সম্পাদক সমীপেষু...
সব একসঙ্গে সম্ভব নয়, শুরু হোক প্রেসিডেন্সি দিয়েই
অশোক মিত্র (‘প্রেসিডেন্সিই বাংলা, বাংলাই প্রেসিডেন্সি’,) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ও সংস্কৃতির উন্নয়নের চেষ্টায় কিছুটা অকৃপণ সরকারি দাক্ষিণ্যের প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন: ‘রাজ্যের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কী হবে, সে ভাবনা অরণ্যে রোদনমাত্র।’ অনেকটা রবীন্দ্রনাথের ভাষায় তিনি বলতে চেয়েছেন, ‘পশ্চাতে রেখেছো যারে, সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে।’ তাঁর দল যত দিন বাংলা শাসন করেছে, তত দিন তা-ই হয়তো তৎকালীন সরকার ‘পশ্চাতে’র কলেজগুলির সঙ্গে প্রেসিডেন্সি কলেজকে প্রায় এক আসনে বসানোর চেষ্টা করে গেছেন। তার পরিণাম আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
প্রেসিডেন্সি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে পড়াশোনার মান উন্নত করার উদ্দেশ্যে কিন্তু এগিয়ে এসেছিলেন প্রেসিডেন্সিরই এক জন প্রাক্তন ছাত্র পশ্চিমবাংলার ভূতপূর্ব মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বুঝেছিলেন প্রেসিডেন্সিকে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না, কেননা, বাংলার সবচেয়ে মেধাবী ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়তে আসে, তাদের শিক্ষাজীবনের ভিত সেখানেই দৃঢ় হবে, যাতে ভবিষ্যতে তারাই পথপ্রদর্শক হতে পারে। নিজের দলের সঙ্গে অনেকটা লড়াই করেই তিনি প্রেসিডেন্সিকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে উত্তরণে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
অশোকবাবু এক দিকে যখন বলছেন ‘সরকারের ভাঁড়ে ভবানী’, তখন তিনি নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন, বাংলার সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকী শুধু কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কেও প্রেসিডেন্সির সমস্তরে উন্নীত করা আর্থিক ভাবে সরকারের সাধ্যের বাইরে। তাই প্রেসিডেন্সির উন্নয়নের যজ্ঞকে একটা ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে দেখা যেতে পারে। পরে যদি দেখা যায় এই পরীক্ষায় লক্ষণীয় সাফল্য এসেছে, তা হলে প্রেসিডেন্সিকে মডেল করে অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে ধাপে ধাপে একই ধরনের পদক্ষেপ করা যেতে পারে। তত দিন ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য যতটা অতিরিক্ত অর্থ সাহায্য করা সম্ভব, সরকার ততটাই করার চেষ্টা করুক।
‘৫ তারিখের সভার ধারেকাছেও ছিলাম না’
‘নাট্যকর্মী সভায় সিপিএমত্ব বনাম তৃণমূলত্ব’ শিরোনামের (আ বা প, ১৪-১০) প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, সম্প্রতি নাট্যকর্মী বিমল চক্রবর্তীর হেনস্থায় ‘সংস্কৃতি সমন্বয়’ ও ‘নাট্যস্বজন’-এর ডাকা দু’টি সভাতেই আমি উপস্থিত ছিলাম এবং দ্বিতীয় দিন ১৩ অক্টোবর নাট্যস্বজন-এর সমাবেশে দাঁড়িয়ে ৫ তারিখের সংস্কৃতি সমন্বয়ের জমায়েতের সমালোচনা করেছি।
সংবাদটি একাংশে ভুল। ৫ তারিখের প্রথম সভার ধারেকাছেও আমি ছিলাম না। ১৩ অক্টোবর নাট্যস্বজন-এর ডাকে সাড়া দিয়ে উল্লিখিত ঘটনায় শহর জুড়ে যে-তোলপাড় শুরু হয়েছে, সে বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।
সে নারী কখনও দর্পময়ী, কখনও দুর্গা

দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে, অবনীন্দ্রনাথ, যামিনী রায় ও বিকাশ ভট্টাচার্য এই তিন মহাশিল্পীর চোখে দেবীর শিল্পরূপের পরিচয় দিয়ে যোগেন চৌধুরী আমাদের ঋদ্ধ করেছেন (‘এই অপরূপ রূপে’, উৎসব, ১২-১০)। বিকাশ ভট্টাচার্যের দুর্গা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন ‘যখন বাঙালির প্রিয় দুর্গা প্রতিমাকে নিয়ে তিনি ছবি আঁকেন, তখনও দেখতে পাই সে-দুর্গা যেন নাগরিক কলকাতার নারী।...তারা জলজ্যান্ত কলকাতার নাগরিক।’
এই প্রসঙ্গে জানাই, বিকাশ ভট্টাচার্য দুর্গা সিরিজের ছবিতে দেখিয়েছেন নারীর ভিন্ন রূপ, কিন্তু তারা শুধু কলকাতার নয়। সে নারী কখনও সন্তানকোলে গ্রামের এক সাধারণ, দরিদ্র জনজাতি রমণী, ঝর্নার সামনে দৃপ্ত তেজে রাইফেলের সামনে দাঁড়িয়ে (দর্পময়ী), কখনও সে পথের পাঁচালীর দুর্গার মতো, গ্রামে মাটির কুটিরের মাঝে সংকীর্ণ পথের এক কোণে দাঁড়িয়ে (শ্যামা ২)। কখনও বা গ্রামের পুকুরে আত্মবিসর্জনের প্রতিমার মতো (বিসর্জন)।
প্রসঙ্গত, ‘শি’ ছবিটি খুবই উল্লেখযোগ্য। ত্রিনয়না এক দৃপ্ত নারী অতি সাধারণ বেশে চপ্পল পায়ে কলকাতার ট্রাম লাইনের পাশে হেঁটে চলেছে, দু’হাতে সব্জি-ভরা থলে, বাঁ হাতের মাঝেও সবুজ শস্য। অবনীন্দ্রনাথের ‘ভারতমাতা’র পাশাপাশি বিকাশের রূপকল্পনায় দু’হাতে খাদ্য-ভরা দুর্গারূপী আজকের ভারতমাতা?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.