দুঃস্থদের দেওয়া হবে ছাগল, বলদ
জঙ্গলমহলে প্রাণিপালনে গুরুত্ব রাজ্য সরকারের
মাওবাদী উপদ্রুত জঙ্গলমহলের তিনটি জেলাতে প্রাণিপালনে জোর দিল সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা (আরকেভিওয়াই) ও ন্যাশনাল মিশন ফর প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট প্রকল্পে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল গত আর্থিক বছরেই। যদিও কাজ শুরু করতে কিছুটা দেরি করে প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ। চলতি বছরের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর বাণেশ্বর চক্রবর্তী বলেন, “ছাগল কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা দেখা দেওয়ায় ছাগল পালনের কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। বাকি ক্ষেত্রে প্রকল্পের কাজ আগেই শুরু হয়েছে।”
সাধারণ দরিদ্র মানুষ যাতে প্রাণিপালন করে রোজগার করতে পারেন সে জন্য তাঁদের নানা ভাবে সাহায্য করে সরকার। কখনও গরু, ছাগল বা মুরগি কিনে দিয়ে, আবার কখনও শুয়োর পালন বা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত গরু পালনে সাহায্য করে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগের মাধ্যমেই এই কাজ করা হয়। গত আর্থিক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া এই তিনটি জেলায় ছাগল ও বলদ পালনে জোর দেয় সরকার। তিন জেলা মিলিয়ে ২৭৪৪ ইউনিট ছাগল ও ৩০৯৫ ইউনিট বলদ বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ১ ইউনিট মানে ১০টি ছাগল। ১০টি ছাগলের মধ্যে ৯টি স্ত্রী ছাগল ও ১টি পুরুষ ছাগল থাকার কথা। ইউনিট পিছু অর্থ বরাদ্দ করা হয় ১৬ হাজার ৬০০ টাকা। কী ভাবে ছাগল কিনতে হবে তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়। ৬-৮ মাসের ছাগল কিনতে হবে। পুরুষ ছাগলের ক্ষেত্রে ওজন হবে ৬-৮ কেজি ও স্ত্রী ছাগলের ওজন হবে ৫-৭ কেজি। ব্লক প্রাণিসম্পদ আধিকারিককে চেয়ারম্যান করে একটি কমিটিও তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্য দিকে বলদের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি ২টি বলদ থাকবে। যে বলদ দিয়ে চাষ করানো যাবে। ৯০ কেজি ওজনের ১০-১২ মাসের বলদ কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রেও একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারনে এই কাজগুলি করা যায়নি বলে অভিযোগ।
এতদিন পরে ফের এই প্রকল্প নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই যাতে প্রতিটি জায়গায় ছাগল ও বলদ কিনে দেওয়া যায় তার জন্য পদক্ষেপ করা হবে। ছাগল দেওয়া হবে বিনপুর-১ ও জামবনি ব্লকে। বলদ দেওয়া হবে গোপীবল্লভপুর-১, ২, নয়াগ্রাম, বিনপুর-১ ব্লকে। বিপিএল তালিকাভুক্ত, স্ব-সয়াহক দল, ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ উপভোক্তাদের এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। ৯টি স্ত্রী ও ১টি পুরুষ ছাগল দেওয়া হলে দেড় দু’বছরেই ছাগলের সংখ্যা অনেকটা বেড়ে যাবে। আর দু’টি বলদ পেলে লাঙল চালানো, মাঠের ফসল বহনের কাজে লাগবে। ফলে খরচ করে ট্রাক্টর বা গাড়ি ভাড়ার প্রয়োজন হবে না। এরই সঙ্গে বিশেষ গো-সম্পদ অভিযান প্রকল্পও শুরু করার কথা ছিল। যে প্রকল্পটি শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। এই প্রকল্পে গ্রামে-গ্রামে গিয়ে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত গাভীর জন্ম দেওয়া হয়। যাতে বেশি করে দুধ উৎপাদন করা সম্ভব। বাছুর হওয়ার পর ৩ বছর পর্যন্ত তার খাওয়া, বিমা, ভ্যাকসিন বা রোগ হলে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে সাহায্য করে প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ। ৩ বছর পর থেকে অবশ্য উপভোক্তাকে নিজেকেই পরিচর্যা করতে হবে। উৎপাদিত দুধ বিক্রি করে সমস্ত টাকাটাই পাবেন উপভোক্তা। মেদিনীপুর সদর, শালবনি, গড়বেতা-২, ঝাড়গ্রাম ও সাঁকরাইল এই ৫টি ব্লকে বিশেষ গো-সম্পদ বিকাশ অভিযানের কাজ চলছে বলে প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ জানিয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্প কার্যকরী করতে এক বছর লেগে গেল কেন, তার জবাব দিতে পারেননি সরকারি আধিকারিকেরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.