নিজস্ব সংবাদদাতা • পূর্বস্থলী ও নবদ্বীপ |
ভরা ভাগীরথীতে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে গেল চার কিশোর-কিশোরী। তাঁদের নাম পুষ্পিতা দে, কুন্তল সাহা, সাথী দাস ও প্রিয়া কর্মকার। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় বেঁচে যান কোয়েল দত্ত নামে এক বধূ। পুলিশ জানিয়েছে, ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে রাত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও কারও সন্ধান মেলেনি।
সাথী ও প্রিয়ার বাড়ি নদিয়ার নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুরে। বাকিরা পূর্বস্থলীর পাটুলি পঞ্চায়েতের নারায়ণপুরের বাসিন্দা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার প্রাচীন মায়াপুর থেকে নারায়ণপুরে বাপের বাড়িতে যান আরতি কর্মকার। সঙ্গে ছিল তাঁর দশ বছরের মেয়ে প্রিয়া ও প্রতিবেশী সমীর দাসের বছর পনেরোর মেয়ে সাথী। সেখান থেকে ওই গ্রামেই ভ্রাতৃবধূ কোয়েলের বাপের বাড়ি যান আরতিদেবীরা। রবিবার দুপুরে প্রিয়া ও সাথী কোয়েলের সঙ্গে ভাগীরথীর ভগতপুর ঘাটে স্নানে যায়। সঙ্গে ছিল কোয়েলের চোদ্দ বছরের বোন পুষ্পিতা ও তাঁর বছর বারোর মামাতো ভাই কুন্তল। |
ঘাটের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকার শুনে তাঁরা ঘাটের দিকে ছুটে যান। শ্যামল ভগত নামে এক বাসিন্দার কথায়, “ছুটে গিয়ে দেখি, এক তরুণী জলে ডুবে যাচ্ছেন। তাড়াতাড়ি একটি লম্বা লাঠি তাঁর দিকে ছুড়ে দিই। সেটি দিয়ে আমি ও আমার পড়শি বিশ্বজিৎ ভগত তাঁকে টেনে তুলি। সেই তরুণীই জানান, তাঁর সঙ্গে থাকা চার কিশোর-কিশোরী তলিয়ে গিয়েছে।” নদীর চোরা স্রোতের জন্যই এমন দুর্ঘটনা বলে বাসিন্দাদের অনুমান। আরতিদেবীর স্বামী কাশীনাথ কর্মকার পেশায় রিকশাচালক। তাঁদের এক মাত্র সন্তান প্রিয়া চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। প্রতিবেশীর মেয়ে, নবম শ্রেণির ছাত্রী সাথীকে নিয়ে বেড়াতে এসে এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ আরতিদেবী। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “পাড়া-পড়শির কাছে কী করে মুখ দেখাব জানি না।” ছোট মেয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন কোয়েল-পুষ্পিতার বাবা রঞ্জিত দে-ও। পুষ্পিতাও নবম শ্রেণির ছাত্রী। কুন্তল পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে।
ঘটনার পরে স্থানীয় ডুবুরিদের দিয়ে তল্লাশির কাজ শুরু করে পুলিশ। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত পেশাদার ডুবুরি না পৌঁছনোয় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। সন্ধ্যায় দু’টি স্পিড বোট ও দু’জন পেশাদার ডুবুরি পৌঁছন। তবে রাত পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। |