রাজ্যকে সুপারিশ কমিশনের
তিন পুলিশের বেতন কেটে ধর্ষণে ক্ষতিপূরণ
র্ষণের শিকার এক নাবালিকাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য তিন পুলিশ অফিসারের বেতন থেকে টাকা কেটে নিতে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠাল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।
২০১০ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় ধর্ষিত হয় এক নাবালিকা। কমিশন সেই নাবালিকাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে। তার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা কেটে নিতে হবে জেলার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেতন থেকে। কারণ ওই ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। পাথরপ্রতিমা থানার তৎকালীন এসআই গোপাল বিশ্বাস এবং এএসআই হিরণ্ময় চক্রবর্তীর বেতন থেকেও ২০ হাজার টাকা করে কেটে মেয়েটিকে দিতে বলেছে কমিশন। বাকি টাকা দেবে রাজ্য সরকার।
এখানেই শেষ নয়। রণেনবাবু-সহ তিন অফিসারের বিরুদ্ধেই বিগাভীয় তদন্ত শুরু করার সুপারিশ করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। গোপালবাবু ও হিরণ্ময়বাবুকে অবিলম্বে সাসপেন্ডও করতে বলা হয়েছে। কমিশনের যুগ্মসচিব সুজয়কুমার হালদার জানান, দু’মাসের মধ্যে এই সব সুপারিশ রূপায়ণ করে কমিশনকে জানানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ওই নাবালিকার বাবা কমিশনে জানান, পাথরপ্রতিমা থানার বানশ্যামনগর গ্রামে তাঁদের বাড়ি। ২০১০ সালের ১০ এপ্রিল রাতে তাঁর মেয়ে আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিল। বিদেশ গোলে ও চন্দন গোলে নামে দুই যুবক তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি জ্ঞান হারায়। জ্ঞান ফেরার পরে মোটরসাইকেলে করে তাকে বাড়ির কাছে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার কথা কাউকে বললে ফল মারাত্মক হবে বলে হুমকিও দেয় তারা। পরের দিন মেয়েকে নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তৎকালীন ডিউটি অফিসার হিরণ্ময়বাবু কেবল একটি জেনারেল ডায়েরি করেন এবং কয়েকটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেন। ১২ এপ্রিল মেয়েকে নিয়ে তাঁরা আবার থানায় যান। হিরণ্ময়বাবু আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন। তৎকালীন এসআই গোপালবাবু তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হাজতে ঢুকিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। শেষ পর্যন্ত তাঁরা গোটা বিষয়টি রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে জানান।
অভিযোগ পাওয়ার পরে কমিশন সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু ওই অফিসারদের বক্তব্যে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কমিশনের চেয়ারম্যান-সহ ফুল বেঞ্চ ওই জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করে কমিশনে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। রণেনবাবু সেই দায়িত্ব পান। কিন্তু তাঁর তদন্ত রিপোর্টে কমিশন সন্তুষ্ট হতে পারেনি। ওই রিপোর্টে ধর্ষণের অভিযোগ সত্য বলে জানানো হলেও গোপালবাবু ও হিরণ্ময়বাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে কোনও উল্লেখ নেই। তা ছাড়া রণেনবাবু ধর্ষিতার সঙ্গেও কথা বলেননি। ওই রিপোর্ট পাওয়ার কমিশন ৫ অক্টোবর দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৎকালীন অতিরিক্ত সুপার (গ্রামীণ) রণেনবাবু এবং অন্য দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে রাজ্য সরকারের কাছে। কারণ, কমিশন মনে করে, রণেনবাবু তাঁর দফতরের অফিসারদের আড়াল করে রিপোর্ট দিয়েছেন। ওই দুই পুলিশ অফিসারও ধর্ষিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন এবং তাঁদের হুমকি দিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.