ব্যাপারটাকে ‘কে কানেকশন’ বললেও চলে। করিনা আর কোয়েলের কথা হচ্ছে।
দু’জনেরই জন্ম ফিল্ম পরিবারে। দু’জনেই দুই ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির তারকা। দুই কন্যাই জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নিয়েছেন যাঁদের, তাঁরাও ইন্ডাস্ট্রির মানুষ। অভিনেতার পাশাপাশি সইফ আলি খান প্রযোজকও বটে। সেখানেও কোয়েলের হবু স্বামী নিসপাল রানের সঙ্গে তাঁর দারুণ মিল। কোয়েলের বাবা, রঞ্জিত মল্লিক আর করিনার হবু শাশুড়ি শর্মিলা ঠাকুর একসঙ্গে বেশ ক’টি বাংলা ছবিও করেছেন! করিনা বিয়ের পরে ‘দবাং ২’ ছবিতে একটি আইটেম নম্বর শু্যট করবেন বলে ঠিক করেছেন। কোয়েল ঋতুপর্ণ ঘোষের পরের ছবিতে মুখ্য ভূমিকায়। ছবির শু্যটিং আগে শুরু হলেও, শেষ হবে না ফেব্রুয়ারি মাসের আগে। তাই কোয়েল ছবিটা বিয়ের পরেই শেষ করবেন।
এক জন অভিনেত্রীর পক্ষে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কোনও দিনই সহজ নয়। ঠিক কোন সময়টা বিয়ে এবং কেরিয়ারের জন্য সঠিক? কেরিয়ারের শীর্ষে থেকে বিয়ে করা মানেই কি কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়া? নাকি আরও অপেক্ষা করা উচিত? কোয়েল বলছিলেন, “আমার মনে আছে, করিনাকে অনেক বার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ও কখন বিয়ে করছে। আর ওকে প্রত্যেক বারই বলতে শুনেছি, ‘ইট উইল হ্যাপেন’।
আসলে বিয়ের তাগিদটা ভিতর থেকে আসা উচিত। এটাই আমার বিশ্বাস। কাজ আছে আর থাকবেও। তবে শুধুমাত্র কাজের জন্য অন্য সব কিছু থমকে যাবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। ” করিনার বিয়ের খবর শুনে ভীষণ খুশি কোয়েল। “খুব ভাল লাগছে। ওরা দু’জনেই দু’জনকে বহু বছর ধরে চেনে। বিয়ে অনেকটাই ভাগ্যের ব্যাপার। আশা করব দু’জনেই যেন ভাল বন্ধু হয়ে থাকতে পারে।”
করিনা যে ভাবে বিয়ের পরে আইটেম নম্বর শ্যুটিং করবেন, সেটা কি কোনও ভাবে কোয়েলকে প্রভাবিত করছে নিজের কেরিয়ার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে? “করিনা ভীষণ বুদ্ধিমতী আর আমার বিশ্বাস ও ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তবে ওর সিদ্ধান্তটা সম্পূর্ণ ওর নিজের। আমি এটুকু জানি যে, রানে ভীষণ সাপোর্টিভ আমার কেরিয়ার নিয়ে।” তা হলে বিয়ের পরেও কাজ চালিয়ে যাবেন? “বিয়ে হওয়া মানে এই নয়, যে আমি একটা ছবির শু্যটিং মাঝপথে ছেড়ে দেব। আমি শু্যটিং নিশ্চয়ই শেষ করব। ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি ছাড়াও অন্যান্য ইন্টারেস্টিং অফার আছে। সেগুলো নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিয়ে ভাবব।”
এখন কোয়েলের বিয়ের বাজার চলছে। “মা বিয়ের বাজারটা দেখছেন। আমি পুজোর বাজারটা। এই দু’টো ক্ল্যাশ করছে না,” কোয়েল বললেন। “আমার ঠাকুমার কিছু জরির ব্লাউজ আমার কাছে আছে। ভীষণ সুন্দর দেখতে। সিল্কটা কেমন পিঁজে গেছে। যদি ওটা কোনও ভাবে ঠিক করা যায়, তা হলে খুব ভাল লাগবে আমার।”
করিনার বিয়ের পোশাক নিয়ে আবার সামান্য জলঘোলা শুরু হয়েছে দুই ডিজাইনারের মধ্যে। এক দিকে ডিজাইনার রিতু কুমার বলছেন যে, তাঁর কারিগরেরা নাকি শর্মিলা ঠাকুরের লেহেঙ্গাটা মেরামত করেছেন বেবোর জন্য। অন্য দিকে মণীশ মলহোত্র বলছেন যে, বেবোর বিয়ের সব পোশাক ওঁর করা।
আর সইফ? ডিজাইনার রাঘবেন্দ্র রাঠৌর বলছেন, “আমরা প্রায় দেড় বছর ধরে সইফের জন্য ডিজাইন করছি। তিন-চার মাস আগে সইফ আমাকে ডেকে বলে ওর বিয়ের জন্য ডিজাইন করতে।” বেশির ভাগই হ্যান্ডলুম আর ব্রোকেড ফ্যাব্রিক ব্যবহার করেছি। তার সঙ্গে সাদা জোধপুরি ব্রোচ। বোতামগুলো পটৌডি পরিবারের। “সাতখানা বোতামের মধ্যে রয়েছে জ্যুয়েলস। সইফের কুর্তার কাটগুলো ভীষণ স্লিক। কোনও পোশাকেই কোনও এমব্রয়ডারি নেই।” সইফের প্রথম পক্ষের ছেলেমেয়ে, ইব্রাহিম আর সারাও বিয়েতে আসবে। ইব্রাহিমের জন্যও একটি আচকান তৈরি করেছেন রাঘবেন্দ্র, ঠিক পটৌডি ঘরানার স্টাইলে।
সব মিলিয়ে আট-ন’টা লুক তৈরি হয়েছে। একটা যেমন বেসিক রাজস্থানি ক্লাসিক লুক। এ ছাড়া আছে ভেলভেট সাদা-কালো বন্ধগলা। বেশ কয়েকটা ওয়েস্ট কোটও রয়েছে। “আমরা ইন্টারেস্টিং পকেট স্কার্ভসও ডিজাইন করেছি। লাল রংয়ের স্কার্ফগুলো ভীষণ ক্লাসিক। একটা মেরুন রংয়ের বন্ধগলা বানিয়েছি। পাগড়ি রয়েছে সঙ্গে।”
আর ধুতি? “না, স্কেচের সময় কোনও ধুতি ছিল না,” রাঘবেন্দ্র বলেন। |