বঢরাকে নিশানা করতে দ্বিধায় গডকড়ীরা
নিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে অরবিন্দ কেজরিওয়াল দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও বিজেপি কিন্তু এ ব্যাপারে তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে আক্রমণাত্মক প্রচারে নামতে রাজি নয়।
কিন্তু কেন? যে বিজেপি একদা লোকসভা নির্বাচনে সনিয়া গাঁধীকে আক্রমণের সব চেয়ে বড় নিশানা করেছিল, তাদের এমন কী হল যে, কেজরিওয়ালের শরিক হতে রাজি হচ্ছে না?
কেজরিওয়াল সাংবাদিক বৈঠকটি করেছেন গত শুক্রবার বিকেল তিনটের সময়। বৈঠকটি হওয়ার আগেই দিল্লি জুড়ে সকলে জেনে যায়, রবার্ট বঢরাকে আক্রমণ করতে চলেছেন অণ্ণা হজারের সঙ্গী। এ কথা জেনে বিজেপি মুখপাত্ররা তো বটেই, বহু কর্মীও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। দলীয় মুখপাত্র মুখতার আব্বাস নকভি মোটামুটি তোড়জোড় নিয়ে ফেলেছিলেন সাংবাদিক বৈঠকের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীর কাছ থেকে দলীয় মুখপাত্রদের কাছে নির্দেশ আসে, কেজরিওয়ালের অভিযোগের ভিত্তিতে এখনই সনিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণে যাওয়া অনুচিত। বিজেপিকে আরও কৌশলে পা ফেলতে হবে। স্থির হয়, কী ভাবে এ ব্যাপারে কংগ্রেস-বিরোধী অভিযান গড়ে তোলা যায়, তা নিয়ে রণকৌশল ঠিক করতে দলীয় নেতৃত্ব এবং মুখপাত্রদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন গডকড়ী। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
আসলে অন্য কারণে কালো মেঘ দেখেছিলেন গডকড়ী। সে দিনই কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে। বলা হয়, বিদর্ভের সেচ প্রকল্পে তাঁর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা ঠিকমতো কাজ করছেন না, তবু তাঁদের টাকা পাইয়ে দিতে কেন্দ্রকে পাঁচ বার চিঠি লিখেছেন গডকড়ী। বিজেপি সভাপতি অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী এবং শরদ পওয়ারও এই প্রাপ্য টাকার জন্য সুপারিশ করেছেন। সুপারিশ করা মানেই দুর্নীতি নয়।
তা হলে কালো মেঘ কোথায়?
বিজেপি সূত্র বলছে, কেজরিওয়াল ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়েছেন, আবার ১০ তারিখে অন্য আর এক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য নিয়ে আসবেন তিনি। বিজেপি নেতারা বলছেন, কেজরিওয়াল যে গডকড়ীকেই নিশানা করবেন না, তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়? তা ছাড়া, রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি কেজরিওয়াল উত্থাপন করেছেন, সেটা খুব নতুন নয়। এর আগে বিষয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল। তখনও বিজেপি বিষয়টিকে নিয়ে প্রচারে যায়নি। তার পর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতা বলেন, ডিএলএফ একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। রবার্ট বঢরাও কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। তিনি ব্যবসায়ী। এখন কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোনও এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কী বোঝাপড়া করেছে আর কী সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, তাকে দুর্নীতি বলা যায় কী করে? এখন এই অভিযোগের ভিত্তিতে সনিয়া গাঁধীর পরিবারের বিরুদ্ধে বিজেপি যদি ব্যক্তিগত আক্রমণে যায়, তা হলে একটা কথা তাদের মাথায় রাখতে হবে। তা হল, পরে কেজরিওয়াল বা অন্য কেউ যদি নিতিন গডকড়ী বা অন্য কোনও বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে একই রকম ভাবে যথেষ্ট প্রমাণ ছাড়া কোনও অভিযোগ আনেন, তখন বিজেপি সেই আক্রমণ সামলাবে কোন যুক্তিতে? তাই কাচের ঘরে বসে ঢিল ছোড়াটা আর যাই হোক, ঠিক রণকৌশল নয়।
এর আগে সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে বিদেশিনি বলে আক্রমণাত্মক প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেই ব্যক্তিগত আক্রমণে তাদের লাভের থেকে লোকসান হয়েছে বেশই। তাই রবার্ট বঢরার বিষয়টি নিয়েও প্রচারে নামার আগে সতর্ক হতে চাইছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং যশবন্ত সিনহা, দু’জনেই এখন মার্কিন মুলুকে। তাই কংগ্রেস বিরোধী প্রচারে উৎসুক হলেও গডকড়ী রণকৌশল ঠিক করার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে চাইছেন। দেখতে চাইছেন, কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআই কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধেও তদন্তে সক্রিয় হয় কি না। ইতিমধ্যেই নিতিনের ঘনিষ্ঠ রাজ্যসভার সদস্য অজয় সাঞ্চেতি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। আর কোনও বিজেপি নেতা তদন্তের আওতায় আসেন কি না, সেটাই দেখে নিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই আপাতত সনিয়া গাঁধী এবং তার জামাইয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হতে চাইছে না বিজেপি।

পাল্টা জবাব
অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁর বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন, তা ভিত্তিহীন রবিবার এ কথা বললেন সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরা। আরও বললেন, তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে জনসমক্ষে হেয় করতেই কেজরিওয়াল এই অভিযোগ এনেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.