পুঁজি বলতে ‘নস্টালজিয়া’। যা সে ভাবে এত দিন কাজে না-লাগলেও, এ বার তা ভাঙিয়ে অনাবাসী বাঙালির পুজোর বাজার ধরতে চাইছে কর্পোরেট মহল। আর ১০০ কোটি টাকার এই বাজার ধরার অস্ত্র প্রযুক্তি।
ম্যাডক্স স্কোয়্যারের আড্ডা। কলেজ স্কোয়্যারের আলো। রাতভর ভিড় ঠেলে ঠাকুর দেখা। সঙ্গে ফুচকা ও অন্যান্য ‘স্ট্রিট ফুড’। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, সিডনি পৃথিবীর যে কোনও গোলার্ধের বাঙালির মন জুড়ে থাকে এই স্মৃতি। দেশ থেকে প্রতিমা, পুরোহিত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কুশীলবদের এনেও স্মৃতি সরানো সহজ নয়। সেই ফাঁক ভরাট করতেই এ বার দুর্গা ঠাকুরের নেট-যাত্রা।
ইন্টারনেটে দুর্গাপুজোর নানা দিক ছড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই। পুরস্কার পাওয়া মণ্ডপ, প্রতিমা, সিঁদুর খেলা ও বিসর্জনের ছবি। কয়েক বছর ধরেই তা রয়েছে নেটের পাতায়। কিন্তু সেটা অনেকটা অ্যালবামের পাতা উল্টে দেখার মতো অভিজ্ঞতা। পুজোর সেই মুহূর্তগুলিকে তরতাজা ধরতে পারার স্বাদ ছিল অপূর্ণই।
এ বার ইন্টারনেটের মাধ্যমে পুজোকে ‘লাইভ’ ধরার সুযোগ তৈরি হচ্ছে বলে দাবি দুর্গাপূজা ট্যুর ডট কম বা দুর্গাপূজা অনলাইন-এর মতো সংস্থার। পুজোর সঙ্গে বহু বছর জড়িয়ে থাকা সংস্থা স্প্ল্যাশ-এর কৌশিক দত্ত জানান, দুর্গাপূজা ট্যুর ডট কম অনাবাসী বাঙালিদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। পুজোর কয়েক দিন সকাল-সন্ধ্যা ৪ ঘণ্টা করে উত্তর ও দক্ষিণের পুজো ‘অনলাইন’-এ দেখানো হবে। ক্যামেরাবন্দি মুহূর্তগুলি সঙ্গে সঙ্গে ‘আপলোড’ করা হবে। শুধু মণ্ডপ বা প্রতিমা দর্শন নয়। থাকবে আড্ডা-ভিড়ের ছবি। প্রযুক্তির দৌলতে যেখানে ছবি তোলা হবে সেখান থেকেই চলে যাবে সোজা নেট দুনিয়ায়। থাকছে অঞ্জলি দেওয়ার অনলাইন ব্যবস্থাও।
আর ব্যবসার নিয়ম মেনে নেট দুনিয়ার এই পুজোয় আগ্রহ দেখাচ্ছে ব্যাঙ্ক, হাসপাতাল, নির্মাণ সংস্থা। কারণ গ্রাহক বা ক্রেতা হিসেবে অনাবাসীদের পাল্লা বরাবরই ভারী। প্রথাগত বিজ্ঞাপনেও অনাবাসীদের পুজোর চাহিদা আছে। যেমন ২ বছর আগে ব্রিটেনে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের পুজো ‘স্পনসর’ করে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। ফলও মেলে। দেশে বাবা-মায়ের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে যোগাযোগ করেন অনেকেই। |