|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
মুদ্রণ যেন বুক অব ডার্কনেস |
বইপোকা |
ভ্রমণের ন্যায় আলোকময় এক অভিজ্ঞতার সহিত অন্ধকার, অস্পষ্টতা এবং অযত্ন কী প্রকারে জড়াইয়া রাখিতে হয় তাহা এত কাল দেখাইয়া আসিয়াছে অধিকাংশ বঙ্গীয় ভ্রমণ-সহায়ক গ্রন্থ। কতিপয় ক্ষুদ্র পত্রিকার কথা বাদ দিলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভ্রমণ-রচনার সহিত যে সকল চিত্র মুদ্রিত হয় তাহার মুদ্রণমান হ্যান্ডবিল অপেক্ষা উন্নত নহে। ইহা বঙ্গজনের গা-সওয়া হইয়া গিয়াছিল, বৎসরের পরে বৎসর পূজাবকাশের পূর্বে রেলের টিকিটের ঘর্মাক্ত লাইনের ন্যায়, ধূলিমলিন কামরার ছারপোকাগুলির ন্যায়। কিন্তু সাধারণ ভাবে ইংরাজি গ্রন্থে, বিশেষ করিয়া ভ্রমণ-সহায়ক গ্রন্থ এবং পত্রিকাগুলিতে চিত্রমুদ্রণের মান বরাবরই ঈর্ষণীয় হইয়া থাকে। এই বার সেই সুনামে, কিঞ্চিদধিক কালি ঢালিয়া দিয়া যেন ‘বুক অব ডার্কনেস’ হইয়া উঠিয়াছে ডায়ানা এল এক-এর বেনারস: সিটি অব লাইট(পেঙ্গুইন বুকস)-এর বর্তমান প্রাপ্তব্য সংস্করণটি। ইহা ঠিক ভ্রমণ-সহায়ক গ্রন্থ নহে, বরং বারাণসীর অন্তরে পুরাণ-কিংবদন্তি ঘেরা জীবনের যে উদ্যাপন তাহার এক তন্নিষ্ঠ বিবরণ। প্রায় দুই দশক পূর্বে প্রকাশিত গ্রন্থটি বারাণসীকে অনুভব করিতে চাওয়া মানুষজনের পক্ষে অপরিহার্য। কিঞ্চিদধিক ষাটটি চিত্র আছে এই গ্রন্থে, সবকয়টিই মেঘাক্রান্ত বৈকালের ন্যায় মুখ কালি করিয়া পাতায় বসিয়া আছে। কষ্ট হয়, একুশ শতকের এই আধুনিক প্রযুক্তির কালেও মুদ্রণের কোন মোক্ষের পথে চলিয়াছে আমাদের চিত্রমুদ্রণ! অথচ অতীতে চিত্রমুদ্রণে এই বঙ্গেও সুনামে ঘাটতি পড়ে নাই। উপেন্দ্রকিশোরের সন্দেশ, বিশ্বভারতী পত্রিকার কথা মনে পড়িবে অবহিত জনের। প্রযুক্তি অদ্য উন্নততর। কিন্তু হায়, প্রযত্নের মনটি ত উন্নততর হইল না। |
|
|
|
|
|