গত এক সপ্তাহের মধ্যে হয়নি ঝড় বৃষ্টি। অথচ ঝড়ে গাছ ভেঙ্গেছে অজুহাতে প্রায় ৮০টি আকাশমণি গাছ কেটে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠল বন দফতরের কর্মীর বিরুদ্ধেই। মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার ভারিলা এলাকার গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বালুরঘাট থেকে বনাধিকারিক সেখানে যান। তিনি গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এলাকায় মজুত করে রাখা গাছের লগগুলি তিনি বাজেয়াপ্ত করেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকার পাহাড়পুরে বন বিভাগের জঙ্গল দেখভালের দায়িত্বে থাকা রক্ষীরাই গাছ কাটার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। গত রবিবার রাতে গাছগুলি কয়েকজন দুষ্কৃতীকে দিয়ে কেটে ফেলা হয়। এলাকার বাসিন্দারা রেঞ্জারের কাছে অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ‘ঝড়ে ভেঙে পড়া’ গাছ কাটা হচ্ছে বলে ওই রক্ষীরা জানিয়েছিলেন। অথচ গত এক সপ্তাহের কোনও ঝড় হয়নি। এরপর গাছের লগগুলি সরু গলির মধ্যে স্তূপ করে রেখে দেওয় হয়। এতেই সন্দেহ বাড়ে। বন দফতরের রেঞ্জার দিবাকর আচার্য বলেন, “ওই গাছ কাটার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফরেস্ট গার্ড পুলক চক্রবর্তী এবং শৈলেন মজুমদার ছাড়াও আরও তিনজনের বিরুদ্ধে এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। এদিন এলাকায় আসতে বলা হলেও তাঁরা আসেননি। বিষয়টি বিভাগীয় বনাধিকারিককে (ডিএফও) জানানো হয়েছে।” |
গাছ কাটার ঘটনায় বনরক্ষীদের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বিভাগীয় বনাধিকারিক অপূর্ব সেন খবর পেয়ে রায়গঞ্জ থেকে এ দিন বিকেলে বালুরঘাটে যান। তিনি বলেন, “অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে অভিযুক্ত বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত বনরক্ষী শৈলেন মজুমদার ও পুলক চক্রবর্তী বলেন, “বাসিন্দাদের অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা রেঞ্জারকে জানাতাম, তার আগেই এলাকার বাসিন্দারা হইচই বাধিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন।” তবে অনুমতি না নিয়ে কেন অপরিণত গাছগুলি কেটে ফেলা হল, তার কোনও সদুত্তর অভিযুক্ত ওই রক্ষীরা দিতে পারেননি। বন ও পরিবেশ বিভাগের সরকারি মনোনীত সদস্য অক্ষয় বর্মন বলেছেন, “করাত কলের সঙ্গে যোগসাজস রয়েছে বনবিভাগের কতিপয় রক্ষীর। তাদের মদতেই রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা গাছ কেটে ফেলছে। ডিএফওকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” এদিকে, সোমবার রাতে গঙ্গারামপুর ব্লকের বাসুরিয়া এলাকায় দুষ্কৃতীরা পরপর গাছ কেটে নেওয়ার জন্য বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ার ঘটনায় সকাল থেকে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বন দফতরের একাংশ কর্মীর মদতে বেপরোয়াভাবে এলাকায় গাছ কাটা হচ্ছিল। |