|
|
|
|
|
স্টার? সে তো আলমারিতেই থাকে!
ওয়ার্ড্রোবে কনট্রাস্ট পোশাক, পাতিয়ালা, স্প্যাগেটি, জোধপুরি আছে? তাই দিয়েই
বলিউড-টলিউডের তারকা হয়ে উঠুন। স্টাইলিং বিশেষজ্ঞ সন্দীপ ঘোষাল (স্যান্ডি) |
|
|
যাঁরা রীতিমত ফ্যাশনদুরস্ত, অনেক সময়ই তাঁদের দেখা যায় বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের স্টাইল কপি করার চেষ্টা করতে। ভাবছেন, এ একেবারেই হালের আমদানি? উঁহু, ভুল ধারণা। অনেক কাল আগে থেকেই, মানে যখন অন্তঃপুরে টেলিভিশন এমন হইহই করে ঢুকে পড়েনি, তখন থেকেই একটু একটু করে আইকনদের নকল করার চেষ্টা চলছিল। হতে পারেন তিনি কোনও বিশ্ববিখ্যাত লেখক, বিখ্যাত বাগ্মী, এমনকী গল্পের চরিত্রও। তাঁদের ব্যক্তিত্ব, কথা বলার ভঙ্গির পাশাপাশি পোশাকের ধরনও নিজের মধ্যে তুলে আনার চেষ্টা করতেন গুণমুগ্ধরা। যেমন ঠাকুরবাড়ির পোশাকের ধাঁচটি সে কালে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। ধীরে ধীরে নকলনবিশরা বাকি বিষয় দ্রুত ভুলে পোশাকেই মনপ্রাণ সঁপে দেন। সেই শুরু। তার পর উত্তম-সুচিত্রা-অমিতাভ থেকে আজকের সলমন-হৃতিক-ক্যাটরিনা-জিৎ-দেব-কোয়েল স্টাইল স্টেটমেন্ট কপি করতে টলি-বলি একাকার। তবে নায়ক-নায়িকাকে নকল মানেই কি আমজনতার পকেটে জোরদার ধাক্কা? সব সময় তা নয় কিন্তু। সামান্য অ্যারেঞ্জমেন্ট, আলমারি ঘেঁটে ক’খানা পুরনো জিনিসপত্র, আর কিছু অন্য রকম আইডিয়া। ব্যস, অন্তত পোশাক-অ্যাকসেসরির দিক থেকে তফাতটা প্রথম-দর্শনে বোঝাই যাবে না। নিজেকে এ বার কপি-পেস্ট করে দিন টিভি পর্দার ভিতরে।
কোয়েলের পাগলু লুক
উজ্জ্বল রঙের স্প্যাগেটি বা গেঞ্জি টপ, পুরনো বেলুন স্কার্ট, দু’টো বেনারসি বা পুরনো কাঞ্জিভরম শাড়ি, একটা শ্রাগ। প্রথমে গেঞ্জি টপের নীচে মায়ের বেনারসির কনট্রাস্ট পাড় বসিয়ে নিতে হবে। শ্রাগ-এর দু’দিকে সরু সোনালি দড়ি সেলাই করে নিন। বেনারসি কাপড়ের বল বানিয়ে দড়ির গোড়ায় লাগিয়ে নিন। এ বার পুরনো বেলুন স্কার্টটির হাঁটু থেকে সোজা ভাবে কাটুন। না মুড়ে সোজা সেলাই দিন। এ বার বেনারসি বর্ডারটি ঠিক সেলাই করা অংশের ওপর লাগিয়ে দিন। রেডি হয়ে গেল কোয়েলের পাগলু লুক। হাতে থাকবে প্রচুর কাচের ম্যাচিং চুড়ি, কানে ছোট্ট সোনার দুল।
|
|
জিৎ-এর আওয়ারা লুক
বাড়িতে ভেতরে পরার রঙিন গেঞ্জিকে গলা থেকে মাঝামাঝি তিন ইঞ্চি কাটুন। পুরনো উইন্টার জ্যাকেটের হাতা কেটে নিন। পুরনো ডেনিমের হাঁটুর ওপরে ও নীচে তিনটে করে ফ্ল্যাশ করুন, না ছিঁড়ে এ বার ধীরে ধীরে সুতো বার করুন, এ বার চেন দিয়ে প্যান্টের বাঁ দিকে পেছনের দিকে সেলাই করুন। এ বার পুরনো জওহর কোটকে মাপ অনুযায়ী পিছনে দাগ দিয়ে সেলাই করুন, যাতে ফিট হয়ে বসে। বন্ধ গলার নীচ থেকে একটু ছড়িয়ে মুড়ে দিন। জোধপুরি দিয়ে পরুন। সঙ্গে আওয়ারা সানগ্লাস পরতে ভুলবেন না।
আগে থেকে প্ল্যান করুন
পুজোর সময় সাজগোজের জন্য কতগুলি বিশেষ কারণ থাকে। অনেকে বহু আগে থেকে পরিকল্পনা করেন। সেটি খুব ভাল। যারা সময় পান না, তাঁরা বলেন, হঠাৎই পুজো এসে গেল, এখন কী পরব? কী সাজব? ভেবে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাতেই অর্ধেক সময় চলে যায়, তখন পুজোর দিনগুলো মন খুঁতখুঁত নিয়ে থাকতে হয়। সুতরাং একটু আগে থেকে প্ল্যান করলে ভাল। কনট্রাস্ট চির দিনই তুরুপের তাস, ঠিক মতো কনট্রাস্ট ব্যবহার করতে পারলে সব থেকে সুন্দর দেখাবে আপনাকে। যেমন একটি অত্যন্ত সাধারণ সূতির শাড়ির সঙ্গে ব্রোকেড ব্লাউজ খুব মানানসই হবে, কিন্তু রং খেয়াল রাখতে হবে। লাল রঙের সঙ্গে ইন্ডিগো ব্লু, পিঠের দিকে স্ট্র্যাপ হবে এক থেকে দেড় ইঞ্চি, হাতাটি হবে চার ইঞ্চি, কাঁধ ডিপ বা ডিপ ইউ হলে লটকান দিয়ে বেঁধে নিন। লটকানটিকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করুন। লটকান এখন খুবই সহজলভ্য। ঝোলার দুল হলে হার বাদ দিন। শাড়ি পরলেই একগাদা চুড়ি পরতে হবে, তার কোনও মানে নেই, বড় আংটি পরুন। শাড়ির সঙ্গে ফিটেড কুর্তি পরতে পারেন, সলিড কালার কুর্তির সঙ্গে ভেজিটেবল ডাই শাড়ি খুব ভাল লাগে। হাতে খুব সুন্দর ঘড়ি পরুন।
লং স্কার্ট ভীষণ ভাবে ইন। লং স্কার্টের সঙ্গে যদি স্কার্ফ ব্যবহার করেন এবং কনট্রাস্ট ব্যাপারটিকে মাথায় রেখে পুরো পোশাকটি পরিকল্পনা করেন, তবে এ বার পুজোর শিরোপা আপনার। হলুদ স্কার্ট, ম্যাজেন্টা টপ, সবুজ ওড়না, আবার লাল স্কার্ট, সাদা টপ, ইন্ডিগো ব্লু ওড়না, কানে ঝোলা দুল, হাতে ম্যাচিং নয়, এমন চুড়ি, অল্প মেক-আপ খুব ভাল লাগে। পাতিয়ালা এ বার সব থেকে হিট, একটু সময় নিয়ে অনেক কাপড় দিয়ে পাঞ্জাবি দর্জির কাছ থেকে পাতিয়ালা তৈরি করালে ভাল। পাতিয়ালার সঙ্গে লং টি শার্ট বা লং শার্ট পরতে পারেন। পাতিয়ালা ভাল মলমল বা ক্রেপের হলে খুব ভাল, এই পাতিয়ালাটি একটি ব্রোকেড কুর্তির সঙ্গে সান্ধ্য পোশাক হিসাবে অসাধারণ হয়ে উঠবে। টিন এজাররা একটি হ্যান্ডি ব্যাগ অথবা ঝোলা নিতে পারেন পাতিয়ালার সঙ্গে।
সাজের মধ্যে দু’টি জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে। স্বাচ্ছন্দ্যবোধ এবং সাধারণ লুক। আপনি প্রচুর সাজগোজ করলেন কিন্তু যখন বের হলেন তখন আড়ষ্ট থাকলেন বা মন মেক-আপ আর সাজের মধ্যেই আটকে থাকল, সেটি যেন না হয়। সর্বদা খুঁতখুঁত করলে মুখে স্পষ্ট ছায়া দেখা যায়। চুল না খুলে যায়, কাঁধ থেকে ব্লাউজ না নেমে যায়, শাড়ির প্লিট যেন ঠিক থাকে, এ রকম চিন্তা করবেন না। যারা সারা বছর কম সাজগোজ করেন বা সাধারণ পোশাক পরেন, তাঁরা ভিড়ের থেকে আলাদা হতে গিয়ে নিজের ব্যক্তিত্বকে হারিয়ে ফেলবেন না।
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|