|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
ইংরেজিতে পড়ে বাংলায় উত্তর লিখব? |
৮ অক্টোবর ২০১২ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে, এ-বছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেডিক্যাল পরীক্ষা সর্বভারতীয় স্তর (NEET) অনুযায়ী নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্বঘোষিত এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার চলতি শিক্ষাবর্ষের মাঝপথে মেনে নেওয়ায় আমার মতো আরও কয়েক হাজার জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেডিক্যাল পরীক্ষার্থী আজ কার্যত দিশেহারা। দিশেহারা হওয়ার পিছনে বাস্তব কারণ রয়েছে।
প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের যে সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে এত দিন মেডিক্যাল জয়েন্ট এন্ট্রান্স নেওয়া হত, এখন তার বিস্তার ঘটল বেশ কয়েক গুণ। নতুন ভাবে প্রস্তুতির সময়ও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যেমন,
১) ফিজিক্সে যে অংশগুলি অতিরিক্ত তা হল: ডুয়েল নেচার অব ম্যাটার অ্যান্ড রেডিয়েশন।
২) কেমিস্ট্রিতে অতিরিক্ত অংশ: সলিড স্টেট, সারফেস কেমিস্ট্রি, এস ব্লক এলিমেন্টস ডি অ্যান্ড এফ ব্লক এলিমেন্টস, কো-অর্ডিনেশন কম্পাউন্ডস ইত্যাদি।
৩) বায়োলজির ক্ষেত্রে বটানি, হেল্থ অ্যান্ড ডিজিজ, এনভায়রনমেন্ট অংশের ব্যাপ্তি বেশি।
দ্বিতীয়ত, রাজ্য সরকারের দাবি ছিল, বাংলা ভাষায় প্রশ্নপত্র হতে হবে। সে দাবি মানা হলেও তার কোনও মূল্যই নেই। এই কারণে যে, বাজারে সর্বভারতীয় পরীক্ষার জন্য বিক্রিত সমস্ত বই-ই ইংরেজি ভাষায় লেখা। এক জন ছাত্র ইংরেজি ভাষায় বই পড়ে বাংলা ভাষার প্রশ্নে কি পঠিত উত্তরের অনুবাদ করবে? এই ভাবে সিলেবাস অনুযায়ী বইপত্র না-ছাপিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেডিক্যাল পরীক্ষার মুখে ঠেলে দেওয়া বস্তুত অমানবিকতারই নামান্তর।
তৃতীয়ত, এক জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সিলেবাস অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক নির্বাচনী ও চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে। আবার এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাকে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেডিক্যাল পরীক্ষারও প্রস্তুতি নিতে হবে। এই দুইয়ের মধ্যে তাঁতের মাকুর মতো দৌড়াদৌড়ি চলতি বছরের পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অন্তর্গত বিদ্যালয়গুলির জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেডিক্যাল পরীক্ষার্থীদের কাছে এক জ্বলন্ত সমস্যা।
অর্কদীপ্ত মুখোপাধ্যায়। দ্বাদশ শ্রেণি, প্রফুল্লনগর বিদ্যামন্দির, উত্তর চব্বিশ পরগনা
|
ধর্ষণ আর দুর্ঘটনায় মৃত্যু তবে এক হল |
কৌটিল্য রাজধর্ম সম্পর্কে লিখেছেন ‘যে রাজার রাজ্যে সালংকারা যুবতী নারী রাত্রিকালে একাকী বৃক্ষতলে নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাইতে পারে, সেই রাজাই সুশাসক’।
অর্থাৎ, নারীর সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাই সুশাসক রাজার কৃতিত্বের মাপকাঠি। তখনকার দিনে ধর্মাধর্ম বোধটিও মানুষকে অন্যায় করা থেকে রক্ষা করত। অপরাধ করা থেকে বিরত রাখার জন্য অঙ্গচ্ছেদের কঠোর শাস্তি প্রচলিত ছিল। ‘পরদারেষু মাতৃবৎ’ অন্যের স্ত্রীকে মাতৃজ্ঞানে প্রণাম করার বোধটিও মানুষের অন্তরে চারিয়ে দেওয়া হত। আর এখন, এই মুহূর্তে ভারতের নারীলাঞ্ছনার তালিকার শীর্ষে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ।
অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, সরকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করল। অর্থাৎ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সঙ্গে এক আসনে বসানো হল ধর্ষণকে। একে আইনি বৈধতা দেওয়া হল। ধর্ষিতা মহিলারাও ক্ষতিপূরণ পাবেন। ধর্ষণের কোনও ক্ষতিপূরণ হয়? হতে পারে!
সবিতা দেবী। ম্যাগাজিন রোড, কোচবিহার
|
এই বিমল ঘোষ কবি নন, মূলত শিশুসাহিত্যিক |
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখিত ‘তাঁর ভূমিকা ছিল কালজয়ী’ (৭-১০) রচনাটিতে একটি ভ্রান্তি আছে। শ্রীগঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘আনন্দমেলা’... বিভাগের সম্পাদক ছিলেন কবি বিমলচন্দ্র ঘোষ। ছদ্মনাম ‘মৌমাছি’। কবি বিমলচন্দ্র ঘোষ (১২-১২-১৯১০২২-১০-১৯৮১) এবং মৌমাছি ছদ্মনামা ‘আনন্দমেলা’ পরিচালক বিমল ঘোষ (চন্দ্র নয়) (১৮-৩-১৯১০৭-৩-১৯৮২), পৃথক ব্যক্তি। মৌমাছি বিমল ঘোষ মূলত কবি ছিলেন না, ছিলেন শিশুসাহিত্যিক। আনন্দবাজার পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত শিশু ও কিশোরপাঠ্য ‘আনন্দমেলা’র সূচনা থেকেই (১৯৪০) তিনি ছিলেন এই বিভাগের পরিচালক ও এর সঙ্গে যুক্ত ‘মণিমেলা’র সংগঠক।
কাননবিহারী গোস্বামী। বাংলা বিভাগ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
|
|
|
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আলাদা কামরা চাই |
আমি এক জন সিনিয়র সিটিজেন। আইনে ৬০ বছরের বেশি নাগরিকদের কিছু সুযোগ-সুবিধার কথা বলা আছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক, পোস্টঅফিস কিংবা রেল কাউন্টারে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য কোনও আলাদা কাউন্টারের ব্যবস্থা নেই। প্রবীণ নাগরিকদের সাধারণ কাউন্টারে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে লাইন দিতে হয়। আমার প্রস্তাব, অবিলম্বে ব্যাঙ্ক, পোস্টঅফিস, রেলস্টেশন ও রেশন দোকানে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য আলাদা লাইনের ব্যবস্থা করা হোক। ট্রেনে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য অন্তত একটি আলাদা কামরার ব্যবস্থা করা হোক।
অজিত বসু। চুঁচুড়া, হুগলি
|
‘বাবু, ব্যাঙ্কের ছিলিপটা এট্টু লিখে দ্যান’ |
‘সাক্ষরতার প্রথম পাঠ’ (২৬-৯) সম্পাদকীয় প্রসঙ্গে দু’একটি কথা বলতে চাই। এক সময় পশ্চিমবঙ্গে নিরক্ষরতা দূরীকরণের ব্যাপারে একটা উন্মাদনা এসেছিল। কর্মীদের ট্রেনিংয়ের ব্যাপারে সরকারি টাকা খরচে কার্পণ্য ছিল না। ট্রেনিং শেষে তাঁদের নির্দিষ্ট স্থানে পাঠানো হল এবং বই ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদিও হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু তাঁরা যথাস্থানে গেলেন কি না এবং বইপত্রগুলো ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছল কি না, তার খোঁজখবর কেউ নিল না। কিছু দিন পরে খবরের কাগজে পড়লাম, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা পূর্ণ সাক্ষর জেলা। চার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, নিরক্ষর মানুষের ভিড় আগে যেমন ছিল, তেমনই আছে। আগের মতোই ব্যাঙ্কে গেলে ‘বাবু, আমার ব্যাঙ্কের ছিলিপটা এট্টু লিখে দ্যান’ শুনতে পাই।
এক দিন বাড়ি ফিরছি একটা দু-চাকার ভ্যানে। ভ্যানচালক বলল, ‘জানেন বাবু, আমাদের নাম সই করা শেখাবে বলে এক বাবু আমাদের কেলাবে আসত। মানে দু’-এক দিন এসেছিল। তার পর আর এলোনি। আমরা সবাই একদিন বাবুর বাড়িতে গিয়ে বললাম, বাবু, আমাদের নাম সই করাডা শিখায়ে দ্যান, আমরাই আপনারে টাকা দেব। বাবু এলোনি।’
এক দিন গোসাবা থানার লাহিড়িপুরে শুনলাম, সে দিন এলাকার সমস্ত হাইস্কুলের পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিরক্ষরতা দূরীকরণ অভিযান কেমন এগিয়েছে, দেখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষ আসবেন। এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী?
গৌর সেন। রাজারহাট, কলকাতা-১৩৫ |
|
|
|
|
|