বিপাকে আমন চাষিরা
ফলনই নেই নিগম-বীজে
দ্বিতীয় সবুজ বিপ্লব প্রকল্পে রাজ্য বীজ নিগমের সরবরাহ করা বীজ ছড়িয়ে আমন ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কয়েকশো চাষি। সবুজ খেত হয়েছে। কিন্তু রুগ্ন শিষে ফলনের দেখা নেই। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের ৫টি মৌজায় ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কৃষি দফতর। চাঁচল মহকুমা কৃষি আধিকারিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুরে দ্বিতীয় সবুজ বিপ্লব প্রকল্পে আমন চাষে ফলন নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৬১০ একর জমিতে ওই ধান চাষ করেন ৮৫০ জন চাষি। রাজ্য বীজ নিগম বীজ সরবরাহ করে, কৃষি দফতর থেকে অনুখাদ্য সরবরাহ ছাড়াও চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ফসল কাটার দু’সপ্তাহ আগে ফলন না দেখে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নামেন কৃষি কর্তারা। স্থানীয় চাষিরা জানান, দ্বিতীয় সবুজ বিপ্লব প্রকল্পের অধীনে ধান চাষ করলে সরকারি সাহায্যের কথা শুনে তাঁরা এগিয়ে যান। ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুলতাননগর, মুকুন্দপুর, ডহরা, ডাটিয়ন ও চকসাতন মৌজায় ৮৫০ জন চাষির ১ হাজার ৮৭৫ বিঘা জমি কৃষি দফতর চিহ্নিত করে। গত ২৯ জুন চাষিদের বীজ সরবরাহ করা হয়। বিঘা প্রতি ১০ কেজির প্যাকেট দেওয়া হয়। কৃষি কর্তা জানান, ধান গাছে ফুল ফোটার পরে সমস্যা দেখা দেয়। দু’সপ্তাহ পরে আমন ধান কাটার কথা। অন্য জমিতে ধানের শিষে পাক ধরলেও প্রকল্পের অধীন চাষ করা জমিতে শিষে ধান দেখা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়। একটি থোকায় অন্তত ৭টি শিষ হওয়ার কথা। একই সময়ে সগুলি পাকবে। কিন্তু সেখানেও তারতম্য দেখা দিয়েছে। শিষগুলি অপুষ্ট। ওই প্রকল্পে মহকুমার অন্য কোথাও এমন সমস্যা হয়নি বলে কৃষি কর্তাদের দাবি। চাঁচল মহকুমা কৃষি আধিকারিক বলেন, “কেন এটা হল সমস্ত দিক খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত বলা সম্ভব নয়।” চাষিরা জানান, বাইরে থেকে কিনে আনা বীজে এলাকায় ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু যে সমস্ত জমিতে সরকারি বীজে চাষ হয়েছে সেখানে ঠিক মতো শিষ গজায়নি। মুকুন্দপুরের চাষি সিউলাল সিংহ ওই প্রকল্পে তার ৫ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, “এবার বেশি ফলন আশা করেছিলাম। কিন্তু কিছুই হয়নি। পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।” একই দশা হয়েছে যোগিলাল গ্রামের চাষি লোকমান হোসেনের। তিনি বলেন, “৩ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে বাইরে থেকে বীজ কিনে চাষ করলে ভাল হত।” ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড বিধায়ক তজমূল হোসেন অভিযোগ করেন, বীজ বন্টনে দুর্নীতির জন্য এমনটা হয়েছে। যে বীজ দেওয়ার কথা সেটা না দিয়ে নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিধানসভায় বিষয়টি জানাব।” তৃণমূলের তরফে ঘটনার কথা নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। দলের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সভাপতি তোবারক হোসেন বলেন, “চাষি বিপদে। বিষয়টি নারী ও সমাজকল্যাণ জানানো হয়েছে। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.