নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ভোট বড় বালাই! পরিস্থিতির চাপে আগামী লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সংখ্যালঘুদের দাবি-দাওয়া আদায়ে এখন জোর গলায় সরব হতে হচ্ছে বামেদের! কলকাতায় দলের সংখ্যালঘু বিভাগের সর্বভারতীয় স্তরের বৈঠক করে তফসিলি জাতি-উপজাতির মতো সংখ্যালঘুদের জন্যও কেন্দ্রীয় সাব প্ল্যানের দাবি তুলল সিপিআই। যে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত কয়েক বছরে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক অনেকটাই নিজের দিকে টেনে নিতে পেরেছেন, সেই রাজ্যকেই এমন বৈঠকের জন্য বেছে নেওয়া যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে বাম সূত্রের ব্যাখ্যা। এবং এই বৈঠকের শেষেই সিপিআই নেতৃত্ব মেনে নিচ্ছেন, জঙ্গিপুর লোকসভা উপনির্বাচনে বিজেপি-র চমকপ্রদ উত্থান তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
সাচার কমিটি ও রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশনের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে মূলত মুসলিমদের করুণ আর্থ-সামাজিক অবস্থার কথা আলোচনায় এসেছিল সিপিআইয়ের সংখ্যালঘু বিভাগের বৈঠকে। সেই সূত্রেই দলের সাধারণ সম্পাদক সুধাকর রেড্ডি রবিবার বলেছেন, তফসিলি জাতি-উপজাতির মতো মুসলিমদের জন্যও কেন্দ্রীয় সরকারের সাব প্ল্যান চালু করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন। কলকাতায় শনি ও রবিবার যখন সিপিআইয়ের এই বৈঠক হচ্ছে, একই সময়ে দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও উঠেছে সংখ্যালঘুদের হয়রানির প্রসঙ্গ। সন্ত্রাসবাদ রুখতে তদন্তের নামে পক্ষপাত বন্ধের দাবি জানিয়েছে সিপিএম-ও। রেড্ডি বলেন, “সব সম্প্রদায়ের ন্যায্য দাবির পাশে দাঁড়ানো রাজনৈতিক দল হিসাবে আমাদের কর্তব্য।”
সিপিআইয়ের বৈঠকে উঠেছে জঙ্গিপুরের প্রসঙ্গও। দলের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, রাজ্যে এমন সব পদক্ষেপ হচ্ছে, যার ফায়দা তোলার সুযোগ বিজেপি পেয়ে যাচ্ছে। যার বিপরীতে আবার কিছু সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ময়দানে নেমেছে। এই পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গে ছিল না।
তাঁরা বিষয়টিকে কী ভাবে দেখছেন? জবাবে রেড্ডি বলেন, “বিজেপি-র বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে ভাল ইঙ্গিত নয়। তবে জঙ্গিপুরে তৃণমূলের একাংশ বিজেপি-কে সমর্থন জুগিয়েছে বলেই মনে হয়।” একই সঙ্গে রেড্ডির বক্তব্য, “খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে জঙ্গিপুরে বামফ্রন্ট লড়াই করেছে। কংগ্রেসের জনবিরোধী নীতিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন।” সিপিআই জাতীয় পরিষদের সম্পাদক শামিম ফইজি-র বক্তব্য, “মমতা সংখ্যালঘুদের বন্ধু নন! খুব তাড়াতাড়িই ওঁকে বিজেপি-র দিকে ঝুঁকতে দেখবেন!”
সংখ্যালঘু এবং বিজেপি জোড়া উদ্বেগ মোকাবিলার পথ খুঁজছে বামেরা। |