অন্য কথা হিডকোর
চারটি প্রস্তাব অর্থতালুকে, দাবি ফিরহাদের
রাজারহাটের হিডকোয় প্রস্তাবিত অর্থতালুকে এ পর্যন্ত বিনিয়োগের চারটি লিখিত প্রস্তাব এসেছে বলে সোমবার দাবি করলেন রাজ্যের নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এ দিন মহাকরণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ (নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে হিডকো তাঁর অধীনে) বলেন, “অর্থতালুকে বিনিয়োগ করতে চেয়ে চারটি সংস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক, ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক সংস্থা শ্রেয়ি।” চতুর্থ সংস্থাটির নাম বলতে পারেননি তিনি। প্রস্তাবে বিনিয়োগের পরিমাণ কত, সংস্থাগুলি কত জমি নেবে, সে সম্পর্কে অবশ্য কিছু জানাননি ফিরহাদ। ওই সংস্থাগুলি ছাড়াও দেনা ব্যাঙ্ক, এইচএসবিসি এবং ইয়েস ব্যাঙ্ক বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে দাবি তাঁর।
নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর এই দাবি নিয়ে অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেছেন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি এবং হিডকো কর্তৃপক্ষ। ইউবিআইয়ের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভাস্কর সেন বলেন, “আমরা অর্থতালুকে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক।” শ্রেয়ি-র এক প্রতিনিধির কথায়, “অর্থতালুকে প্রকল্প গড়লে কী সুবিধা পাওয়া যাবে, সেখানের পরিকাঠামো কেমন, সে সব খতিয়ে দেখে আমরা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।” আর হিডকো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক-সহ দেশের কয়েকটি আর্থিক সংস্থা অর্থতালুক নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। কিন্তু কোনও সংস্থা এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়নি।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, অর্থতালুকে বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে নগরোন্নয়মন্ত্রীর দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত?
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে নিউটাউনে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অর্থতালুক তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০১০ সালে প্রকল্পটির উদ্বোধনও হয়। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রকল্প বাতিল করে দেন। তিনি জানিয়ে দেন, নিউটাউনে একটি আন্তর্জাতিক মানের অর্থতালুক একাই তৈরি করবে রাজ্য সরকার। এবং সরকার একা প্রকল্প করবে ঘোষণার পর গত বছরের মার্চ মাসে প্রকল্পটির ফের উদ্বোধনও করে তৃণমূলের সরকার।
দ্বিতীয় দফায় উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত অর্থতালুকে বিনিয়োগ চেয়ে তিন বার বিজ্ঞাপন দিয়েছেন হিডকো কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ বিজ্ঞাপটিতে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব জমা দেওয়ার শেষ দিন ধার্য হয়েছে এ মাসের ৩১ তারিখ। যদিও ৬ অক্টোবর, শনিবার পর্যন্ত এ রকম একটি প্রস্তাবও আসেনি বলে জানিয়েছেন খোদ হিডকো কর্তৃপক্ষই। যদিও নগরোন্নয়নমন্ত্রী আজ বলেন, “আমাদের এখানে প্রথম ধাপে সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) এলাকায় ২৫ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে। এতে ৯টি প্লট আছে। এর মধ্যে চারটি প্লট নেওয়ার প্রস্তাব জমা পড়েছে।” সিবিডি এলাকার বাইরে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া জমি নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
হিডকো সূত্রের খবর, প্রথম দু’টি বিজ্ঞাপনের পর কোনও বিনিয়োগের প্রস্তাব না আসায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইয়ে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেন নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ। তার আগে একই কারণে তিনি দিল্লিতে বৈঠক করেছিলেন। অর্থতালুকে বিনিয়োগ ধরে আনতে ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএস)-এর মতো পরিকাঠামো উন্নয়ন ও আর্থিক বিষয়ক সংস্থাকে মোটা অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করা হয়েছে। তবু এ দিন পর্যন্ত ওই ২৫ একর জমি এবং অর্থতালুকের জন্য চিহ্নিত সিনথেসিস বিল্ডিংয়ের ৮০ হাজার বর্গফুট এলাকায় প্রকল্প করার জন্য কোনও বিনিয়োগের প্রস্তাব আসেনি।
তবে কী তিন-তিন বার বিজ্ঞাপন দিয়েও কোনও অগ্রগতি হয়নি?
হিডকোর কর্তারা জানাচ্ছেন, ইউবিআই, ইউকো-র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তারা হিডকোয় এসে অর্থতালুকের চিহ্নিত জমি দেখে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বিস্তারিত কথাবার্তা হয়েছে। আরও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে চেয়েছে। কিন্তু কেউই এখনও লিখিত প্রস্তাব দেয়নি। তবে হাতে সময় আছে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এক কর্তার কথায়, “প্রতিটি প্লটের জন্য প্রস্তাবের সঙ্গে অগ্রিম হিসেবে ২৫ লক্ষ টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। তাই যারা লিখিত প্রস্তাব দেবে, তারা শেষ সময়েই (৩০ বা ৩১ অক্টোবর) আসবে। কারণ, আগে থেকে অত টাকা (২৫ লক্ষ) হিডকোর ঘরে জমা রেখে তো লাভ নেই। তাই আমরা আশাবাদী।”
নগরোন্ননমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিনিয়োগ টানতে এর পর হায়দরাবাদ, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরু যাবেন তিনি। পুজোর পরে, নভেম্বর মাসে তিনি সিঙ্গাপুরেও যেতে পারেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.