ভেবে দেখার আর্জি মমতাকে
সংস্কার সমর্থনে সওয়াল করবে শিল্পমহল
রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থেই সংস্কারকে কেন সমর্থন করা জরুরি, এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তা সরাসরি বোঝাতে চান শিল্পমহলের প্রতিনিধিরা। সংস্কার প্রশ্নে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধও করতে চান তাঁরা। সংস্কারের প্রশ্নে কেন্দ্রের একাধিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করেই ইউপিএ সরকার ছেড়েছে তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও মুখ্যমন্ত্রীকে অন্তত আরও এক বার সংস্কার সমর্থনের আর্জি জানাতে চান বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিনান্সিয়াল জার্নালিস্টস ক্লাব এবং অ্যাসোচ্যাম আয়োজিত এক আলোচনাসভার শেষে তাঁদের এই মনোভাবের কথা জানান অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত। তিনি বলেন, “খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি (এফডিআই) এলে পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ ভাবে উপকৃত হবে। এফডিআইয়ের ৫০ শতাংশই লগ্নি করা হবে পরিকাঠামো উন্নয়নে। এর ফলে রাজ্যে আরও হিমঘর স্থাপন বা গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করার বড় সুযোগ রাজ্যের হাতে আসবে। তৈরি হবে বহু কর্মসংস্থান।” পরে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করে রাওয়াত জানান, এতে সাধারণ কৃষক এবং ক্রেতা দু’পক্ষেরই সুবিধা হবে। রাওয়াত জানান, সংস্কার প্রক্রিয়াকে সমর্থনের আর্জি জানিয়ে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই চিঠি দিচ্ছেন তাঁরা। রাওয়াত জানান, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন। আশা করছেন, তা পেয়েও যাবেন।
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বনিকসভার এই মনোভাব প্রসঙ্গে বলেন, “অ্যাসোচ্যাম তো প্রধানমন্ত্রীর বার্তাবহ হয়েই রাজ্যে এসেছে। এ রাজ্যে ওই বণিকসভার তেমন কোনও অস্তিত্ব নেই। তা ছাড়া, বণিকসভা তো আর বিনিয়োগ করবে না।” প্রসঙ্গত রাজ্যের দু’টি জেলা, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর চব্বিশ পরগনায় কৃষি ভিত্তিক গুচ্ছশিল্প গড়তে চায় অ্যাসোচ্যাম। জানুয়ারিতে কাজ শুরু করতে চায় তারা। এ ব্যাপারে এখন রাজ্য সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় তারা।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ গত মাসে দ্বিতীয় দফার সংস্কার পর্বের কথা ঘোষণা করার পরে প্রত্যাশিত ভাবেই তাকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহল। এ নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক বিরোধিতার মধ্যেও কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েই মুখ খুলেছে সিআইআই, ফিকি বা অ্যাসোচ্যামের মতো বণিকসভা। রাজনৈতিক বিরোধিতা দূরে সরিয়ে দেশের স্বার্থে সংস্কার প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানানোর জন্য বিরোধী দলগুলির কাছে একাধিক বার আর্জিও জানিয়েছে শিল্পমহল। তাদের বক্তব্য, কী করলে দেশের ভাল হবে, সেটাই সব সময় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। সিআইআই, ফিকি-সহ বিভিন্ন বণিকসভার বক্তব্য, দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের স্বার্থেই সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, এর আগে সংস্কারের রাস্তা খুলতে শুধু কেন্দ্রীয় সরকার নয়, তাদের শরিক ও বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গেও আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হয়েছে শিল্পমহল। মে মাসেই বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন ২২ জন শিল্পকর্তা। সংস্কার ও দেশের আর্থিক বৃদ্ধির মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বোঝাতে গডকড়ীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মাইক্রোসফট্, ইন্টেল ইন্ডিয়া, ইনফোসিস, ওর্যাক্ল, হিউলেট প্যাকার্ড, এ টি অ্যান্ড টি কমিউনিকেশনস, অ্যাকসেনচার-এর মতো সংস্থার শীর্ষ কর্তারা। সঙ্গে ছিল ন্যাসকম, ইন্ডিয়ান সেলুলার অ্যাসোসিয়েশন, ফিকি ও অ্যামচ্যামের মতো বণিক সংগঠনও।
গত কয়েক বছর ধরে ভারতে সংস্কারের গতি কিছুটা রুদ্ধ হয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিক মহলেও সংশয় তৈরি হয়েছিল। স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর্স বা মুডিজ-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার মূল্যায়নে সেই আশঙ্কার ছাপও পড়ে। কিন্ত তার পরেও সংস্কারের পথে পা বাড়াতে গিয়ে রাজনৈতিক বাধার কারণেই বারবার আটকে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টায় ফের সচল হয়েছে থমকে থাকা সংস্কারের রথ। বণিকমহলের বক্তব্য, রাজনৈতিক বাধায় তার গতি যাতে রুদ্ধ না হয়, সে জন্য জোরকদমে চেষ্টা চালাবে তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.