এক বার নয়। দু’দু’বার। ২০১২ সালের ম্যান বুকার সাহিত্য পুরস্কার উঠে এল ব্রিটিশ লেখিকা হিলারি ম্যানটেলের হাতে। দ্বিতীয় বারের জন্য। বইয়ের নাম, ‘ব্রিঙ্গ আপ দ্য বডিজ’। এই প্রথম কোনও ব্রিটিশ লেখিকা দু’বার বুকার পেলেন। তা-ও একই সিরিজের দু’টি বইয়ের জন্য। বুকার পুরস্কারের ইতিহাসে এ-ও এক অভাবনীয় ঘটনাই বটে।
২০০৯ সালে হিলারির লেখা ‘উল্ফ হল’ প্রথম বারের জন্য বুকার পুরস্কার পেয়েছিল। ব্রিটেনের রাজা অষ্টম হেনরি ও তাঁর প্রধান সহকারী টমাস ক্রমওয়েলের জীবনী নিয়ে উপন্যাস। তাঁর লেখাটি তিন পর্বে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লেখিকা। প্রথম পর্বটি ছিল ‘উল্ফ হল’। এবং দ্বিতীয়টি ‘ব্রিঙ্গ আপ দ্য বডিজ’। আর দু’টোই বুকার শিরোপা অর্জন করে ফেলল। স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত লেখিকা। আগের উপন্যাসটি যেখানে শেষ করেছিলেন, এ বার হিলারি শুরু করেছেন ঠিক সেখান থেকেই। মূলত টমাস ক্রমওয়েল ও রাজা অষ্টম হেনরির স্ত্রীর ভাগ্য নিয়েই লেখা হয়েছে ‘ব্রিঙ্গ আপ দ্য বডিজ’। “লোকে একটা বুকারের জন্য দীর্ঘ কুড়ি বছর অপেক্ষা করেন, আর আমার কাছে দু’বার চলে এল। আমি মনে করি এটা আমার বিশ্বাস আর আত্মবিশ্বাসের ফল।” লন্ডনের ঐতিহ্যপ্রাচীন গিল্ড হলে পুরস্কারটি নেওয়ার সময়ে বললেন হিলারি ম্যানটেল। হিলারির উপন্যাসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিচারকদের প্যানেলও। তাঁদেরই এক জন পিটার স্টটহার্ড যেমন বললেন, “এটা একটা রক্তক্ষয়ী গল্প। কিন্তু হিলারি ম্যানটেল এমন এক লেখিকা যিনি রক্তের মধ্যে দিয়েই লিখতে জানেন। আর জানেন, নৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি করার জন্য তাঁর শিল্প ও গদ্যের ক্ষমতা ব্যবহার করতে।” বিচারকরা আরও জানিয়েছেন, হিলারির আগের উপন্যাসকেও ছাপিয়ে গিয়েছে এ বারের উপন্যাসটি। বুকিরাও বাজি রেখেছিল হিলারির বইটির উপরই।
তবে এ বার বুকার জেতা সহজও ছিল না। হিলারির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়েছে ব্রিটেনের উইল সেল্ফের উপন্যাস ‘আমব্রেলা’। ভারতীয় কবি জিৎ থাইলের প্রথম উপন্যাস ‘নারকোপোলিস’ও দৌড়ে ছিল। মোট পাঁচ জন লেখকের উপন্যাস চূড়ান্ত হয়েছিল।
কিন্তু শেষমেশ বাজিমাত করেছেন হিলারি ম্যানটেলই। বিচারক স্টটহার্ডের কথায়, “ব্রিটিশ রাজত্বের চেনা ইতিহাসে নতুন জীবন দিয়েছেন হিলারি।” |