জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে ব্যবহারযোগ্য দামি রাসায়নিক পাচারের অভিযোগে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা থেকে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআইডি ও বর্ধমান জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে এদের ধরে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রসায়নিকটির নাম পলিয়েস্টার রেজিন। পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামালপুরের আঝাপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ওই রসায়নিক নিয়ে যাওয়া একটি ট্রাক অপহরণ করা হয়। ট্রাকের চালক ও খালাসির সঙ্গে ভাব জমিয়ে তাঁদের রাস্তার পাশের একটি হোটেলে চা খাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিল তিন দুষ্কৃতী। চায়ে মাদক মিশিয়ে দেওয়া হয়। চালক ও খালাসি বেহুঁশ হয়ে পড়েন। পরে মধ্যমগ্রামের গুদাম থেকে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার ৮৬ ড্রাম রাসায়নিক উদ্ধার হয়েছে।” |
পুলিশ সূত্রের খবর, হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে কলকাতার ব্যবসায়ী সঞ্জয় গোয়েন্কার হাওড়ার গুদামে ওই রাসায়নিক যাচ্ছিল। সংজ্ঞাহীন চালককে দুষ্কৃতীরা উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ায় ফেলে দেয়। কাছেই নিমতায় পাওয়া যায় খালি ট্রাকটি। ১৭ সেপ্টেম্বর জামালপুর থানায় এই ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে সিআইডির সাহায্য চায় বর্ধমান জেলা পুলিশ। ট্রাকচালক, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের বাসিন্দা মহম্মদ আজাহারের বর্ণনা শুনে তিন দুষ্কৃতীর ছবি আঁকায় সিআইডি। তবে ট্রাকের খালাসি, ঝাড়খণ্ডের ছাতড়ার বাসিন্দা মহম্মদ ইরশাদের খোঁজ মেলেনি।
তদন্তে নেমে প্রথমে ২৮ সেপ্টেম্বর কলকাতা থেকে সুরেশ ভাই নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে সিআইডি। সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে তাকে জেরা করে মহিন্দর রোয়ার, হরজিন্দর সিংহ, রুদ্র দত্ত দুবে ও দেবীপ্রসাদ জয়সওয়াল নামে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দমদমের বাসিন্দা সুরজ জয়সওয়ালের মধ্যমগ্রামের গুদাম থেকে ৮৬ ড্রাম রাসায়নিক উদ্ধার করে সিআইডি ও পুলিশ। সুরজকেও গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার তাকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে ছ’দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাঁধের ফাটল ঠেকাতে ওই রাসায়নিক কাজে লাগে। দামি এই রসায়নিক সহজে কেনাবেচা হয়না। খদ্দের সেজে পুলিশ তা কিনতে চাইলে চক্রের পান্ডা সুরজ জয়সওয়াল ফাঁদে পড়ে। |