|
গ্যাসের কেওয়াইসি দিতে
হবে না সব গ্রাহককে
দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত • কলকাতা |
|
পরিবারপিছু ভর্তুকিপ্রাপ্ত রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ছ’টিতে বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু কোন বাড়ির কোন পরিবারে ক’টা এলপিজি সংযোগ (কানেকশন) রয়েছে, সে তথ্য এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তেল সংস্থাগুলো তাই ডিস্ট্রিবিউটরদের নির্দেশ দিয়েছে গ্রাহকদের থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য জোগাড় করে নতুন ভাবে সংযোগ-তালিকা তৈরি করতে। কিন্তু কাকে কখন কী তথ্য দিতে হবে, কী ভাবে দিতে হবে, কিংবা আদৌ দিতে হবে কি না, তা নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। তাই প্রায় প্রতি ডিস্ট্রিবিউটরের দোকানে নানা প্রশ্ন নিয়ে রোজ হাজির হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
পদ্ধতিটা ঠিক কী? জবাব দিচ্ছেন তেল সংস্থার কর্তারা।
|
নতুন নিয়ম |
এক ঠিকানায় একটি পরিবারে (একটি রান্নাঘর) গ্যাসের একটাই সংযোগ মিলবে। সংস্থা একই হোক বা ভিন্ন, একাধিক (মাল্টিপল) এলপিজি সংযোগ রাখা চলবে না। তবে একটা কানেকশনে দু’টো (ডাবল) সিলিন্ডার চলতে পারে।
আর এখানেই আসছে কেওয়াইসি (নো ইওর কাস্টমার) সংক্রান্ত নথিপত্রের প্রসঙ্গ।
|
কেওয়াইসি কী? |
ছবি-নাম-ঠিকানা ইত্যাদি-সহ গ্রাহকের পরিচিতির প্রমাণ (ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে যার দরকার পড়ে)। ছ’মাস ধরে গ্যাস না-নিলে কিংবা অন্য কারণে সংযোগ বাতিল হলে তা ফের চালু করতে ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে এত দিন কেওয়াইসি জমা দিতে হতো। এখন গ্যাসের নতুন সংযোগ নিতে হলেও কেওয়াইসি লাগবে।
|
পুরোনো গ্রাহকদের? |
আপাতত স্থির হয়েছে, যে সব পরিবারে এক ঠিকানায় একই তেল সংস্থার একাধিক এলপিজি সংযোগ রয়েছে, শুধু তাদেরই কেওয়াইসি জমা দিতে হবে, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে। কোনও পরিবারের এক ঠিকানায় একটামাত্র কানেকশন থাকলে এই মুহূর্তে কেওয়াইসি’র প্রশ্ন নেই।
|
কী করতে হবে? |
তেল সংস্থাগুলো সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলছে, কেওয়াইসি দিয়ে একটা বাদে বাকি সংযোগ ছেড়ে দিতে। যাঁদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা যায়নি, তাঁদের নিজেদেরই উদ্যোগী হতে হবে। কোন সংস্থার কোন গ্রাহকের ক’টি সংযোগ রয়েছে, তার তালিকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইটে ‘ট্রান্সপারেন্সি পোর্টালে’ মিলবে।
|
না-দিলে? |
সংস্থার নিজস্ব তথ্যভাণ্ডারের ভিত্তিতে সাময়িক ভাবে সবক’টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। নির্দিষ্ট সময় পরে পাকাপাকি ভাবে।
|
এক ঠিকানায় একই পরিবারে দু’টি ভিন্ন সংস্থার সংযোগ থাকলে? |
তেমন থাকতেই পারে। কিন্তু নতুন নিয়মে তা-ও চলবে না। সেগুলো যাচাইয়ের কাজ পরে শুরু হওয়ার কথা।
|
একই ঠিকানায় একাধিক পরিবার থাকলে? |
বড় বাড়ি বা আবাসনে অনেকগুলো পরিবার থাকতে পারে। আবার একটা বৃহত্তর পরিবারও ‘পৃথগন্ন’ হতে পারে (যেমন, একই বাড়িতে দু’ভাই বা বাবা-ছেলের সংসার)। সে ক্ষেত্রে প্রতিটা পরিবার আলাদা আলাদা কানেকশন পাবে। তবে সে জন্য তাদের কেওয়াইসি-র সঙ্গে আলাদা সংসার সম্পর্কে ‘সেল্ফ ডিক্লারেশন’ দিতে হবে। শুধু হেঁসেল আলাদা হওয়াই ভিন্ন থাকার প্রমাণ নয়। আইনগত ভাবেও প্রমাণ করতে হবে।
|
যাচাই কী ভাবে? |
প্রথমে ডিস্ট্রিবিউটরেরা সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। তথ্যে গরমিল আছে কি না দেখতে তেল সংস্থার প্রতিনিধি কিংবা কোনও তৃতীয় পক্ষও আচমকা হাজির হতে পারে।
|
গ্রাহকের কর্তব্য |
ডোমেস্টিক গ্যাস কনজিউমার কার্ড (ডিজিসিসি) বুকলেট’ বা ব্লু-বুকে নিজের ক্রমিক নম্বরটি (ইউনিক সিরিয়াল নম্বর, যা নতুন করে দেওয়া হচ্ছে) ও ‘কনজিউমার নম্বর’ আছে কি না, দেখে নিন। না-থাকলে ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে যান। ভর্তুকির সিলিন্ডারের হিসেব ব্লু-বুকে ঠিকঠাক তুলে রাখুন। যাঁর নামে সংযোগ, তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকলে নাম পাল্টানোর কাজটাও সেরে রাখলে ভাল। এতে জটিলতা এড়ানো যায়।
|
ভর্তুকির সিলিন্ডার |
১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ মার্চের মধ্যে (অর্থাৎ, চলতি অর্থবর্ষে) প্রতিটি পরিবারের জন্য বরাদ্দ তিনটি। প্রথম তিনটির ক্ষেত্রে রসিদে ১/৩, ২/৩, ও ৩/৩ লেখা থাকবে। কোনও গৃহস্থ গ্রাহক ভর্তুকি না-চাইলে অবশ্য একের বেশি সংযোগ রাখতে পারেন। দাম ভর্তুকিহীন গ্যাসের চেয়েও বেশি পড়বে।
|
হয়রানি ঠেকাতে |
যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া সংযোগ কাটা গেলে গ্রাহকের স্বার্থ দেখার আশ্বাস দিয়েছে তেল সংস্থাগুলি। “কোন এলাকা আইওসি-র কোন অফিসারের আওতায়, জানিয়ে কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সমস্যায় পড়লে গ্রাহক তাঁকে যোগাযোগ করতে পারবেন।” —বলেন ইন্ডিয়ান অয়েলের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর (ওয়েস্ট বেঙ্গল) ইন্দ্রজিৎ বসু। |
|