মুখোমুখি...
আহা! মেয়েদের একটু লজ্জা থাকবে না

পত্রিকা: আচ্ছা ‘অপুর সংসার’ যদি এখন সিরিয়াল হত, তোমার কি মনে হয়, শর্মিলা ঠাকুর ঘরে থাকা সত্ত্বেও ‘অপু’র মানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আরও একজন বউ দরকার হত?

রণিতা: হঠাৎ ‘অপুর সংসার’-এর কথা উঠছে কেন? অপুর সঙ্গে ‘বাহা’র কী সম্পর্ক?

পত্রিকা: ‘অপু’র মতোই তোমার সিরিয়ালের নায়ক ‘অর্চি’ও গ্রামে গিয়ে চাপে পড়ে বিয়ে করে তোমাকে।
রণিতা: ওহ্ ভগবান! আমাদের সিরিয়ালে কিন্তু দেখিয়েছে আগে থেকেই অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে নায়কের সম্পর্ক ছিল।

পত্রিকা: ঠিকই, কিন্তু আজকাল প্রায় সব হিট সিরিয়ালেই দেখা যাচ্ছে এক নায়কের দুই বউ। আগে ‘বৌ কথা কও’-এ মৌরী, এখন তুমি। ও দিকে হিন্দি সিরিয়াল ‘বালিকা বধূ’, ‘বড়ে আচ্ছে লগতে হ্যায়’তেও তাই... ব্যাপার কী?
রণিতা: কী বলব (হাসি)! হয়তো মেয়েদের সারল্যের কাছে বার বার পুরুষরা ফিরে আসতে চায়। হয়তো চায়, বউ আর যা-ই করুক, সকালে ঘুম থেকে উঠে তার মুখের সামনে চা-টা অন্তত ধরে দেবে। শান্তির আশ্রয় দেবে... হয়তো চায়, নায়কের জীবনে যত নারীই থাকুক, সে ফিরবেই পুরনোর কাছে...আমি নিজে যেমন সিঁদুর...শাঁখা...শাড়িতে ভীষণভাবে বিশ্বাসী।

পত্রিকা: জানো এ বছর পুজোয় ‘বাহা’ শাড়ি বেরিয়েছে?
রণিতা: হ্যাঁ, গড়িয়াহাটের সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তুমি কি জানো ‘বাহা’ গয়না বিক্রি হচ্ছে। পুরুলিয়াতে ‘বাহা’ লজেন্সও বিক্রি হচ্ছে?

পত্রিকা: ‘বাহা’ লজেন্স?
রণিতা: হ্যা। লজেন্সের চকচকে মোড়কের উপর আমাদের ছবি... এত ভাল লেগেছে দেখে! একটা সময়ে একতা কপূরের সিরিয়ালের সাজ জনপ্রিয় ছিল। পাথর বসানো শাড়ি, টিপ.. আর এখন আমাদের শাড়ি! ভাবলেই দারুণ লাগে।

পত্রিকা: পুজোয় ‘বাহা’ শাড়ি কিনবে?
রণিতা: বাবা বলেছে মায়ের জন্য ‘বাহা’ শাড়ি কিনবে। আমি আর কী কিনব! রোজ শ্যুটিংয়ে পরছি (হাসি)।
পত্রিকা: যে কথা হচ্ছিল, তুমি কি ব্যক্তিগত জীবনেও সিরিয়ালের মতো ওই রকম ‘সেকেলে’? নাকি...
রণিতা: সেকেলে আবার কী! আহা, মেয়েদের লজ্জা একটু থাকবে না? রোজগার করছে বলে, মাথা কিনে নেবে? আমাকে যদি শ্বশুরবাড়ি থেকে কাজ করতে দেয়, তা হলে আমারও তো দায়িত্ব তাঁদের জন্য কিছু করা। হয়তো সকালে উঠে চা-টা করলাম।

পত্রিকা: ওঃ, তা ফেসবুক, টুইটারের যুগেও তুমি দেখছি এক্কেবারে গল্পের ‘বাহা’রই মতো?
রণিতা: গ্রামের মেয়ে নই, তবে মূল্যবোধের জায়গায় আমি ওই রকমই। শ্যুটিং করতে করতে চ্যাট করতে পারি, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বিয়ের পর মতে মিলল না তো ফটাফট ডিভোর্স করে ফেললাম, কিংবা সটাসট আরেকটা অ্যাফেয়ারের মধ্যে ঢুকে গেলাম। আমার মনে হয়, বিয়ের আগে হাজারটা প্রেম করো... বুঝে নাও। কিন্তু বিয়ের পর আর নয়। আমাদের ফ্যামিলিতে কোনও ডিভোর্স নেই। আমি বাব্বা বিয়ে করে, দু’-এক বছরের মধ্যেই বাচ্চা-টাচ্চা হয়ে, শাঁখা-পলা-নোয়া পরে থাকতে চাই।

পত্রিকা: সিরিয়াল ছেড়ে দেবে?
রণিতা: দ্যাখো ‘ইষ্টিকুটুম’-এর পরে আর কোনও সিরিয়াল করার ইচ্ছেও নেই আমার। যদি কেরিয়ারে এগোতেই হয়, তা হলে সিনেমা করব। তাও ভাল ব্যানারে। আর হ্যাঁ, বিয়ে করে আমি আর অভিনয় করবও না হয়তো।

পত্রিকা: এই যে বললে, কাজ হয়ে গেলে চা বানাবে?
রণিতা: কাজ মানে কি শুধু অভিনয় নাকি? আমি ক্ল্যাসিকাল নাচ শিখি, ইন্টিরিয়ার ডিজাইনিং নিয়ে জে ডি বিড়লায় বি এস সিতে ভর্তি হয়েছি, ওগুলোকেই পেশা করব।

পত্রিকা: ইন্টিরিয়ার ডিজাইনিং?
রণিতা: কেন শিখছি জান?

পত্রিকা: কেন?
রণিতা: আমি তো ঋত্বিক রোশনের দা-রু-ণ ফ্যান। ওর বউ সুজান যেহেতু ইন্টিরিয়ার ডিজাইনার, তাই। (হাসি)

পত্রিকা: প্রেম করো?
রণিতা: করি। কিন্তু নামটা লিখো না প্লিজ... আপাতত ঠিক আছে মাস্টার্সের পর বিয়ে করব।

পত্রিকা: তুমি কোথায় থাক? কোন স্কুলে পড়তে?
রণিতা: বেহালায় থাকি। প্রথমে পড়তাম ইউনাইটেড মিশনারিতে। পরে মাল্টিপারপাসে। ইলেভেন-টুয়েলভ ফের ইউনাইটেড মিশনারি। আসলে স্কুলে পড়তেই আমি টিভি-র কাজ, করতাম...ভাল ভাবে স্কুলই করতে পারতাম না। শেষে ‘সারদা বিদ্যাপীঠ’ থেকে টুয়েলভ দিয়েছি।

পত্রিকা: বাবা-মা কী করেন? ভাই-বোন আছে?
রণিতা: বাবা ডিফেন্সে আছেন। গার্ডেনরিচে অফিস। মা হাউস ওয়াইফ। আমি একমাত্র সন্তান।

পত্রিকা: আচ্ছা টিভিতে তো এখন তোমার ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র প্রোমো দেখাচ্ছে। তা পুজো উদ্বোধন, পুজো পরিক্রমা... এ বছর খুব করছ নিশ্চয়ই?
রণিতা: চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী-তে অনেকগুলো উদ্বোধন আছে। তবে পরিক্রমাটা নিইনি, পেরে উঠব না।

পুজোয় চাই ‘বাহা’ শাড়ি

• গড়িয়াহাট মোড়ের প্রায় সব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে ‘বাহা’ শাড়ি।
• দাম: ৭৫০ থেকে ১৫০০ টাকা।
• বৈশিষ্ট্য: মোটা সুতোর শাড়ি, এক রঙা। সঙ্গে ঢালা তিন-চারটে
বর্ডার একসঙ্গে। ব্লাউজ পিস থাকবে। তৈরি: সুতিতে,
সিল্কে অথবা সুতি-পলিয়েস্টার মিক্সড।
• ‘বাহা’ গয়না: কালো ট্যাসেলে রুপোলি দস্তার চোকার।
• দাম: কম-বেশি নানা রকম।

পত্রিকা: সিরিয়ালের ওই সাঁওতাল-সাঁওতাল ভাষাটা রপ্ত করলে কী করে?
রণিতা: পুরুলিয়ার দিকে খানিকটা ওই ধরনের ভাষায় কথা হয়। আসল সাঁওতাল ভাষা কিন্তু সাধারণ দর্শক বুঝতেও পারবে না। সিরিয়ালের স্ক্রিপ্ট রাইটার লীনাদির কাছ থেকে ‘বটে’ ‘কিনে’, ‘তাল্লিগে’ ...শিখেছি। সেই সঙ্গে ওই টেনে টেনে কথা বলার সুরটা। আমি যে ভাষাটা বলি, সেটা কিন্তু পুরোপুরি সাঁওতালি ভাষা নয়।

পত্রিকা: বাঙালির চাওমিন-চচ্চড়ি, তাই তো?
রণিতা: এক্কেবারে। বাংলার সঙ্গে ওই সুর আর শব্দ জুড়ে।

পত্রিকা: আচ্ছা ওই ভাষায় ‘পুজোটা ভাল কাটুক’, কী ভাবে বলবে?
রণিতা: তুদিগের পুজোটা খুব ভাল তো কাটুক কিনে।

পত্রিকা: তুদিগেরও কাটুক। (হাসি)।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.