এক চপ বিক্রেতাকে হুমকি দিয়ে দুর্গাপুজোর মোটা চাঁদা আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে অভিযোগ পেয়ে মীমাংসা করতে গিয়েছিলেন এলাকার এক তৃণমূল নেতা। উল্টে তাঁকে আর তাঁর লোকজনকেই মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
বর্ধমানের লাকুর্ডি এলাকায় রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে। আহত তিন জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সোমবার এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “ওই ঘটনায় বর্ধমান থানায় দু’টি আলাদা মামলা দায়ের হয়েছে। যে ব্যবসায়ীকে চাঁদা দিতে বলা হয়েছিল তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি ও প্রহৃত শাহিদুর রহমানের দাদা খোন্দকার ফজলুল রহমান ওরফে সবুজের অভিযোগের ভিত্তিতে অপর মামলা চলছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০ সেপ্টেম্বর। লাকুর্ডির বাসিন্দা, বোরহাটের নতুনগঞ্জ বাজারের চপ বিক্রেতা প্রভাসচন্দ্র নন্দীর অভিযোগ, ওই দিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্থানীয় একটি ক্লাবের নাম করে তিন হাজার টাকার দুর্গাপুজোর চাঁদার রসিদ (নম্বর ৬১৭) কাটে কয়েক জন। প্রভাসবাবু জানান, তাঁর যা রোজগার তাতে ৩০ টাকার বেশি চাঁদা দেওয়া সম্ভব নয়। তাতে তাঁর মুখের উপর রসিদ ছুঁড়ে ফেলে বলা হয়, এলাকায় থাকতে গেলে ওই চাঁদা দিতেই হবে। |
পুলিশের কাছে অভিযোগে প্রভাসবাবু জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ চাঁদা আদায়কারীরা ফের তাঁর বাড়িতে এসে চিৎকার করে ডাকাডাকি করে। দরজা ধাক্কায়। তাতে ভয় পেয়ে তিনি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর খোন্দকার মহম্মদ শাহিদুল্লাহকে টেলিফোন করে। দলের নেতা ফজলুল রহমানকে ঘটনার খোঁজ নিতে পাঠান কাউন্সিলর। ফজলুল রহমানের অভিযোগ, “আমার ভাই ও কয়েক জনকে আমি নিয়ে এলাকায় গেলে পুজোর উদ্যোক্তাদের কয়েক জন আমাদের ঘিরে ধরে। আমি জানতে চাই, সামান্য এক জন ব্যবসায়ীর কাছে কেন এত টাকার চাঁদা দেওয়া হচ্ছে? এই নিয়ে তর্কাতর্কি হতেই ওরা রড-বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে। আমার ভাই শাহিদুর রহমান ও অন্য দু’জন জখম হয়। আমার পকেট থেকে মোবাইল ফোন ও ৮০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। হামলায় জড়িত চার জনের নামে অভিযোগ করেছি।”
প্রভাসবাবুও তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, ওই চার জনই তাঁর বাড়িতে চাঁদা আদায় করতে গিয়েছিল। তবে এ দিন ওই এলাকায় বা মণ্ডপে গিয়ে অভিযুক্তদের দেখা মেলেনি। পুজো কমিটির দুই সভাপতি অমিত মালাকার ও সুমন্ত চোঙদার দাবি করেন, “ওই লোকেরা আমাদের পুজোয় নেই। চাঁদা আদায়ের ব্যপারে চাপ দেওয়া বা কারও উপরে চড়াও হওয়া সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।” |