বিতর্ক এড়াতে কোচবিহার রাজবাড়ি রং করার কাজে এ বার বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই)। রাজবাড়ির পুরনো ছবির খোঁজ করার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মত যাচাই, দেওয়াল চিরে পুরানো রঙের সন্ধান চালানোর মত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরেই সর্বসন্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রাজবাড়ির রং চূড়ান্ত করা হবে। দুর্গাপুজোর পর গোটা রাজবাড়ি নতুনভাবে রং করার ওই কাজ শুরু হবে বলে এএসআই সূত্রের খবর। এএসআই-র কলকাতা সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তপনজ্যোতি বৈদ্য জানান, কোচবিহার রাজবাড়ির বর্তমান রঙ নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। অনেকে বলছেন রঙ ঠিকই হয়েছে। আবার একটি মহলের বক্তব্য রঙ বেশি গাঢ় হয়েছে। তা আরও হালকা ইট রঙের হওয়া উচিত বলে অনেকে জানিয়েছেন। রং করার কাজ শুরুর আগে বিশেষজ্ঞদের মতামত, এলাকার প্রবীণদের বক্তব্য, হেরিটেজ কমিটির পরামর্শ থেকে দেওয়াল চিরে প্রকৃত রঙের সন্ধান করা মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুজোর পর কাজ শুরু হবে। এএসআই সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে রাজবাড়ি শেষবার রঙ করা হয়। |
অনেকটা গাঢ় ইট রঙের ওই কাজ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। তাছাড়া দীর্ঘদিন রাজবাড়ি রঙ করা হচ্ছে না বলে প্রাসাদের বিভিন্ন অংশ বিক্ষিপ্তভাবে জৌলুসহীন হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সবমিলিয়ে যাবতীয় এবার রাজবাড়িকে নতুন রঙে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এজন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এএসআই-র আধিকারিক তপনবাবু জানান, টাকার জন্য সমস্যা হয় না। আগামী নভেম্বরে কাজ শুরু করে মার্চের মধ্যে তা শেষ করা যাবে বলে আশা করছি। ১৮৮৭ সালে কোচবিহার রাজবাড়ি তৈরি হয়। ছবি দেখে রং সম্পর্কে নিশ্চিত হতে রঙিন ছবি পাওয়া যাচ্ছে না। এএসআইয়ের এক কর্তার কথায়, “রাজবাড়ি তৈরির পর কিছু সাদাকালো ছবি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু রঙিন ছবি পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সন্ধান চালাচ্ছি।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার জানান, ৪ বছর আগে রাজবাড়ি যখন রঙ করা হচ্ছিল তখনই আমরা এত গাঢ় ইট রঙ নিয়ে আপত্তি করি। এবার নতুন করে রঙ করার আগে এএসআই কর্তারা বাড়তি সতর্কতা নেওয়ায় আমরা খুশি। এদিকে পুজোর মুখে মঙ্গলবার কোচবিহার রাজবাড়ি চত্বরে ঘাস ও আগাছার জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। রাজবাড়ি সূত্রের খবর, অস্থায়ী শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার দিনের সংখ্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মত বিরোধের জেরে প্রায় চার মাস ওই কাজ বন্ধ ছিল। |