কনুই থেকে বাদ চলে গিয়েছে দুটো হাত। দৃষ্টিশক্তিও তলানিতে। সামান্য পরিশ্রমেই হাঁফিয়ে ওঠে বছর চল্লিশের শীর্ণ শরীর। শৈশবে বোমাকে বল ভেবে খেলতে গিয়েই ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা। সেই থেকেই এই অবস্থা। তবু দিনের শেষে তিনি গাইতে পারেন,‘‘অনেক দিয়েছো নাথ।’’ |
বেলডাঙার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঘোষপাড়ায় ভাই, ভাইয়ের বউ আর বছর চারেকের ভাইপোকে নিয়ে রেণুকা চৌধুরীর একচিলতে সংসার। ভাইয়ের সংসারে মাথার উপরে ছাদ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনিই। সেই সঙ্গে রয়েছে তাঁর গান। রেণুকা বলেন,‘‘গান শেখার হাতেখড়ি মায়ের কাছে। এক শিক্ষকের কাছেও কিছুদিন শিখেছি।’’ সকাল সন্ধ্যায় রেণুকাদেবীর বাড়ি থেকে ভেসে আসে রবিঠাকুরের গান, নজরুলগীতি এমনকি লালনের গানও। ভাই প্রদীপ চৌধুরী ছোটখাট একটা ব্যবসা করেন। সংসারে তিনিই একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। প্রদীপবাবু বলেন,‘‘বাবা ও মা মারা গিয়েছেন। কিন্তু দিদি মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি কোনওদিন।’’ তবে সঙ্গীত তাঁকে দিয়েছে সম্মান। ২০০৫ সালে প্রতিবন্ধী দিবসে রাজ্য সরকার সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে বিশেষ সম্মান দিয়েছে রেণুকাদেবীকে। স্থানীয় ক্লাব, ব্লক, পুরসভাও সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে সম্মান করে তাঁকে। |