বৌয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ঝাঁপ পরস্ত্রীর খাঁচায়
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে এসে আর এক ‘মহিলার’ প্রবল রোষের সামনে পড়লেন গঞ্জামের সূর্যনারায়ণ দাস। নিজের স্ত্রীর আক্রমণ তাও বাক্যবাণেই সীমিত ছিল। কিন্তু পরস্ত্রীর কাছ থেকে মিলেছে আঁচড়-কামড়। আপাতত, ক্ষত-বিক্ষত সূর্যনারায়ণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনাস্থল: ওড়িশার নন্দনকানন। সময়: আজ দুপুর সওয়া-একটা। নন্দনকাননের ২৯-ডি এরক্লোজারের বাসিন্দা ক্রিশ্ ও প্রিয়াঙ্কা, পশুরাজ ও তাঁর রানি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী: সিংহের ওই চত্ত্বরের সামনে তখন বেশ কিছু দর্শণার্থী ছিলেন। ছিলেন এক বাঙালি বয়স্ক মহিলাও। সেই মহিলার কথায়, “বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ভদ্রলোক হঠাৎই আমাকে প্রণাম করেন। তার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি সামনের পাঁচিল বেয়ে উঠে গিয়ে ওপাশে সিংহ-সিংহীর উঠোনে লাফিয়ে পড়লেন।” দশর্কদের চিৎকারে ছুটে আসেন নন্দনকাননের কর্মী ও রক্ষীরা। তড়িঘড়ি তাঁরা ঢুকে পড়েন সিংহের আস্তানায়। আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, লোকটি ঝাঁপিয়ে পড়তেই দেখলাম সিংহটি যথেষ্ট বিরক্ত হয়ে নিজের খাঁচার দিকে হাঁটা দিল। কিন্তু ক্রুদ্ধ সিংহী প্রিয়াঙ্কা এগিয়ে আসে তাঁর দিকে। থাবা বসায় সূর্যনারায়ণের মাথায়, গালে, ঘাড়ে, হাতে, পায়ে।
আহত সূর্যনারায়ণ। ছবি: পিটিআই
নন্দকাননের সহকারী অধিকর্তা কে এল পুরোহিত জানান, “ইতিমধ্যে চিড়িয়াখানার কর্মীরা ঢুকে পড়েছেন ভিতরে। তাঁরাই তাড়ায় প্রিয়াঙ্কাকে। বের করে আনে সংজ্ঞাহীন সূর্যনারায়ণকে। দ্রুত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে।” পরে সেখানকার চিকিৎসক শ্রীকান্ত মহাপাত্র জানান, জখম সূর্যনারায়ণের জ্ঞান ফিরেছে। বিভিন্ন জায়গায় আঁচড়-কামড় থাকলেও তাঁর হাত ও পায়ের ক্ষত বেশ গভীর। জ্ঞান ফিরে আসার পর তাঁকে চিকিৎসকরা প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তিনি এই কাজ করলেন? চিকিৎসক শ্রীকান্ত মহাপাত্র বলেন, “সূর্যনারায়ণ স্বীকার করেন, স্ত্রীর সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয়েছিল তাঁর। ঝগড়ার পরেই সূর্যনারায়ণ গঞ্জামের ছত্রপুর থেকে বেরিয়ে সোজা হাজির হন নন্দনকাননে। ঝাঁপ দেন সিংহের খাঁচায়।” তবে তাঁর অবস্থা এখন ভাল বলেই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা চিড়িয়াখানায় এক মদ্যপ যুবক, শিবা নামে এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের এনক্লোজারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তবে সূর্যনারায়ণের মতো সে বেঁচে ফিরতে পারেনি। বছর কয়েক আগে গুয়াহাটি চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচায় হাত ঢুকিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে এক ব্যক্তিকে হাত খোয়াতে হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। নন্দনকাননের উপ-অধিকর্তা সি আর মিশ্র আজ জানান, তাঁদের চিড়িয়াখানায় এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। দর্শকদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও মিশ্র মনে করেন তাঁরা পুরোপুরি সতর্ক, কোথাও কোনও গাফিলতি নেই। বরং তিনি পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, “কেউ যদি সিংহের খাঁচায় ঝাঁপ দেবেন বলে মনে করেন তাঁকে ঠেকাবে কে?”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.