গত বার স্থানীয় বণিকসভার উদ্যোগে আয়োজিত পুজো প্রতিযোগিতায় প্রতিমায় প্রথম হওয়ার পরে এ বারে আরও ‘ভাল’ কিছু করার জেদ চেপে গিয়েছে বনগাঁর উজ্জ্বল সঙ্ঘের। কিন্তু এ বার সেই ‘ভাল’ তারা চোখধাঁধানো মণ্ডপ বা ঝলমলে আলোর মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইছেন না। পুজোকে পুরোপুরি অনাড়ম্বর রেখে যাবতীয় অর্থ তারা তুলে দিতে চায় এক ক্লাব সদস্যের চিকিৎসায়। যিনি ভুগছেন কিডনির অসুখে। তার জন্য জোরকদমে চলছে তোড়জোড়।
সঙ্ঘের সহ-সম্পাদক পুলক পাল বলেন, “আমাদের ওই সদস্য ক্লাবের খুবই একনিষ্ট কর্মী। প্রতি বছর চাঁদা সংগ্রহ, প্রতিমা আনা থেকে শুরু করে পুজোর যাবতীয় আয়োজনে ও খুবই সক্রিয় থাকত। এ বার ও অসুস্থ। আমাদের কারও মন ভাল নেই। ওকে বাঁচাতে হবে। এটাই আমাদের সঙ্কল্প।” ইতিমধ্যেই সঙ্ঘের পক্ষ থেকে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে লিফলেট বিলি শুরু হয়ে গিয়েছে।
বনগাঁ শহরের ঐতিহ্যপূর্ণ পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল সঙ্ঘের পুজো। স্থায়ী মণ্ডপে প্রতিমা বসানো হয়। তার সামনে থাকে সুদৃশ্য মণ্ডপ। এ বারে সেই মণ্ডপ থাকছে না। ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট প্রতিমা এনে পুজো করা হবে। মাইকে চার দিনই চলবে অসুস্থ ওই ক্লাব সদস্যের জন্য সাহায্য চেয়ে আবেদন। ওই সদস্যের দু’টি কিডনিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবিলম্বে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন জরুরি। তার জন্য চাঁদা তোলা হচ্ছে প্রবল উৎসাহে।
পুজো এ বার ৫৭ বছরে পড়ল। কিন্তু অনাড়ম্বর পুজো নিয়ে কোনও খেদ নেই এলাকার বাসিন্দাদের। তারা উদ্যোক্তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত বক্সির কথায়, “এ ভাবে কারও বিপদে-আপদে সবাই মিলে এগিয়ে এলে অনেক সমস্যাই মিটে যায়।” আর এক বাসিন্দার কথায়, “পুজোয় এমন কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ওই ক্লাব।”
এত প্রশংসায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ অবশ্য ভেসে যাচ্ছেন না। তাঁরা শুধু চান, অসুস্থ সদস্যের জীবনে আলো জ্বালাতে। |