শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরাও সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনতে চাইছেন না। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট-১ এ বিডিও দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে এমনই অভিযোগ করলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সমাদ্দার। একই সঙ্গে তিনি জানান, এরকম চলবে না। সাধারণ মানুষের কথা না শুনলে বিডিওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হবে।
এ দিন বিকেলে বৃষ্টি মাথায় করেই দলীয় পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে দলে দলে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা বসিরহাট-১ এর বিডিও অফিসের সামনে জড়ো হন। মহিলাদের নিরাপত্তা ও সামাজির সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা, বিভিন্ন জায়গায় কংগ্রেস কর্মীদের উপরে তৃণমূলের আক্রমণ নিয়ে সরব হন তাঁরা।
বিলবই হাতে মহিলারা ঘুরছেন প্রতিবেশির বাড়ি থেকে ইটভাটা। না, এটা কোনও কল্পনার দৃশ্য নয়। ইছামতী নদীর ধারে বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগরের প্রত্যন্ত গ্রাম মালোপাড়ায় এখন এটাই ছবি। মহিলাদের উদ্যোগে গত সাত বছর ধরে এখানে পুজোর আয়োজন হয়ে চলেছে।
পুজোয় তথাকথিত মণ্ডপের জাঁকজমক নেই। সকলে মিলে একসঙ্গে মিশে যাওয়াটাই এই পুজোর মূলধন। ইছামতীর বন্যার কবলে পড়া গ্রামবাসীদের জন্য তৈরি হওয়া ‘ফ্লাড সেন্টার’ই পুজোর ক’দিন মণ্ডপে পরিণত হয়। রোজকার বয়ে চলা সংসারের একঘেয়েমি কাটিয়ে পুজোর দিনগুলিতে আনন্দে মেতে ওঠেন সবাই। আগে এই গ্রামের পুরুষেরাই পুজোর আয়োজন করতেন। কিন্তু নানা সমস্যায় সেই পুজো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সাত বছর আগে দেবী বন্দনায় এগিয়ে আসেন মহিলারা। গড়ে ওঠে ‘মালোপাড়া মা-মেয়ে সর্বজনীন দুর্গাপুজা কমিটি।”
পুজো আসতে আর বেশিদিন বাকি নেই। স্কুল-কলেজের ছাত্রী থেকে শিক্ষিকা, গৃহবধূ গ্রামের সব মহিলাই এখন ব্যস্ত পুজোর কাজে। তবে পুজোর জন্য ঘরের কাজে কোনও গাফিলতি নেই তাঁদের। ঘরকন্নার কাজ শেষ হওয়ার পরই মহিলারা বেরিয়ে পড়ছেন চাঁদা তোলার কাজে। প্রথম দিকে বাড়ির কর্তারা আপত্তি করলেও এখন সব স্বাভাবিক। এ বছর পুজোর বাজেট ৪০ হাজার টাকা। পুজো কমিটির সম্পাদিকা আন্নাকালি গাইন বলেন, “আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। স্বপ্ন দেখাতেও ভালোবাসি। তাই একদিন আমরা সবাই ঠিক করি, অন্য মণ্ডপে না গিয়ে নিজেরাই পুজো করব।”
তবে এই পুজোয় একেবারে ব্রাত্য নন পুরুষেরা। পুজোর কিছু কাজে তাঁদের ভূমিকাও রয়েছে। যেমন, মণ্ডপে প্রতিমা নিয়ে আসা এবং পুজো শেষ হওয়ার পরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া
যে জায়গায় পুজো হয় তার পাশেই রয়েছে বহু প্রাচীন শিবমন্দির। প্রতি বছর চড়কের সময় সেখানে বসে জমজমাট মেলা। শিব-পার্বতীর এই ‘আপন দেশে’ নারীশক্তির হাতে নারীশক্তির বন্দনা পুজোকে অন্য মাত্রা দেয় বই কী! |