বেনগাজির দূতাবাসে হামলার আভাস পাননি গোয়েন্দারা
সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ রাতে ঠিক কী ঘটেছিল বেনগাজির মার্কিন দূতাবাসে? প্রায় এক মাস পর এ নিয়ে তদন্ত কত দূর এগোল তা জানাতে আজ মার্কিন প্রতিনিধি সভায় এক বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করলেন কূটনৈতিক নিরাপত্তা দফতরের অফিসাররা। নিরাপত্তার গাফিলতি-সহ এমন কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে এই রিপোর্টে যা নিয়ে এখন ঘোরতর অস্বস্তিতে ওবামা প্রশাসন।
গত ১১ তারিখ লিবিয়ার বেনগাজিতে মার্কিন দূতাবাসে ঢুকে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। নিহত হন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার স্টিভেনস ও দূতাবাসেরই আরও তিন কর্মী। এর পরই সরকারের তরফে জানানো হয়, ইসলাম-বিরোধী সিনেমার প্রতিবাদে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই আক্রমণ হেয়েছে।
তাঁদের আগের এই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে আজ অফিসাররা জানিয়েছেন, সিনেমার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে এখনই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। স্বতঃস্ফূর্ত নয়, বরং পরিকল্পিত ভাবেই এই আক্রমণ করা হয়েছিল। কিন্তু এ ধরনের কোনও আক্রমণ যে হতে পারে, তার সামান্যতম খবরও ছিল না গোয়েন্দাদের কাছে। দূতাবাসের বাইরের পরিস্থিতি ছিল অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক।
সে দিন দিনভর একাধিক মিটিং সারেন রাষ্ট্রদূত স্টিভেনস। শেষ ব্যক্তি ছিলেন তুরস্কের এক প্রতিনিধি। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ স্টিভেনস নিজে এসে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেন ওই প্রতিনিধিকে। কিন্তু এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই বিকট বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজে চমকে ওঠেন নিরাপত্তারক্ষীরা। স্টিভেনস ও দূতাবাসেরই আর এক কর্মী স্মিথকে আনতে ছোটেন এক রক্ষী। পালিয়ে এসে দূতাবাসের সব চেয়ে নিরাপদ ‘সেফ হেভেন’-এ আশ্রয় নেন তাঁরা। কিন্তু তত ক্ষণে বিক্ষোভকারীরা দূতাবাসের ভিতরে ঢুকে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় সেফ হেভেন। নিঃশ্বাস নিতে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে ছুটোছুটির পর সেখান থেকে বেরোনোর সিদ্ধান্ত নেন ওই তিন জন। প্রথা মাফিক ওখান থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসেন ওই নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর পিছনে স্টিভেনস ও স্মিথের আসার কথা থাকলেও তিনি পিছনে ফিরে আর কাউকেই দেখতে পাননি। বিস্তর খোঁজাখুজি পরেও সন্ধান মেলেনি তাঁদের। আক্রমণের খবর পেয়ে স্থানীয় সেনাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মার্কিন ‘র্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্সে’র সদস্যরা। দূতাবাস কর্মীদের তাঁরা বার করে নিয়ে গেলেও কিছু জায়গায় এখনও রয়ে গিয়েছে ধোঁয়াশা। মার্কিন অফিসারেরা আজ বলেন, ওই পরিস্থিতির মধ্যে কে বা কারা রাষ্ট্রদূতকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, সে বিষয়ে তাঁরা এখনও অন্ধকারেই।
পাশাপাশি, এ দিনের রিপোর্টে উঠে এসেছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্নও। আগের নথি থেকে জানা গিয়েছে, লিবিয়ায় রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে আগে একাধিক বার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতি বারই অগ্রাহ্য করা হয় সেই দাবি।
গদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সময় বেনগাজির গুরুদায়িত্ব সামলেছেন যে স্টিভেনস, তাঁর নিরাপত্তাতেও কেন বাড়তি নজর দেওয়া হয়নি উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্ন। ওবামার বিদেশ নীতির এই দুর্বলতা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রোমনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.