পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কোচবিহার জেলায় শরিকি সম্পর্ক মসৃণ করতে উদ্যোগী হলেন বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। পুজোর মধ্যে সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতারা নীচু তলার নেতাকর্মীদের নিয়ে যৌথ সভা করে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে কাজ শুরুর চেষ্টায় নেমেছেন। কোচবিহার জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের তিক্ততা চরমে পৌঁছয়। ওই পরিস্থিতি যেন এ বার না হয় সেটাই দেখছেন জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। জেলা সিপিএম সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, “বাম ঐক্য আরও সুদৃঢ় করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। যে সমস্ত এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে সেখানে দুই দলের নীচু তলার কর্মী ও নেতাদের নিয়ে যৌথ সভা হবে।” জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্ব জানান, গত নির্বাচনে দুই বাম শরিক দলের অনৈক্য প্রকাশ্য চলে আসে। তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। রাজ্যে পালা বদলের পরে এ বার জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক পাল্টে গিয়েছে। তৃণমূলের হাতে দুই দলের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। জেলা বামফ্রন্ট নেতৃত্বের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংঘর্ষ বাড়বে। বাম ঐক্য সুদৃঢ় না হলে ওই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না বলে তাঁরা মনে করছেন। জেলা বামফ্রন্টের এক নেতা বলেন, “নিজেদের মধ্যে বিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি না হলে এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করা সম্ভব হবে না। ওই কারণে গ্রামস্তরের সমস্যাগুলি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে।” এ জন্য যে সব এলাকায় শরিক দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বেশি সেগুলি চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে যৌথ সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দলের জেলা নেতৃত্ব সভায় উপস্থিত থাকবেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুই শরিকের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। এ বার যেন সেটা না থাকে সে জন্য আমরা আগেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছি। সভা করে প্রত্যেকের কথা শোনা হবে। দুই দলের তরফে আমরা সমস্ত সমস্যা দূর করার চেষ্টা করব।” জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ শনিবার দিনহাটার সিতাইয়ে দলের নীচু তলার নেতা ও কর্মীদের নিয়ে যৌথ সভা করবেন সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতৃত্ব। শীতলখুচি, কোচবিহার-১, তুফানগঞ্জ-১, মেখলিগঞ্জে পর্যায়ক্রমে ওই সভা হবে। সভাগুলিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের রণকৌশল নিয়েও আলোচনা হবে। কোথাও যেন গোঁজ প্রার্থীর সমস্যা না থাকে সেটা নিশ্চত করা হবে। পুজোর পরে ২৭ অক্টোবর দুই দলের জেলা নেতৃত্ব যৌথ সভায় উঠে আসা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জেলাস্তরে আলোচনায় বসবেন। এর পরে ফের গ্রাম স্তরে আলোচনা সভা করে যৌথ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে। |