পুজোর চার দিন মূক ও বধির আবাসিকদের উৎসবে সামিল করাতে উদ্যোগী রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির আবাসিক হোম ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি, তাঁরা বৈঠক করে পুজোর দিনে আবাসিকদের শহরের বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরিয়ে দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। হোম চত্বরে বিশেষ খাওয়াদাওয়ার আয়োজনের ব্যবস্থাও করবেন। বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হোমের তরফে আবাসিকদের নতুন পোশাক, জুতো ও প্রসাধনী সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। হোমের অধ্যক্ষ পার্থসারথি দাস বলেন, “মূক ও বধির আবাসিকরা সারা বছর হোমের চার দেওয়ালে বন্দি থেকে হাঁফিয়ে ওঠে। একঘেয়েমি কাটাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ওদের পুজোর আনন্দে সামিল করতে এ উদ্যোগ। জেলা পুলিশের সহযোগিতায় তা নেওয়া সম্ভব হয়েছে।” পরিকাঠামো না থাকার কারণে সম্প্রতি, মূক ও বধির কিশোরদের সঙ্গে একই হস্টেলে শিশু শ্রমিকদের রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন হোম কর্তৃপক্ষ। এর পরে মূক ও বধির আবাসিকদের উপরে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ ওঠে শিশু শ্রমিকদের নামে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রশাসনের নির্দেশে শিশু শ্রমিকদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পরে মূক বধির আবাসিকদের যেন হোমে থাকতে অসুবিধা না-হয় এবং ওরা যেন সব সময় হাসি খুশিতে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হোম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার। অধ্যক্ষ এ প্রসঙ্গে বলেন, “মূক ও বধির কিশোর কিশোরীরা সাধারণ ছেলে মেয়েদের মতো সমাজের অংশ। তাই ওদের ভাল রাখার পাশাপাশি আনন্দে সামিল করাটাও আমাদের কর্তব্য।” হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, সমাজকল্যাণ দফতরের অধীন সুর্যোদয় হোম ও বিদ্যালয়ে ৩ থেকে ১৮ বছর বয়সের মোট ৬৫ জন আবাসিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে কিশোরী ২৯ জন। হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশের দেওয়া বাসে চাপিয়ে আবাসিকদের দিনভর শহরের বিভিন্ন মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হবে। চার দিন তিন বেলা হোম চত্বরে আবাসিকদের পাতপেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। মেনুতে লুচি, দই, মিষ্টি, পায়েস, পোলাও, ফ্রায়েড রাইস, ইলিশ মাছ, মাংস, চাটনি থাকবে। পার্থসারথিবাবু বলেন, “আপাতত ঠিক হয়েছে হোমের নিজস্ব সরকারি তহবিল থেকেই সমস্ত আয়োজন করা হবে।” |