নমস্কার কলকাতা,আমাদের জন্য
আরও এক বার প্রার্থনা করুন
মস্কার কলকাতা!
আপনারা কেমন আছেন?
আমি ভাল আছি। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হারের হ্যাংওভার এখনও কাটেনি। খুব, খুব কষ্ট হয়েছে। এ জন্যই বলে থাকে, পা দুটো মাটিতে টেনে নামানোর জন্য খেলাধুলোর মতো জিনিস আর হয় না। আমার শেষ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট ছিল আইপিএল। সেটা আমার টিম কেকেআর জিতে শেষ করেছিল। মাস পাঁচেক পরের আর একটা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টবিশ্বকাপ। সেখানে কিনা আমার টিম ইন্ডিয়া সেমিফাইনাল পর্যন্তও উঠতে পারল না!
যাক গে, আমার মন খারাপের কথা বলে আর আপনাদের সময় নষ্ট করব না। এই যে এখন পচেস্ট্রুমে বসে আছি কেকেআরের ছেলেদের সঙ্গেকত আনন্দের স্মৃতি ফিরে আসছে। ২৭ মে ২০১২-র স্মৃতি। যে দিন আমরা আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হলাম। মনে পড়ছে, এই বছরের শুরুর দিকে যখন অস্ট্রেলিয়া সফরে ছিলাম, তখন এক দিন ফোনে দিল্লিতে বসে থাকা বিজয় দাহিয়ার সঙ্গে গল্প করছিলাম। বিজয় দাহিয়া মানে কেকেআরের সহকারী কোচ। আমার দারুণ বন্ধুও। ওই সফরটা আমাদের পক্ষে একেবারেই মনে রাখার মতো যাচ্ছিল না। বিজয় ভাইকে বলেছিলাম, “এ বছর আমি আইপিএল জিততে চাই। এই অস্ট্রেলিয়া সফরের স্মৃতি মন থেকে মুছে ফেলতে হলে আইপিএল জিততেই হবে।”
মনের মধ্যে তখন একটা আগুন জ্বলছিল। নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে যে, অস্ট্রেলিয়ায় যা হয়েছে সেটা নিয়মের ব্যতিক্রম। বড় মঞ্চে আমি পারফর্ম করতে পারি। ২০১২ আইপিএলে যে কেকেআর গর্জে উঠেছিল, এ ভাবেই তার বীজটা পোঁতা হয়েছিল। কলকাতায় এসে যখন টিমের বাকিদের সঙ্গে কথা হল, ওদের সঙ্গেও আমার ভাবনা শেয়ার করেছিলাম। প্রথম দিকের একটা টিম মিটিংয়ে দলের জন্য একটা থিম তৈরি করেছিলাম। টিম থিম। শুনবেন কী ছিল সেই থিম? “জার্সির সামনে যে টিমের নামটা লেখা আছে সেই নামের জন্য খেলো। তা হলেই কিন্তু জার্সির পিছনে তোমার নামটা লোকে মনে রাখবে। সব সময় মনে রাখবে।” গোটা আইপিএলেই এটা আমার টিমের মন্ত্র ছিল। যখনই কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তাম, থিমটা মনে করলে টিম স্পিরিট ফিরে আসত।
আফ্রিকার জঙ্গল দর্শনের পথে নাইটরা। কোচ ট্রেভর বেলিসের সঙ্গে
মনোজ তিওয়ারি, ব্রেট লি, সাকিব আল হাসান, বালাজিরা।
ইডেনে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে যে ম্যাচটা হারলাম, তার কথা ধরুন। ওই ম্যাচে আমরা ১৩৫ তাড়া করছিলাম। হেরেছিলাম মাত্র দু’রানে। ওই দিনটা ছিল গোটা টুর্নামেন্টে কেকেআরের সবচেয়ে খারাপ দিনগুলোর একটা। মনে আছে ওই ম্যাচটার পরে আমার মেজাজ প্রচণ্ড গরম হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমার টিম আর সাপোর্ট স্টাফকে ধন্যবাদ দেব, শেষ পর্যন্ত এককাট্টা হয়ে থাকার জন্য। আমরা সবাই একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, একে অন্যের জন্য খেলেছিলাম, আর পরপর ছ’টা ম্যাচ জিতেছিলাম। আমার টিম শুধু আমাকেই গর্বিত করেনি। গোটা বাংলারও গর্ব ওরা।
আইপিএল সিক্সে আমাদের যদি কোনও ‘এক্স ফ্যাক্টর’ থেকে থাকে, তো সেটা তৈরি করে দিয়েছিলেন কেকেআর সমর্থকেরা। ইডেনের গ্যালারিতে হোক বা টিম হোটেলের লবিতে, যে সব শপিং মলে মাঝে মাঝেই সিনেমা দেখতে যেতাম সেখান থেকে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায়এই প্যাশনটার কোনও তুলনা হয় না। জেতার এমন অবিশ্বাস্য খিদেবিশ্বের কোথাও এই জিনিস দেখিনি। এই ভক্তদের আমাদের সেরা পারফরম্যান্সটাই প্রাপ্য। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
কেকেআরের ক্ষমতা দেখানোর আরও একটা সুযোগ এই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি। সবচেয়ে বড় কথা, এই মঞ্চে আমরা গোটা বিশ্বকে বোঝাতে পারব যে, আইপিএল-জয় কোনও ‘ফ্লুক’ ছিল না। এই প্রথম ‘আন্ডারডগ’ তকমা ছাড়া কোনও টুর্নামেন্টে নামছে কেকেআর। টিমের সবার বুকে গর্ব, চোখে আত্মবিশ্বাসের আগুন। আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হিসেবে টুর্নামেন্টে নামাটা একেবারেই বোঝা বলে মনে হচ্ছে না। বরং এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে যে, এক বার যখন ট্রফি জিতেছি তখন আবার জিততে পারব। আত্মবিশ্বাসে কী না হয়!
নাহ, এ বার প্র্যাক্টিসে ফিরতে হবে। কোচেরা কেমন রাগী রাগী চোখে তাকাচ্ছেন আমার দিকে। চিন্তা করবেন না। ‘পচ’-এ টিমের সবাই খুব আরামে আছি। মনে হচ্ছে বাড়িতে না থেকেও বিরাট একটা পরিবারের মধ্যে আছি সবাই। ভারতীয় খাবার পাওয়া যাচ্ছে এখানে। আবহাওয়া বেশ ভাল। প্র্যাক্টিসের সুযোগসুবিধে বিশ্বমানের। টিম স্পিরিট তো আছেই। জেতার ইচ্ছে? আগুনের মতো জ্বলজ্বল করছে!
আর কেকেআর ফ্যানদের বলি, পুজো উপভোগ করুন। পুজোর মিষ্টি খান। কিন্তু ওজনের দিকেও নজর রাখুন! সব শেষে বলব, আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে (কেকেআর ২০১১)
কোয়ালিফায়ার: অকল্যান্ড এসের বিরুদ্ধে ২ রানে জয়।
সমারসেটের কাছে ১১ রানে হার।
মূলপর্ব: সাউথ অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১৯ রানে হার।
সমারসেটের কাছে ৫ উইকেটে হার।
বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ৯ উইকেটে জয়।
ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে ২২ রানে জয়। (গ্রুপ পর্বেই বিদায়)
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে (গম্ভীর ২০১১)ম্যাচ ৪, সর্বোচ্চ ৫৫ ন.আ., গড় ৪৮.৫০, স্ট্রাইক রেট ১৫১.৫৬।
নাইটরা কবে কোথায়
১৩ অক্টোবর: বনাম দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (সেঞ্চুরিয়ন)
১৫ অক্টোবর: বনাম কোয়ালিফায়ার দল (কেপটাউন)
১৭ অক্টোবর: বনাম পারথ স্কর্চার্স (ডারবান)
২১ অক্টোবর: বনাম টাইটানস (কেপটাউন)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.