এক বধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গণপিটুনিতে জখম হলেন পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। মঙ্গলবার গভীর রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানার গোপালপুর এলাকার ঘটনা। অভিযুক্তের নাম মনিজুল ইসলাম। তিনি হরিরামপুর থানায় কর্মরত। থানা থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এলাকার বাসিন্দারা। গণপিটুনি দিয়ে গ্রামবাসীরা তাঁকে পিছমোড়া করে বেঁধে রাতভর আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে রাত ১টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। ভোর ৩টা নাগাদ আইসি বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে ওই ইন্সপেক্টরকে উদ্ধার করেন। তাঁকে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে হরিরামপুর থানায় গিয়ে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ বধূর স্বামীর অভিযোগ নেয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে দিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে ওই পুলিশ ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত মনিজুল ইসলাম বলেন, “মহিলার স্বামীর নামে গণ্ডগোলের একটি মামলার তদন্ত শুরু করেছিলাম। রাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে।” মহিলার স্বামী-সহ আত্মীয়দের বিরুদ্ধে মণিজুলবাবু পাল্টা মারধর ও আটকে রাখার অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযুক্ত মণিজুলবাবু বেশি রাতে কেন ওই পোশাকে ওই মহিলার বাড়িতে গেলেন, তা নিয়ে পুলিশেই প্রশ্ন উঠেছে। থানা সূত্রের খবর, গত অগস্ট মাসে শিরসি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা কাবেদ আলি বাঁশ কাটার ঘটনায় তার বাবার সঙ্গে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। তার বাবা আসগর আলি ছেলের বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানায় মারধরের অভিযোগ করেন। তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে মনিজুল কাবেদ আলির বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। কিন্তু ছেলে কাবেদকে পুলিশ গ্রেফতার না-করার অভিযোগে আসগর বুনিয়াদপুর মহকুমা আদালতে মামলা করেন। এর পরে আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে গত সোমবার রাতে পুলিশ কাবেদকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার আদালতে পাঠায়। আদালত থেকে ওইদিন বিকেলে জামিনে ছাড়া পেয়ে কাবেদ আলি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে তার স্ত্রী ওই পুলিশ ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে ফোনে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ করেন। কাবেদ দাবি করেন, “স্ত্রীর চিৎকারে সে সময় লোকজন ছুটে গিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ ইন্সপেক্টরকে ধরে বেঁধে ফেলে বিচার শুরু করেন। তাকে মারধরে আমরা কেউ জড়িত ছিলাম না।” গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা সম্পাদিকা মাফুজা খাতুন বলেন, “অবিলম্বে অভিযুক্ত ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করে গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলন শুরু হবে।” |