|
|
|
|
|
|
কুবের উবাচ |
শঙ্খ রায় চৌধুরী (৪০) স্ত্রী স্মিতা (৩৭) সন্তান ঝিনুক (২)
• কর্তার চাকরি বেসরকারি সংস্থায় • গিন্নি রাজ্য সরকারের কর্মী • ফ্ল্যাট কেনা সারা, কিন্তু তা হাতে আসেনি এখনও
• দিতে হচ্ছে বাড়ি ভাড়া
• ইচ্ছে, বছর ঘোরার আগেই বাড়ির ধার শোধ করা
• দু’জনেই চান বুড়ো বয়সের জন্য টাকা জমাতে
|
শঙ্খ
নিট মাস-মাইনে ৮০,০০০ |
টাকা রাখেন (বছরে) |
• পিএফ ৯৬,০০০ |
• জীবন বিমা (ইউলিপ) ৪০,০০০ |
• স্বাস্থ্য বিমা ১৩,০০০ |
• বিমার মূল্য ১৫ লক্ষ |
• স্থায়ী আমানত ৩,৬০,০০০ |
• পিপিএফ ১,০০,০০০ |
মাসে খরচ (সংসার খরচ বাদে) |
• গৃহঋণ ২০,০০০ |
• বাড়ি ভাড়া ১১,০০০ |
• বাবা-মাকে দিতে ৫,০০০ |
স্মিতা
নিট মাস-মাইনে ৪০,০০০ |
টাকা রাখেন (বছরে) |
• পিএফ ৬০,০০০ |
• জীবন বিমা (ইউলিপ) ৪০,০০০ |
• স্থায়ী আমানত ৪০,০০০ |
মাসে খরচ (সংসার খরচ বাদে) |
• বাবা-মাকে দিতে ৭,০০০ |
|
|
|
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
শৈবাল বিশ্বাস |
|
শঙ্খ-স্মিতার দূরদৃষ্টি তারিফ করার মতো। তাঁরা বাবা-মায়ের দায়িত্ব অবহেলা না-করেও নিজেদের বুড়ো বয়সের ব্যবস্থা করায় মন দিয়েছেন অনেক আগে থেকেই। অবহেলা করেননি স্বাস্থ্য বিমার বিষয়টিও। দেখা যাক, যে যে লক্ষ্যের কথা তাঁরা লিখেছেন, সেগুলি পূরণ হতে পারে কী ভাবে
লক্ষ্য
বছর ঘোরার আগেই গৃহঋণের টাকা ফেরতের বন্দোবস্ত।
উপায়: আমানত ব্যবহার
আপনারা এক বছরের মধ্যে বাড়ি কেনার ধার শোধ করতে চাইছেন মানে নিশ্চয়ই তার জন্য টাকা জমাচ্ছেন অনেক আগে থেকে। কারণ, নইলে এখন থেকে শুরু করে এক বছরে তা মিটিয়ে ফেলা শক্ত।
এই বিষয়টি আরও একটু সহজ করতে একটা উপায় বলি আপনাদের দু’জনের এক সঙ্গে প্রায় ৪ লক্ষ টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। সেখান থেকে ওভারড্রাফটের সুবিধা বা আমানত থেকে ঋণ নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আমানতে প্রাপ্য সুদের থেকে আরও ২% বেশি সুদ দিতে হবে আপনাকে। বেশির ভাগ ব্যাঙ্কই এ ভাবে আমানতের ৯০% পর্যন্ত ঋণ দেয়। এ জন্য নির্দিষ্ট মাসিক কিস্তিরও বাধ্যবাধকতা নেই। বাড়ি-ঋণ শোধ হলে সুবিধা মতো এই ঋণও শোধ করে দেবেন।
হিসাব কষে দেখুন গৃহঋণে কত সুদ দিচ্ছেন, আর স্থায়ী আমানত ও অন্যান্য জমার সুদ থেকেই বা কত আয় হচ্ছে। মনে রাখবেন, গৃহঋণে রয়েছে করছাড়ের সুবিধা। ২৪ নম্বর ধারায় এ ক্ষেত্রে সুদে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাবেন। যেহেতু প্রথম দিকে মাসিক কিস্তিতে সুদের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই সহজেই তাতে করছাড় পেতে পারেন। তাই প্রথম বছরেই ঋণ শোধের তাড়াহুড়ো না-করে নিতে পারেন সেই সুবিধাও। এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঋণের মেয়াদের যে-কোনও সময়ে তা শোধ করা যায়। জরিমানা লাগে না। তাই স্থায়ী আমানতে হাত না-দিয়ে তা ঋণ শোধের কাজেও লাগাতে পারেন।
বাড়ির দায় পরিবারের নয়
উপায়: সমান টাকার জীবনবিমা
শঙ্খ বাড়ির দামের সমান টাকার জীবন বিমা করলে ভাল। বিশেষত স্টেপ ডাউন পদ্ধতিতে। এতে প্রিমিয়াম তুলনায় কম। ঋণ শোধ হতে থাকলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও কমে। মেয়াদ শেষে টাকা হয়তো পাবেন না, কিন্তু ধার শোধের আগে কিছু হলে, বাড়ির জন্য পরিবারের উপর আলাদা কোনও চাপ তৈরি হবে না। ব্যাঙ্ক তা বুঝে নেবে বিমা সংস্থার সঙ্গেই। |
|
ভবিষ্যতের সুরক্ষা
উপায় ১: ফান্ডে এসআইপি
শঙ্খ এবং স্মিতা দু’জনেই স্থায়ী আমানতে মোটা অঙ্ক লগ্নি করেছেন। কিন্তু কর ও মূল্যবৃদ্ধি মাথায় রাখলে, এখানে রিটার্ন তুলনায় কম। তাই প্রতি মাসে শঙ্খ যে ৩০ হাজার টাকা স্থায়ী আমানতে রাখছেন, তার অন্তত অর্ধেক রাখুন এসআইপি-তে। তাতে সন্তানের পড়াশোনা-সহ অনেক চাহিদা মেটানো সম্ভব। সন্তানের বয়স এখন ২। যদি মনে করি তার ১৮ বছরের কথা ভেবে আগামী ১৬ বছর তাঁরা এসআইপি-তে টাকা জমাবেন, তা হলে কতটা জমবে? আসুন দেখি।
মাসে লগ্নি ১৫,০০০ টাকা
সম্ভাব্য রিটার্ন ১২%, মেয়াদ ১৬ বছর, সম্ভাব্য আয় ৮৬ লক্ষ
মন্দ নয়। তাই না? এর সঙ্গে মাথায় রাখুন করছাড়ের সুবিধাও।
উপায় ২: মাসিক কিস্তিতে বিমা
দু’জনেরই ইউনিট লিঙ্কড পলিসি রয়েছে। কিন্তু বছরে এক বার টাকা দিলে বাজারের সঙ্গে তাল মেলানো যায় না। এক বার লাভ হলে, অন্য বছর ক্ষতি হতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে মাসিক কিস্তিতে এই টাকা দেওয়া শুরু করুন। যাতে বাজারের ওঠাপড়া আপনাদের আয়কে কমিয়ে আনতে না-পারে। পাশাপাশি, ইউলিপে সুবিধা রয়েছে শেয়ার বাজার থেকে ঋণপত্রে (বা উল্টোটা) লগ্নি সরিয়ে আনার। সেই সুবিধাও নিতে পারেন। ভাবতে পারেন মেয়াদি প্রকল্প চালুর কথাও।
সচ্ছল অবসর
উপায়: পেনশন প্রকল্প
দু’জনেরই পিএফ-এ লগ্নি ভাল। বিশেষত শঙ্খর এক লক্ষ টাকা লগ্নি প্রশংসাযোগ্য। তবে স্মিতার উচিত স্থায়ী আমানতের কিছু টাকা পিপিএফে রাখা। অবশ্য স্মিতার পেনশন রয়েছে। তাই হয়তো অতটা চিন্তা নেই। তবে শঙ্খর উচিত এখনই একটি পেনশেন প্রকল্পে লগ্নি করা। |
(অনুরোধ মেনে পরিবারের সকলের নাম পরিবর্তিত) |
|
|
|
|
|