মনে আছে আমার এক ভারতীয় দলের সতীর্থ আমাকে এক বার বলেছিল, ‘গোতি, এটা হল ইন্ডিয়ান ক্রিকেট...এখানে সব কিছু ছপ্পর ফাড়কে হয়। যখন ভগবান দেন, সব কিছু দেন। আর যখন নেন তো সব কিছু কেড়ে নেন!’ আমার যে ইন্ডিয়ান টিমমেট কথাটা বলেছিল, সেই সময়টা তার খারাপ যাচ্ছিল। এবং আমি ছিলাম সেই সময় একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার, যে পরপর তিনটে টেস্ট সিরিজে চারশো রান করেছিল। তো কথাটার পরে আমি হেসেছিলাম। সে-ও হেসেছিল। দু’জনেই জানতাম, ও কী বলতে চেয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে আমাদের দু’টো ম্যাচে হার। তৃতীয়টা বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে কেকেআরের বিদায়। ব্যক্তিগত ভাবে বাইশ গজে আমার জ্বলে উঠতে না পারার পরে আমার সেই বিদ্বগ্ধ সতীর্থ আমাকে হুবহু একই টেক্সট মেসেজ করেছে, দু’রাত আগে।
যদিও আমি মনে করি, বুধবার রাতে যাবতীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাস সত্যি হয়ে ওঠার আগে পর্যন্ত টাইটানসের সঙ্গে ম্যাচটা আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। ম্যাচটা শেষ বার যখন বন্ধ হল, মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমি মনে মনে বলছিলাম, নাহ! এটা হতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটাই সত্যি হল। বৃষ্টি যত ঝেঁপে আসছিল ততই টুর্নামেন্ট থেকে আমাদের বিদায় সুনিশ্চিত হয়ে উঠছিল। তবে আমি মনে করি না যে, এর জন্য আমরা আবহাওয়াকে দায়ী করতে পারি বলে। আমরা স্রেফ মাঠে নিজেদের ঠিক ভাবে প্রমাণ করতে পারিনি। যে কোনও পরিস্থিতিতে দারুণ ভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারার মতো টিম যে আমরা, সেটা ক্রিকেটবিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছি।
দলের অধিনায়ক হিসেবে কেকেআর শিবিরের মধ্যে একটা জড়তার আঁচ পেয়েছি আমি। ইউসুফ পাঠান ফিরে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে। বালাজি দলে নিজের জায়গা পাকা করতে চাইছে। বল হাতে ব্রেক থ্রু দিতেই হবে এমন একটা অবস্থা ইকবাল আবদুল্লার। মনবিন্দর বিসলা আর রজত ভাটিয়াকে আরও অনেক প্রমাণ করতে হবে। প্রথম দু’টো ম্যাচের যে কোনওটায় একটা ভাল সেশন যদি আমাদের যেত, আমি মনে করি তা হলেই আমরা দলের এই ধস আটকাতে দিতাম। কিন্তু সেটা ঘটেনি।
আমার মনে পড়ছে ক্লাস এইটের অঙ্ক পরীক্ষার আগে আমি সত্যিকারের প্রচণ্ড খেটেছিলাম। বার্ষিক পরীক্ষা ছিল এবং আমি সত্যিই খুব ভাল রেজাল্ট করতে চেয়েছিলাম। কী হয়েছিল জানেন? পরীক্ষার দিন আমি অসুখে পড়ে গেলাম। কোনও রকমে উত্তরপত্রে লিখেছিলাম। চূড়ান্ত ফল: এই কলামে মোটেই উল্লেখ করা মতো নয়। তবে আমি পরীক্ষায় উতরে গিয়েছিলাম। এই উদাহরণটা এখানে দিলাম কারণ, আমাদের দলটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টুর্নামেন্টের জন্য সত্যিই কঠিন পরিশ্রম করেছিল। চেয়েছিল খুব ভাল করতে। অনেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছেছিল। আমি নিজে আমাদের কোচিং স্টাফের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। পচেস্ট্রুমের ট্রেনিং সেশনগুলো ভাল হয়েছিল। লক্ষ্মীরতন শুক্ল বাদে আমাদের সব অস্ত্রশস্ত্র ছিল। এর বেশি কিছু চাওয়ার আমাদের ছিল না। চূড়ান্ত ফল: এ বার আমি কোনও রকমে পাস নম্বরও তুলতে পারিনি। |