এ বার সত্যিকারের পুজোয় হাজির বিদ্যা
মাঠের দু’ধারে বিরাট জায়ান্ট স্ক্রিনে লাল পাড় সাদা শাড়িতে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। কহানি-র নায়িকার চেনা ছবিতে দুর্গার দশটা হাত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
তার মাঝে দাঁড়িয়েই জনতার রক্তে টান দিলেন তিনি। ভুলভুলাইয়া ছবির গানে বিদ্যা বালনের নাচে মেতে উঠল আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। ‘তুমি যে আমার, আমি যে তোমার’! তাঁর অনভ্যাসের মিষ্টি বাংলায় কলকাতাকে বলে গেলেন বিদ্যা।
বৃহস্পতিবার, রাত দশটা। লেকটাউনের শ্রীভূমির মাঠের উচ্ছ্বাসই বুঝিয়ে দিল উৎসব শুরু বাঙালির। রুপোলি পর্দায় ‘কহানি’-র সেই গোবেচারা পুলিশ অফিসারের মতোই বিদ্যাকে দেখে যেন ঢোঁক গিলতে ভুলে গিয়েছিল কলকাতা। মণ্ডপ ঘিরে তস্য গলির জানলাতেও তাঁর অপেক্ষায় আড়াই ঘণ্টার বেশি ঠায় দাঁড়িয়ে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা।
ভক্তিভরে দশভুজা মূর্তিকে প্রণাম করে প্রধান অতিথি বিদ্যা বলেছেন, “শু্যটিং নয়। সত্যি-সত্যি দুর্গাপুজোর উৎসবে থাকার রোমাঞ্চ এক কথায় আলাদা!” কহানি-র শেষ দৃশ্যে পুজোমণ্ডপে লাল পাড় সাদা শাড়ির বাঙালিয়ানার মোটিফে মিশে গিয়েছিলেন ছবির নায়িকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যা বালন। বৃহস্পতিবার লেক টাউনে,
শ্রীভূমির পুজো মণ্ডপে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
বাস্তবে পুজোর শহরে আমুদে জনতার মাঝে ধ্রুপদী দক্ষিণ ভারতীয় সাজে উপস্থিত হলেন তিনি। সবুজ পাড় হলুদ শাড়িতে লাল-সবুজ কারুকাজের বাহার। খোঁপায় রজনীগন্ধা, ঝোলা দুল, লাল টিপের সাজ। দক্ষিণের মীনাক্ষী মন্দিরের আদলে মণ্ডপে পটে দারুণ মানিয়েছিল তাঁকে। রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের পাশে দাঁড়িয়ে যে মণ্ডপে প্রদীপ জ্বালালেন কেরলকন্যা। বিদ্যা ও বাঙালির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটল।
‘ঢাকের তালে কোমর দোলে’র সঙ্গে নাচে যোগ দেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। পাশে দাঁড়িয়ে সহাস্যে সেই দৃশ্যও উপভোগ করবেন বিদ্যা বালন। দায়সারা আলঙ্কারিক প্রধান অতিথি নয়। টানা অপেক্ষায় ঝিমিয়ে পড়া জনতাকে জাগিয়ে তুলতেও বিদ্যাই ছিলেন প্রধান চালিকা শক্তি। জনতার সঙ্গে খোশমেজাজে কলকাতার পটভূমিতে তাঁর ‘কহানি’ ছবি নিয়ে আড্ডা দিয়েছেন। বলেছেন, কলকাতার ভালবাসায় এখানে পড়ে থেকেই জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান তিনি। আবার ভুলভুলাইয়ায় প্রেতাত্মার ভূমিকায় তাঁর অভিনয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছেন, “তবে অষ্টমীর রাতে যেন কেউ আমার কাছে না আসে।”
কলকাতাকে বরাবরই নিজের ‘সেকেন্ড হোম’ বলে থাকেন বিদ্যা। উৎসব-নগরীতেও তার ব্যতিক্রম হল না। একটু থেমে থেমে বাংলাতেই কেরলকন্যা বললেন, “আমি বাংলা বলার চেষ্টা করি। কলকাতা আমার সেকেন্ড হোম।” কলকাতায় তিনটে ছবিতে অভিনয় করেছেন বিদ্যা। বাংলা ছবি ‘ভাল থেকো’, শরৎচন্দ্রের কাহিনি অবলম্বনে ‘পরিণীতা’ ও সম্প্রতি বক্স-অফিস কাঁপানো ‘কহানি’। দু’বছর আগের পুজোয় ‘কহানি’-তে বালিগঞ্জ কালচারালের মণ্ডপে আউটডোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। শ্রীভূমিতে এসেও এ দিন সে-কথা মনে পড়েছে বিদ্যার। কহানি-র সাফল্য দেবী দুর্গার আশীর্বাদ বলেই উচ্ছ্বাসে মুখর হন বিদ্যা।
বুধবার রাত দু’টো অবধি মুম্বইয়ে শু্যটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন বিদ্যা। তবু ক্লান্তি উপেক্ষা করে কলকাতায় আসার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুজো-কর্তা তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু। বিদ্যার কলকাতায় আসার নেপথ্যে তাঁর প্রথম বাংলা ছবি ‘ভাল থেকো’-র পরিচালক গৌতম হালদারের ভূমিকার কথাও বার বার বলেন সুজিত। বিদ্যার হাত দিয়েই পূর্ব ভারতের দুঃস্থ শিল্পীদের অর্থসাহায্য করা হয় এ দিন। কলকাতা ডাকলে তিনি সব সময়ে এখানে আসতে তৈরি বলে গিয়েছেন কহানি-র নায়িকা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.