সরকারিভাবে জেলায় বন্ধ চা বাগানের সংখ্যা পাঁচ। শ্রম দফতরের হিসেবে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার। অথচ খাদ্য দফতরের খাতায় বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক সংখ্যা ৯১ হাজার ৯৫৮ জন। সরকারি নিয়মে এই বিপুল সংখ্যক চা শ্রমিককে দু টাকা কেজি দরে চাল এবং আটা সরবারহ করতে সরকারকে প্রতি মাসে ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটে চলেছে তার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বাম আমল থেকে চলে আসা বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক সংখ্যায় কারচুপি করা হয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ। রবিবার জলপাইগুড়িতে খাদ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে কতগুলি বন্ধ চা বাগানে কতজন শ্রমিক রয়েছেন তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ৯১ হাজার বন্ধ চা শ্রমিককে চাল আটা সরবারহ করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, “খাদ্য দফতরের হিসেবে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের সংখ্যা দেখে রীতিমত চমকে উঠেছি। এই হিসেবে যে জল রয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এই গরমিল আগের খাদ্যমন্ত্রীর কী কারণে নজরে আসল না তা বুঝতে পারছি না।” বাম সরকারের আমলের খাদ্যমন্ত্রী তথা মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেন, “মন্ত্রীর বোঝা উচিত যে খাদ্য দফতর নিজে ঘুরে বন্ধ বাগানে ঘুরে তালিকা তৈরি করে না। সে সময়ে জেলা প্রশাসন বা সরকারিভাবে যে তালিকা পাওয়া গিয়েছিল, তার ভিত্তিতেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যদি ভুল কোথাও হয়ে থাকে সেটা খাদ্য দফতরের নয়, এটুকুই বলতে পারি।” শুধু চা শ্রমিকের সংখ্যাই নয়, জলপাইগুড়ি জেলাতেই প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে বলে খাদ্যমন্ত্রী এ দিন অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে প্রায় ৩৩ লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে। সেগুলি সবই উদ্ধার করা হবে।” মন্ত্রী জানান, চা বাগানে রেশন ব্যবস্থা সুসংহত ও স্বচ্ছ করতে বাগান কর্তৃপক্ষকে রেশন সরবারহের দায়িত্ব না দিয়ে ডিলার বা কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এতে আচমকা বাগান বন্ধ হলেও রেশন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটবে না। |