অবশেষে পরিজনদের কোলে ফিরতে চলেছে ছোট্ট ইন্দ্রাশিস সাহা ওরফে তোজো। তবে বাবা-মা নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির আদালত তাকে ‘দায়িত্বশীল’ কোনও আত্মীয়ের হাতে তুলে দিতে পারে।
ইন্দ্রাশিসের বাবা, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা দেবাশিস সাহা বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকরি নিয়ে জুলাই মাসে পৌঁছন নিউ জার্সির পার্সিপ্যানি শহরে। তাঁর দাবি, ৯ অগস্ট তিন ফুট উঁচু খাট থেকে খেলতে খেলতে বেকায়দায় পড়ে গিয়ে চোট পায় ইন্দ্রাশিস। যে হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়, তার ডাক্তারেরা মনে করেন, মারধরে আহত হয়েছে ওই শিশুটি। হাসপাতাল থেকেই খবর যায় ‘নিউ জার্সি চাইল্ড প্রোটেকশন টিম’-এর কাছে। তারা এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে দেবাশিস ও তাঁর স্ত্রী পামেলাকে। ‘চাইল্ড প্রোটেকশন টিম’-এর করা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও ইন্দ্রাশিসকে বাবা-মা’র থেকে আলাদা করে একটি হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। |
ইন্দ্রাশিস। —নিজস্ব চিত্র |
এ সংক্রান্ত মামলার শুনানির শুরুতে আদালত জানিয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী কোনও ভারতীয়ের কাছে ইন্দ্রাশিসকে রাখা যেতে পারে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ সেপ্টেম্বর দেবাশিসবাবুর আইনজীবী আদালতে করা আবেদনে জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেবাশিসবাবুর এমন কোনও পরিচিত প্রবাসী ভারতীয় নেই। বরং কোনও আত্মীয়ের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হোক। সেইমতো ইন্দ্রাশিসের ঠাকুর্দা নির্মলকৃষ্ণ সাহা, দিদিমা প্রগতি বসাক, পিসি শুভ্রা কুণ্ডু এবং কাকা ভাস্কর কুণ্ডুএই চার জনের মধ্যে এক জনের হাতে ইন্দ্রাশিসকে তুলে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। আদালত গত সপ্তাহে ওই আবেদন গ্রহণ করে।
এর পরে নিউ জার্সির ওই আদালত ভারতীয় দূতাবাসকে এ বিষয়ে অবহিত করে এবং বলে ভারতের কোনও সরকারি সংস্থাকে দিয়ে ইন্দ্রাশিসের পরিবারের ওই চার সদস্যের সম্পর্কে তদন্ত করে জানাতে হবে, তাঁদের মধ্যে কে শিশুটির দেখভাল করার যোগ্য। সম্প্রতি ওই দূতাবাস থেকে নয়াদিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ কথা জানানো হয়েছে। দেবাশিসবাবুর বাবা, বালুরঘাটের কুণ্ডু কলোনির বাসিন্দা নির্মলকৃষ্ণবাবু বলেন, “ছেলের কাছ থেকে শুনেছি, নিয়ম অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে ওই প্রক্রিয়া শেষ না করলে ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে তোজোকে আর ফেরত পাওয়া যাবে না।” |