উৎসবের মুখে ফের বোঝা বাড়ছে আমজনতার। একটানা বেড়ে ৮ শতাংশের দিকে এগোচ্ছে মূল্যবৃদ্ধির সরীসৃপ। দুশ্চিন্তায় ভুগছে শিল্পমহলও। কারণ আরও ক্ষীণ হচ্ছে আসন্ন ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর সম্ভাবনা।
পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা এই সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার সেপ্টেম্বরে ছুঁয়েছে ৭.৮১ শতাংশ। যা গত দশ মাসে, অর্থাৎ ২০১১ সালের নভেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ। ওই সময়ে মূল্যবৃদ্ধি পৌঁছেছিল ৯.৪৬ শতাংশে। উল্লেখ্য, অগস্টে এই মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৫৫ শতাংশ।
মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে ডিজেলের চড়া দাম। সেপ্টেম্বরেই ডিজেলের দাম লিটারে ৫ টাকারও বেশি বাড়িয়েছে তেল সংস্থাগুলি। যার জেরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধিঅগস্টের ৮.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১.৮৮ শতাংশ।
রয়টার্সের এক সমীক্ষা অনুযায়ী এই মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৭ শতাংশ বাড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। বাস্তবে সেই পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গেল সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান। |
সব হার শতাংশে তথ্যসূত্র: পিটিআই |
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর জেরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ বার সুদ কমানোর রাস্তায় না-ও হাঁটতে পারে। অথচ ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ইতিমধ্যেই সুদ কমানোর দাবি জানিয়েছে শিল্পমহল। কিন্তু নাছোড় মূল্যবৃদ্ধির উপর লাগাম পরাতে নাজেহাল শীর্ষ ব্যাঙ্কের পক্ষে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ অক্টোবর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি পর্যালোচনা করার কথা। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজনও বলেছেন, “মূল্যবৃদ্ধি টানা বাড়ছে। এই পরিস্থিতি সুদ কমানোর ক্ষেত্রে তেমন একটা অনুকূল নয়।”
সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অবশ্য কমেছে। অগস্টের ৯.১৪ শতাংশ থেকে কমে তা হয়েছে ৭.৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে শাক-সব্জির দাম কমেছে ৬.৭৮ শতাংশ। অগস্টে তা বেড়েছিল ৯.৯৮ শতাংশ। উল্লেখ্য, পাইকারি মূল্য সূচক হিসাবে খাদ্যপণ্যের গুরুত্ব ১৪.৩ শতাংশ। কারখানার উৎপাদনের ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি সামান্য বেড়েছে।
এ দিকে, আর্থিক সংস্থা নোমুরা এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, সাধারণ ভাবে পরের ত্রৈমাসিকে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি বাড়তে পারে। খাদ্যপণ্যের দরের ক্ষেত্রেও তাদের মতে একই কথা খাটে। কারণ ডিজেলের দাম বাড়ার প্রভাবে পরিবহণ খরচ বাড়লে দ্বিতীয় দড়ায় দাম বাড়বে বহু পণ্যের।
নয়াদিল্লিতে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ জ্যোতীন্দ্র কউর জানান, এই মুহূর্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট (যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক আরবিআইয়ের কাছ থেকে স্বল্প মেয়াদি ঋণ নেয়) ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে গেল। |