া জুড়ে এডস-টিবি-ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে গেটস ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন বিল। সেখানে তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন রজত। করেছেন আরও বহু সমাজসেবামূলক কাজ। রায় ঘোষণার সময় বিচারকও বলেন, “রজত ভাল মানুষ। কিন্তু ইতিহাসে এ রকম বহু ভাল মানুষের উদাহরণ রয়েছে, যাঁরা খারাপ কাজ করেছেন।”
রায় ঘোষণার সময় আদালতের ভিতরে এবং বাইরে ছিল টানটান উত্তেজনা। রায় শুনতে রজতের পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বহু সাধারণ মানুষ। দর্শকাসনে ছিলেন রজতের স্ত্রী অনিতা ও চার মেয়ে। রায় ঘোষণার পরেই তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.