ভোট-পরীক্ষায় আজ চাভেস
ক জন বলছেন, দেশ থেকে দারিদ্র আর অসাম্য পুরোপুরি মুছে ফেলার জন্য তাঁরই আরও এক দফা প্রেসিডেন্ট হওয়া দরকার। জবাবে অন্য জন বলছেন, “১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে যথেষ্ট হয়েছে। এর বেশি আর কাউকে সময় দেওয়া চলে না।” ভেনিজুয়েলার আমজনতা কাল, রবিবার কার ডাকে সাড়া দেন, সেটাই দেখার।
এক দিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট উগো চাভেস। অন্য দিকে ৪০ বছরের এনরিকে ক্যাপ্রিলেস। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাল চাভেসের প্রতিদ্বন্দ্বী মিরান্ডার এই প্রাক্তন গভর্নর।
গত এক দশকের মধ্যে এ দেশে কোনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে হাওয়া এত গরম হয়ে ওঠেনি। জোরদার প্রচার চালিয়েছে দু’পক্ষই। যুযুধান দুই নেতাই তৈলসমৃদ্ধ দেশটার অর্থনীতি আরও মজবুত করার অঙ্গীকার করেছেন। চাভেস একাধিক বার বলেছেন, তাঁর লক্ষ্য সামাজিক সংস্কার। বলেছেন, “দশ বছর পরে এ দেশে কোনও গৃহহারা মানুষ থাকবে না।” ক্যাপ্রিলেস শিক্ষার প্রসারে জোর দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে বিভেদের শাসন বলে কিছু থাকবে না।
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, দুই নেতার সম্ভাব্য বিদেশনীতির দিকেই তাকিয়ে তাবড় রাষ্ট্রনায়করা। কারণ, চাভেস-ক্যাপ্রিলেস দ্বৈরথে মিশ খেয়েছে তেল আর রাজনীতি।
প্রচারে উগো চাভেস। এ এফ পি-র ফাইল চিত্র।
সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে, অশোধিত তেলের সঞ্চয়ের নিরিখে সৌদি আরবকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভেনিজুয়েলা। সেই বিপুল তৈলভাণ্ডার নিয়ে দুই নেতার দু’রকম ভাবনা। তাই ভোটের ফলাফল নিয়ে তেল সংস্থাগুলি কৌতূহলী। প্রশ্ন একটাই, কতটা উন্মুক্ত হয় এই তেলের ভাণ্ডার?
চাভেস তো বলেছেন, ক্ষমতায় ফিরলেই তেল উত্তোলন বাড়াবেন। মার্কিন বাজারের প্রতি নির্ভরতা কমাতে এশিয়ায় অশোধিত তেল রফতানি দ্বিগুণ করবেন। চিন-সহ এশীয় বাজারে তেল রফতানির খরচ ও সময় কমাতে কলম্বিয়া দিয়ে পাইপলাইন বসানোর ভাবনাও রয়েছে তাঁর। এ দিকে ক্যাপ্রিলেস বলেছেন, তিনি জিতলে বর্তমান তেলমন্ত্রীকে ছাঁটাই করবেন। সব চুক্তি ঢেলে সাজবেন। কিউবা, বেলারুশ, নিকারাগুয়া এবং সিরিয়ায় কম দামে তেল রফতানিও বন্ধ করবেন। চাভেস-শিবিরের দাবি, ক্যাপ্রিলেস বকলমে আমেরিকার প্রার্থী। তেল সংস্থাগুলো চাইছে একটা দুর্বল সরকার আসুক, যাতে তারা ভেনিজুয়েলার তেলের ভাণ্ডার সহজে কব্জা করতে পারে। তবে তেল শিল্প পরিকাঠামোয় ভেনিজুয়েলা পিছিয়ে। তাই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই ভবিষ্যতে লগ্নি টানার কথা বলেছেন।
চর্চার একটা দিক যদি তেল হয়, তা হলে অন্য দিকে রয়েছে সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য ভূমিকা। অনেকে বলছেন, ভোটের ফল ঘিরে বিতর্ক বা কোনও পক্ষের জয়ের ব্যবধান নগণ্য হলে সেনাবাহিনীই ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট বাছায় সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। ক্যাপ্রিলেস ইতিমধ্যেই চাভেসের জয়ধ্বনি দেওয়া টি শার্ট পরা সেনাদের ছবি টুইটারে দিয়ে বলেছেন, “আমার জমানায় অন্তত সেনাকে কোনও দলের অনুগত থাকতে হবে না।” এ দিকে শোনা গিয়েছে, ক্যাপ্রিলেস শিবিরও গোপন বৈঠকে বসছে সেনা অফিসারদের সঙ্গে। এমনকী ক্ষমতায় এলে এক জন বিশেষ সেনা অফিসারকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন ক্যাপ্রিলেস। তবে সেনা বিবৃতিতে বলেছে, তারা জনমতকেই মর্যাদা দেবে।
আপাত ভাবে চাভেসের দিকে পাল্লা কিছুটা ঝুঁকে আছে বলে মত অনেকের। তবে আর এক শিবিরের বক্তব্য, ক্যাপ্রিলেস তখনই ক্ষমতায় আসতে পারেন যদি চাভেস-বিরোধীরা নির্ভয়ে তাঁকে ভোটটা দেন। অতএব বল জনগণের কোর্টে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.