প্রশ্ন: আপনার গলা শুনে মনে হচ্ছে যেন দীর্ঘ হাজতবাসের পরে এখনই বার হলেন।
মনোজ: (স্বস্তির হাসি) কতকটা তাই। দারুণ লাগছে। মনেই হচ্ছে না এটা যে প্র্যাক্টিস ম্যাচ ছিল।
প্র: আজকের দিনটাকে কী বলা হবে? দিনের পর দিন ডাগআউটে কাটিয়ে হঠাৎ মুক্তির আনন্দ? ইংরেজি কাগজের সাংবাদিক হলে মনোজ আপনাকে নির্ঘাৎ জিজ্ঞেস করত, ‘ডেজ অ্যান্ড ডেজ অ্যাট দ্য ডাগআউটের পরে অবশেষে মনোজ’স ডে আউট?’ তাই না?
মনোজ: ঠিক তাই। আজ মনে হচ্ছিল যেন ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছি। প্রথম যখন ছোটবেলায় কম্পিটিটিভ ম্যাচ খেলতে শুরু করি, তখন একটা অদ্ভূত আনন্দ পেতাম। বহু বছর পরে আবার সেই ছোটবেলার আনন্দটা ফেরত পেলাম। ম্যাচ খেলা কী তা-ই প্রায় ভুলতে বসেছিলাম। দুর্দান্ত লাগছে।
প্র: আপনার শেষ ইনিংস তো সেই ক্যান্ডিতে?
মনোজ: হ্যাঁ, সেই ক্যান্ডিতে করা ৬৫। দু’মাস আগে। তারপর তো আর খেলায়ইনি। আর আপনি তো জানেন ইন্ডিয়ান টিমের নেটে যারা এগারোতে নেই তাদের কোনও দাম নেই। বাকিরা বলতে গেলে নেটে সে ভাবে ব্যাটই পায় না। সে দিক থেকে এই ইনিংসটা প্র্যাক্টিস ম্যাচ হয়েও আমার কাছে ভীষণ স্পেশ্যাল।
প্র: আপনাকে কত নম্বরে পাঠানো হয়েছিল?
মনোজ: তিন নম্বর। গম্ভীর তো আমায় কলম্বোতেই বলেছিল যে আমাকে তিন বা চার খেলানোর কথা ভাবছে।
প্র: এখনও কি আপনি পচেস্ট্রুমে?
মনোজ: না আমরা এই কিছুক্ষণ আগে টিম কোচে করে জোহানেসবার্গ চলে এসেছি। কালকে জোহানেসবার্গে একটা ম্যাচ খেলব। এখনও ঠিক হয়নি কার সঙ্গে খেলা। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যারা খেলবে তাদের মধ্যেই কেউ হবে।
প্র: গম্ভীর নতুন কিছু বললেন?
মনোজ: না, কলম্বোতে যা বলেছিল তা-ই বলল। |
জো’বার্গের পথে সিংহের খাঁচার সামনে নিজের ছবি টুইট করলেন মনোজ। |
প্র: আর কোচ বেলিস?
মনোজ: কোচ বললেন যে, দেশে বসে উনি আমার কলম্বোর বোলিং দেখেছেন। কথা শুনে মনে হল আমায় বল করাবেন। ভালই হল। আর একটা অপশন বাড়ল।
প্র: আজ বল করেছেন?
মনোজ: আজ এক ওভার করে দশ রান দিয়েছি। একটা ছয় খেলাম। কিন্তু আমি যে দিকে বল করছিলাম সে দিকে বাউন্ডারিটা ছোট ছিল। কালকের ম্যাচে আবার ট্রাই করতে হবে।
প্র: এসআরকে কী বললেন?
মনোজ: ও তো টুইট করেছিল, ‘ভেরি ওয়েল ডান মাই বয়। কিপ গোয়িং।’ খুব ইন্সপায়ার্ড লাগল এসআরকে-র টুইটটা পড়ে। আমি দ্রুত ওটাকে রিটুইট করে দিয়েছি (হাসি)।
প্র: পুজোতে কলকাতা ছেড়ে চলে এলেন। খারাপ লাগছে?
মনোজ: না, আমার জন্য নতুন নয়। এ রকম আরও অনেক বার হয়েছে। তবে পুজোতে থাকতে পারলেই ভাল লাগে। এটা তো আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব।
প্র: গত বছর পুজোয় কী করেছিলেন?
মনোজ: কিছুই না। গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে দু’তিনটে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলাম। পাড়ার পুজোতে ছিলাম। বন্ধুবান্ধব আর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি।
প্র: আনন্দবাজার পাঠকদের জন্য তিনটে সেরা পুজো বেছে দিন না।
মনোজ: আমার কাছে হাওড়া রেলওয়ে কলোনির পুজোটাই শ্রেষ্ঠ। আমি ওখানেই সময় কাটাই।
প্র: ওখানেই ঢাক বাজান?
মনোজ: সে এক-আধ বার চাপাচাপিতে বাজিয়েছি।
প্র: আপনাদের টিম থিম এ বার কী?
মনোজ: এখনও ঠিক হয়নি। সবে তো এক দিন নেট করে ম্যাচ খেলতে নামলাম।
প্র: প্রথম দিনের পর কী মনে হচ্ছে?
মনোজ: মনে হচ্ছে আমায় ভাল খেলতেই হবে। আর প্রথম দিনেই টুর্নামেন্টের জন্য একটা আমেজ পেলাম।
মনোজ: ৩১ বলে ৫১ নট আউট! অনেক দিন পর ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেলাম।
শাহরুখ: চালিয়ে যাও! আশা করব টুর্নামেন্টটা তোমার জন্য ভাল যাবে।
মনোজ: ধন্যবাদ পা-জি!
|
প্র্যাক্টিস ম্যাচে অপরাজিত হাফসেঞ্চুরি
নিজস্ব প্রতিবেদন |
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একটাও ম্যাচ পাননি। সেই মনোজ তিওয়ারি বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর ব্যাটে মোটেও জং ধরে যায়নি। পচেস্ট্রুমে এ দিন স্কটল্যান্ডের সঙ্গে প্র্যাক্টিস ম্যাচ ছিল কেকেআরের। সেখানে ব্যাট করে ৩১ বলে অপরাজিত ৫০ করেন মনোজ। প্রথমে ব্যাট করে কেকেআর। প্রথম দিকে গৌতম গম্ভীর এবং মনবিন্দর বিসলা (২৫ বলে ৪০) ভাল শুরু করেন। পঞ্চম ওভারে গম্ভীর আউট হওয়ায় ক্রিজে আসেন মনোজ। তাঁর অপরাজিত হাফসেঞ্চুরির উপর ভর করেই ১৭৬-৭ তোলে কেকেআর। ১৭৬ তাড়া করতে নেমে ১৪ ওভারে ৮৩-৪ হয়ে যায় স্কটল্যান্ড। কুড়ি ওভারে স্কটল্যান্ড শেষ করে ১৫২-৫ স্কোরে। |