স্কুলের নানা ‘অনিয়মের’ প্রতিবাদে অনশনে বসেছিল কয়েক জন ছাত্র। হটিয়ে দেওয়ার জন্য স্কুলে ঢুকে ওই ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে গোসাবার পশ্চিম সত্যনারায়ণপুর শশীভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের মদত রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বালি-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সুব্রত মণ্ডলের লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রহৃত ছাত্রদের অভিভাবকেরা। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সুব্রতবাবু।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া হয় না, শিক্ষক-শিক্ষিকারা ঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না, স্কুলকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে এমনই কিছু অভিযোগে দিন কয়েক ধরে ওই স্কুলের সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির জনা কুড়ি ছাত্র ক্লাস বয়কট এবং বিক্ষোভ করছিল। সোমবার তারা অনশনে বসে। তার কিছুক্ষণ পরেই তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আট ছাত্রকে গোসাবা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। স্কুলে চলে আসেন তাদের অভিভাবকেরা। যদিও রাত পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি। বিডিও সুমন চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “স্কুলে গোলমালের খবর পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘটনার ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক দেবজ্যোতি বড়ালও।
আহত সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র বলে, “আমরা শান্তিপূণর্র্ ভাবে অনশনে বসেছিলাম। হঠাৎ এক দল লোক এসে আমাদের চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে।” আর এক ছাত্র বলে, “হটিয়ে দেওয়ার জন্যই আমাদের মারা হল।” আহত এক ছাত্রের বাবা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা হিরণ্ময় পাত্র বলেন, “প্রধান শিক্ষক এবং পঞ্চায়েত প্রধান যোগসাজশ করে নদীবাঁধ নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এই যুক্তি দেখিয়ে স্কুল অন্যত্র সরাতে চাইছেন। স্কুলে নানা অনিয়মও রয়েছে। ছাত্রেরা এ সবের প্রতিবাদ করায় প্রধানের দলবল ছাত্রদের মারল।” আর এক অভিভাবক দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “স্কুলে গণ্ডগোল হচ্ছে শুনে গিয়ে দেখি, ছাত্রদের মারধর করা হচ্ছে। আমি শিক্ষক এবং স্কুল সম্পাদকের কাছে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাই।”
চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে। তিনি এ দিন স্কুলে আসেননি। ফোনও ধরেননি। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক কানাই দাস বলেন, “দুঃখজনক ঘটনা। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করব।” তবে, স্কুলে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তাঁর কিছু বলার নেই বলে জানান কানাইবাবু। ক্যানিং-১ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সুব্রত মণ্ডল বলেন, “এই ঘটনায় আমি বা আমার দল যুক্ত নয়। কেউ চক্রান্ত করে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি স্কুলে ঢুকে ছাত্রদের মারধর সমর্থন করি না।” |