আইন খতমে ‘বিষ ধারা’
অধিগ্রহণ: মমতার সুরেই আপত্তি অ্যান্টনির
মি অধিগ্রহণ বিল নিয়ে আজ কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতের প্রতিধ্বনিই শোনা গেল মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে। এবং যিনি তুললেন, সেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি এক দিকে যেমন মনমোহন সিংহের মন্ত্রিসভার নম্বর-টু, তেমনই সনিয়া গাঁধীরও আস্থাভাজন। এ দিনের বৈঠকে তিনি জানান, বেসরকারি শিল্পের জন্য সরকারের হাতে জমি অধিগ্রহণের অধিকার থাকা উচিত নয়। যদি একান্তই দরকার হয়, তবে মাত্র ১০ শতাংশ রাখা যেতে পারে। মমতা-পন্থী এই মত অবশ্য মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে খারিজ হয়ে গিয়েছে।
বস্তুত মমতা আগাগোড়াই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকার বিরোধী এবং তিনি একাধিক বার এ ব্যাপারে নিজের মত স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এ দিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মা, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী কমলনাথ এক বাক্যে অ্যান্টনির আপত্তি খারিজ করে দেন। তাঁরা এ ব্যাপারে একমত হন যে, অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকা অবশ্যই থাকতে হবে।
সূত্রের খবর, বৈঠকে অ্যান্টনি আপত্তি করলে জয়রাম বলেন, বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ পুরোপুরি বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া গেলে তার থেকে ভাল কিছু হতে পারে না। কিন্তু ভারতে জমির বাজার এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছতে পারেনি। তা ছাড়া কৃষক তথা জমির মালিকদের সচেতনতার অভাবও রয়েছে। তাই শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ পুরোপুরি বাজারের হাতে ছেড়ে দিলে কৃষকদের ঠকে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সেই কারণেই রাষ্ট্রের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করছে কেন্দ্র।
কেন্দ্র এ-ও মনে করছে, নতুন জমি অধিগ্রহণ বিল পাশ ও তার রূপায়ণ শুরু হলে পরিস্থিতি শুধরোবে। জয়রামের কথায়, “আশা করা হচ্ছে, কুড়ি বছর পরে এই জমি বিলের আর প্রয়োজন হবে না। তখন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছেই সব তথ্য থাকবে। ফলে তাঁরা সরাসরি বোঝাপড়া করে নেবেন।” ভবিষ্যতের এই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই জমি বিলে বিষ ধারা বা ‘পয়জন ক্লজ’ রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ কুড়ি বছর পর এমনিতেই আইনটি বাতিল হয়ে যাবে।
মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্য কেন্দ্রের এক মন্ত্রীর কথায়, “বেসরকারি শিল্পস্থাপনে সরকারের অধিকার রাখার পক্ষে সওয়াল করছে বহু রাজ্য। এ ব্যাপারে মমতার আপত্তি থাকলেও ওড়িশার পরিস্থিতি আবার উল্টো। কারণ নবীন পট্টনায়কের মতে, সরকার অধিগ্রহণ করলে তবেই কৃষকরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন পাবেন।
জমি বিল নিয়ে আলোচনা এখনও শেষ হয়নি। তবে সরকারি সূত্রের বক্তব্য, মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা ইতিমধ্যেই কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তার মধ্যে আছে:
এক, উৎপাদন শিল্পতালুক এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রকল্পকে জনস্বার্থে প্রয়োজন বলে বিবেচনা করা হবে। অর্থাৎ এ জন্য সরকার জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে।
দুই, যে সব ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এখনও অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়নি বা ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হয়নি, সে ক্ষেত্রে নতুন বিল অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন দিতে হবে (রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্ট)।
তিন, শিল্পের জন্য কোনও বেসরকারি সংস্থা এক লপ্তে অনেকটা জমি নিলে নতুন বিল অনুযায়ী পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
চার, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হলেই প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া যাবে।
পাঁচ, নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের পরিমাণ বিবেচনা করে নতুন হার ঘোষণা করতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.