গেইলের ৩০ স্কোরিং শট হলেই তো যথেষ্ট
নেকগুলো কঠিন বাধা পেরিয়ে যারা আজ প্রেমদাসায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে, সেই শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই আমি নিশ্চিত, ফাইনালে জমজমাট লড়াই দেখা যাবে।
২০০৭-এর পর থেকে যে দলটা চার-চারটে বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলেছে, সেই শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। ওরা কী করতে পারে, না পারে, তা এই একটা তথ্য থেকেই বোঝা যায়। শ্রীলঙ্কানদের সাফল্যের এই দৌড়কে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে, সেই মাহেলা ও সঙ্গকারার কৃতিত্বই অবশ্য সবচেয়ে বেশি। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে ওরা দুই বড় দাদার মতো এগিয়ে নিয়ে এসেছে। আজ সে দেশের ক্রিকেট যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ওদের পরিণত চিন্তাভাবনাই সব।
অন্য দিকে, ক্রিকেটের একটা বড় শক্তিকে আমরা ফের উঠে আসতে দেখছি। স্বর্ণযুগের পর ক্যারিবিয়ানরা ক্রিকেট দুনিয়ায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য দীর্ঘ দিন লড়াই করেছে। কিন্তু সব বিভাগেই এই দলটার মান যথেষ্ট ভাল। এই মান কত দিন ওরা ধরে রাখতে পারবে, তা অবশ্য শুধু সময়ই জানে।
যেহেতু ওরা ঘরের মাঠে খেলছে, তাই শ্রীলঙ্কা খাতায়-কলমে ফেভারিট। কিন্তু এটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। তাই কোনও দলকে আগে থেকে এগিয়ে রাখা বেশ কঠিন কাজ। ফেভারিটরাই যে শেষ হাসি হাসবে, এমন কোনও কথা নেই। বিশেষ করে বিপক্ষ দলে যদি ক্রিস গেইলের মতো বিধ্বংসী ক্রিকেটার থাকে, তা হলে আরওই নয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গেইলই বিশ্বসেরা। শুক্রবারের ম্যাচে ওর পারফরম্যান্সের পর এ ছাড়া আর কীই বা বলা যেতে পারে?
আইপিএলে গেইলের খেলা কাছ থেকে দেখেছি বলেই জানি, ওকে বাইশ গজে দেখে উপভোগ করা যায়। কিন্তু ওকে অনুকরণের চেষ্টা অসম্ভব। বোলারদের ওপর যে রকম বিধ্বংসী প্রভাব ফেলে ও, তাতে তাদের আর কিছু করার থাকে না। গত দু’টো আইপিএল থেকে ওকে নিজের খেলায় পরিবর্তন আনতে দেখেছি। শুধু যে বিশাল শটের জন্য, তা নয়, ব্যাট হাতে ওর আচরণটাই ভয়ঙ্কর। এখন ও উইকেটে জমার জন্য কিছুটা সময় নিচ্ছে, পিচ ও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আসলে ও বুঝে নিয়েছে, যদি বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে থাকতে পারে আর ৩০টা স্কোরিং শট হাঁকাতে পারে, তা হলে একা হাতেই ও দলকে জিতিয়ে দিতে পারে। আসলে সারা দুনিয়া জুড়ে টি-টোয়েন্টি খেলে বেড়িয়েই গেইল এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এটাই ওর মূলধন।
শুরুতেই গেইলকে ফিরিয়ে দিতে পারলে শ্রীলঙ্কা অর্ধেক কাজ করে ফেলবে। এই একটা ব্যাপারের ওপরই দাঁড়িয়ে গোটা ম্যাচ। গেইলকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিতে পারলে শুধু যে জয়ের দিকে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারবে শ্রীলঙ্কা, তা নয়, ওদের বোলাররাও পুরো ‘চার্জড’ হয়ে যাবে। ওদের আগের মুখোমুখিতেই ঠিক এরকম হয়েছে। গেইল ফিরে যাওয়ার পর আর বেশি রান তুলতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা। পোলার্ড, ব্র্যাভো, স্যামুয়েলস, রাসেলদের মতো হার্ড হিটারও অবশ্য রয়েছে ওদের দলে। কিন্তু গেইলের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান তো নয় ওরা।
মাহেলাদের অস্ত্র হয়ে উঠবে স্পিন, না পেসারদের ওপরই নির্ভর করতে হবে ওদের, এটাও একটা প্রশ্ন। আগের ম্যাচে কুলশেখরা দারুণ বল করেছিল। আসলে গেইল যেহেতু বেশির ভাগই ক্রিজ থেকে খেলে, তাই ‘মুভিং বল’-এ ও একটু সমস্যায় পড়তে পারে। কিন্তু টেস্টে যার দু’টো ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে, তার কি এই সমস্যা হতে পারে? উপমহাদেশের পরিবেশের সঙ্গে ও নিজেকে বেশ মানিয়েও নিয়েছে। তাই মাহেলাদের পক্ষে গেইলকে রোখা মোটেই সহজ হবে না। বোলিংয়েও দুটো দল প্রায় সমান। বিশেষ করে স্পিনে। তবে ডেথ ওভারে বোলিংয়ের দিক থেকে শ্রীলঙ্কা সামান্য এগিয়ে। ব্যাটিংয়ে মাহেলা, সঙ্গকারা প্রধান স্তম্ভ। ওরা দু’জন দাঁড়িয়ে গেলে শ্রীলঙ্কা বড় ইনিংস গড়বেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের বড় পরীক্ষা। ক্যারিবিয়ান বোলাররা ছোট রানের পুঁজি নিয়ে বল করতে নেমে বিপক্ষকে ঝামেলায় ফেলতে পারেনি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.